বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
বাসায় পৌঁছতে রাত্রি আটটা বাজিল।
ব্যোমকেশ লাইব্রেরি ঘরে ছিল,
দ্বারে ধাক্কা দিতেই কবাট খুলিয়া
বলিল–“কি খবর? সমস্যা-ভঞ্জন হল?”
“না”–আমি ঘরে ঢুকিয়া একটা চেয়ারে
বসিয়া পড়িলাম। ইতিপূর্বে ব্যোমকেশ
একটা মোটা লেন্স লইয়া একখণ্ড কাগজ
পরীক্ষা করিতেছিল, এখন আবার যন্ত্রটা
তুলিয়া লইল। তারপর আমার দিকে একটা
তীক্ষ্ণ দৃষ্টি হানিয়া বলিল–“ব্যাপার
কি? এত শৌখিন হয়ে উঠলে কবে থেকে?
আতর মেখেছ যে?”
“মাখিনি। নিয়ে এসেছি।” তাহাকে
আদ্যোপান্ত সমস্ত বিবরণ বর্ণনা করিয়া
শুনাইলাম, সে-ও বোধ হইল মন দিয়া
শুনিল। উপসঙ্ঘারে আমি বলিলাম–“আমার
দ্বারা তো হল না ভাই–এখন দেখ, তুমি
যদি কিছু পার। তবে আমার মনে হয়, এই
আতরটা অ্যানালাইজ্ করলে কিছু পাওয়া
যেতে পারে–”
“কি পাওয়া যাবে–মাকড়সার রস?”
ব্যোমকেশ আমার হাত হইতে তুলাটা
লইয়া তাহার আঘ্রাণ গ্রহণ করিয়া
বলিল–“আঃ! চমৎকার গন্ধ! খাঁটি অম্বুরি
আতর।” তুলাটা হাতের চামড়ার উপর
ঘষিতে ঘষিতে বলিল–“হ্যাঁ–কি
বলছিলে? কি পাওয়া যেতে পারে?”
একটু একটু ইতস্তত করিয়া বলিলাম–“হয়তো
নন্দদুলালবাবু আতর মাখবার ছল করে–”
ব্যোমকেশ হাসিয়া উঠিল–“এক মাইল দূর
থেকে যার গন্ধ পাওয়া যায় সে জিনিস
কেউ লুকিয়ে ব্যবহার করতে পারে?
নন্দদুলালবাবু যে আতর মাখেন তার
কোনো প্রমাণ পেয়েছ?”
“তা পাইনি বটে–কিন্তু–”
“না হে না, ওদিকে নয়, অন্যদিকে
সন্ধান কর। কি করে জিনিসটা ঘরের
মধ্যে আসে, কি করে নন্দদুলালবাবু সকলের
চোখের সামনে সেটা মুখে দেন–এইসব
কথা ভেবে দেখ। রেজিস্ট্রে করে
সাদা কাগজ কেন আসে? ঐ
স্ত্রীলোকটাকে টাকা পাঠানো হয়
কেন? ভেবে দেখেছ?”
আমি হতাশভাবে বলিলাম–“অনেক
ভেবেছি, কিন্তু আমার দ্বারা হল না।”
“আরো ভাবো–কষ্ট না করলে কি কেষ্ট
পাওয়া যায়?–গভীরভাবে ভাবো,
একাগ্র চিত্তে ভাবো, নাছোড়বান্দা
হয়ে ভাবো–” বলিয়া সে আবার
লেন্সটা তুলিয়া লইল।
আমি জিজ্ঞাসা করিলাম–“আর তুমি?”
“আমিও ভাবছি। কিন্তু একাগ্রচিত্তে
ভাবা বোধহয় হয়ে উঠবে না। আমার
জালিয়াৎ–” বলিয়া সে টেবিলের উপর
ঝুঁকিয়া পড়িল।
আমি ঘর হইতে উঠিয়া আসিয়া আমাদের
বসিবার ঘরে আরাম-কেদারায় লম্বা
হইয়া শুইয়া আবার ভাবিতে আরম্ভ
করিলাম। সত্যই তো, কি এমন কঠিন কাজ
যে আমি পারিব না। নিশ্চয় পারিব।
প্রথমত, রেজিস্ট্রি করিয়া সাদা কাগজ
আসিবার সার্থকতা কি? অদৃশ্য কালি
দিয়া তাহাতে কিছু লেখা থাকে?
যদি তাই থাকে, তাহাতে
নন্দদুলালবাবুর কি সুবিধা হয়?
জিনিসটা তো তাঁহার কাছে
পৌঁছিতে পারে না!
আচ্ছা, ধরিয়া লওয়া যাক, জিনিসটা
কোনোক্রমে বাহির হইতে ঘরের ভিতর
আসিয়া পৌঁছিল, কিন্তু সেটা
নন্দদুলালবাবু রাখেন কোথায়?
হোমিওপ্যাথিক ঔষধের শিশিও
লুকাইয়া রাখা সহজ কথা নয়। অষ্টপ্রহর
সতর্ক চক্ষু তাহাকে ঘিরিয়া আছে,
তাহার উপর প্রত্যহ খানাতল্লাসী
চলিতেছে। তবে?
ভাবিতে ভাবিতে মাথা গরম হইয়া
উঠিল, পাঁচটা চুরুট পুড়িয়া ভস্মীভূত হইয়া
গেল–কিন্তু একটা প্রশ্নেরও উত্তর পাইলাম
না। নিরাশ হইয়া প্রায় হাল ছাড়িয়া
দিয়াছি এমন সময় একটা অপূর্ব আইডিয়া
মাথায় ধরিয়া গেল। ধড়মড় করিয়া
আরাম কেদারায় উঠিয়া বসিলাম। এও
কি সম্ভব! কিম্বা–সম্ভব নয়ই বা কেন?
শুনিতে একটু অস্বাভাবিক ঠেকিলেও–এ
ছাড়া আর কি হইতে পারে? ব্যোমকেশ
বলিয়াছে, কোনো বিষয়ের যুক্তিসম্মত
প্রমাণ যদি থাকে অথচ তাহা
আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব বলিয়া মনে হয়, তবু
তাহা সত্য বলিয়া ধরিতে হইবে।
এক্ষেত্রেও ইহাই তো এ সমাধানের
একমাত্র সমাধান।
ব্যোমকেশকে বলিব মনে করিয়া
উঠিয়া যাইতেছি, ব্যোমকেশ নিজেই
আসিয়া প্রবেশ করিল; আমার মুখের দিকে
চাহিয়া বলিল–“কি? ভেবে বার করলে
না কি?”
“বোধহয় করেছি।”
“বেশ বেশ। কি বার করলে শুনি?”
বলিতে গিয়া একটু বাধ-বাধ ঠেকিতে
লাগিল, তবু জোর করিয়া সঙ্কোচ
সরাইয়া বলিলাম–“দেখ, নন্দদুলালবাবুর
ঘরের দেওয়ালে কতকগুলো মাকড়সা
দেখেছি, এখন মনে পড়িল। আমার
বিশ্বাস তিনি সেইগুলোকে–”
“ধরে ধরে খান!”–ব্যোমকেশ হো হো
করিয়া উচ্চরবে হাসিয়া উঠিল, “অজিত,
তুমি একেবারে একটি–জিনিয়াস!
তোমার জোড়া নেই। দেওয়ালের
মাকড়সা ধরে ধরে খেলে নেশা হবে
না ভাই, গা-ময় গরলের ঘা ফুটে
বেরুবে। বুঝলে?”
আমি উত্তপ্ত হইয়া বলিলাম–“বেশ, তবে
তুমিই বল।”
ব্যোমকেশ চেয়ারে বসিয়া টেবিলের
উপর পা তুলিয়া দিল। অলসভাবে একটা
চুরুট ধরাইতে ধরাইতে বলিল–“সাদা
কাগজ ডাকে কেন আসে বুঝেছ?”
“না।”
“ইহুদি স্ত্রীলোকটাকে কেন টাকা
পাঠানো হয় বুঝতে পেরেছ?”
“না।”
নন্দদুলালবাবু দিবারাত্রি অশ্লীল গল্প
লেখেন কেন তাও বুঝতে পারনি?”
“না। তুমি বুঝেছ?”
“বোধহয় বুঝেছি,” ব্যোমকেশ চুরুটে
দীর্ঘ টান দিয়া নিমীলিত নেত্রে
কহিল–“কিন্তু একটা বিষয়ে
নিঃসন্দেহভাবে না-জানা পর্যন্ত
মন্তব্য প্রকাশ করা সমীচীন হবে না।”
“কি বিষয়ে?”
ব্যোমকেশ মুদিতচক্ষে বলিল–“আগে
জানা দরকার নন্দদুলালবাবুর জিভ কোন্
রঙের।”
মনে হইল ব্যোমকেশ আমাকে পরিহাস
করিতেছে, রুষ্ট মুখে বলিলাম–“ঠাট্টা
হচ্ছে বুঝি?”
“ঠাট্টা!” ব্যোমকেশ চোখ খুলিয়া
আমাক্র মুখের ভাব দেখিয়া বলিল–“রাগ
করলে? সত্যি বলছি ঠাট্টা নয়।
নন্দদুলালবাবুর জিভের রঙের ওপরেই সব
নির্ভর করছে। যদি তাঁর জিভের রঙ লাল
হয়ে তাহলে বুঝব আমার অনুমান ঠিক, আর
যদি না হয়–। তুমি বোধহয় লক্ষ্য করনি?”
আমি রাগ করিয়া বলিলাম–“না, জিভ
লক্ষ্য করবার কথা আমার মনে হয়নি।”
ব্যোমকেশ সহাস্যে বলিল–“অথচ ঐটেই
আগে মনে হওয়া উচিত ছিল। যা হোক,
এক কাজ কর, ফোন করে নন্দদুলালবাবুর
ছেলের কাছ থেকে খবর নাও।”
“রসিকতা করছি মনে করবে না তো?”
ব্যোমকেশ হাত নাড়িয়া কাব্যের
ভাষায় বলিল–“ভয় নাই তোর ভয় নাই
ওরে ভয় নাই–কিছু নাই তোর ভাবনা–”
পাশের ঘরে গিয়া নম্বর খুঁজিয়া ফোন
করিলাম। মোহন তখনো সেখানে ছিল,
সে-ই উত্তর দিল–“ও কথাটা দরকারি বলে
মনে হয়নি, তাই বলিনি। নন্দদুলালবাবুর
জিভের রঙ টকটকে লাল। একটু
অস্বাভাবিক বলে মনে হয়, কারণ তিনি
বেশি পান খান না। কেন বল দেখি?”
ব্যোমকেশকে ডাকিলাম, ব্যোমকেশ
আসিয়া বলিল–“লাল তো? তবে আর কি–
হয়ে গেছে।–দেখি।” আমার হাত হইতে
ফোন লইয়া বলিল–“ডাক্তারবাবু? ভালই
হল। আপনার ধাঁধার উত্তর পাওয়া গেছে।
হ্যাঁ, অজিতই ভেবে বার করেছে–আমি
একটু সাহায্য করেছি মাত্র। জালিয়াৎ
নিয়ে ব্যস্ত ছিলুম তাই–হ্যাঁ,
জালিয়াৎকে ধরেছি।…বিশেষ কিছু
করতে হবে না, কেবল নন্দদুলালবাবুর ঘর
থেকে লাল কালির দোয়াত আর লাল
রঙের ফাউণ্টেন পেনটা সরিয়ে
দেবেন।…হ্যাঁ–ঠিক ধরেছেন। কাল
একবার আসবেন তখন সব কথা বলব…আচ্ছা,
নমস্কার। অজিতকে আপনাদের পক্ষ থেকে
ধন্যবাদ জানাবো। বলেছিলুম কিনা–
যে ওর বুদ্ধি আজকাল ভীষণ ধারালো
হয়ে উঠেছে?” হাসিতে হাসিতে
ব্যোমকেশ ফোন রাখিয়া দিল।
বসিবার ঘরে ফিরিয়া আসিয়া লজ্জিত
মুখে বলিলাম–“কতক-কতক যেন বুঝতে
পারছি’ কিন্তু তুমি সব কথা পরিষ্কার
করে বল। কেমন করে বুঝলে?”
ঘড়ির দিকে একবার দৃষ্টিপাত করিয়া
ব্যোমকেশ বলিল–“খাবার সময় হল, এখনি
পুঁটিরাম ডাকতে আসবে। আচ্ছা, চটপট বলে
নিচ্ছি শোনো।–প্রথম থেকেই তুমি ভুল
পথে যাচ্ছিলে। দেখতে হবে
জিনিসটা ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে কি
করে। তার নিজের হাত পা নেই,
সুতরাং কেউ তাকে নিশ্চয়ই দিয়ে
আসে। কে সে? ঘরের মধ্যে পাঁচজন লোক
ঢুকতে পায়–ডাক্তার, দুই ছেলে, স্ত্রী
এবং আর একজন। প্রথম চারজন বিষ
খাওয়াবে না এটা নিশ্চিত, অতএব এ
পঞ্চম ব্যক্তির কাজ।”
“পঞ্চম ব্যক্তি কে?”
“পঞ্চম ব্যক্তি হচ্ছে–পিওন। সে হপ্তায়
একবার সই করবার জন্যে নন্দদুলালবাবুর
ঘরে ঢোকে। সুতরাং তার মারফতেই
জিনিসটা ঘরে প্রবেশ করে।”
“কিন্তু খামের মধ্যে তো সাদা কাগজ
ছাড়া আর কিছু থাকে না।”
“ঐখানেই ফাঁকি। সবাই মনে করে
খামের মধ্যে জিনিসটা আছে, তাই
পিওনকে কেউ লক্ষ্য করে না। লোকটা
হুঁশিয়ার, সে অনায়াসে লাল কালির
দোয়াত বদলে দিয়ে চলে যায়।
রেজিস্ট্রি করে সাদা কাগজ
পাঠাবার উদ্দেশ্য হচ্ছে, কোনো
ক্রমে পিওনকে নন্দদুলালবাবুর ঘরে
ঢোকবার অবকাশ দেওয়া।”
“তারপর?”
“তুমি আর একটা ভুল করেছিলে; ইহুদি
স্ত্রীলোকটাকে টাকা পাঠানো হয়–
পেনশন স্বরূপ নয়, ও প্রথা কোথাও প্রচলিত
নেই–টাকা ওষুধের দাম, ওই মাগীই
পিওনের হাতে ওষুধ সরবরাহ করে।
“তাহলে দেখ, ওষুধ নন্দদুলালবাবুর হাতের
কাছে এসে পৌঁছল, কেউ জানতে পারলে
না। কিন্তু অষ্টপ্রহর ঘরে লোক থাকে,
তিনি খাবেন কি করে? নন্দদুলালবাবু
গল্প লিখতে আরম্ভ করলেন। সর্বদাই হাতের
কাছে লেখার সরঞ্জাম রয়েছে, তাই
উঠে গিয়ে খাবারও দরকার নেই–
খাটের ওপর বসেই সে কার্য সম্পন্ন করা
যায়। তিনি কালো কলম দিয়ে গল্প
লিখছেন, লাল কলম দিয়ে তাতে দাগ
দিচ্ছেন, ফাঁক পেলেই কলমের নিবটি
চুষে নিচ্ছেন। কালি ফুরিয়ে গেলে
আবার ফাউণ্টেন পেন ভরে নিচ্ছেন।
জিভের রঙ লাল কেন এখন বুঝতে পারছে?”
“কিন্তু লালই যে হবে তা বুঝলে কি করে?
কালোও তো হতে পারত?”
“হায় হায়, এটা বুঝলে না! কালো
কালি যে বেশি খরচ হয়। নন্দদুলালবাবু ঐ
অমূল্যনিধি কি বেশি খরচ হতে দিতে
পারেন? তাই লাল কালির ব্যবস্থা।”
“বুঝেছি।–এত সহজ–”
“সহজ তো বটেই। কিন্তু যে-লোকের
মাথা থেকে এই সহজ বুদ্ধি বেরিয়েছে
তার মাথাটা অবহেলার বস্তু নয়। এত সহজ
বলেই তোমরা ধরতে পারছিলে না।”
“তুমি ধরলে কি করে?”
“খুব সহজে। এই ব্যাপারে দুটো জিনিস
সম্পূর্ণ নিরর্থক বলে মনে হয়–এক,
রেজিস্ট্রি করে সাদা কাগজ আসা; দুই,
নন্দদুলালবাবুর গল্প লেখা। এই দুটোর
সত্যিকার কারণ খুঁজতে গিয়েই আসল
কথাটি বেরিয়ে পড়ল।”
পাশের ঘরে ঝন্ ঝন্ করিয়া
টেলিফোনের ঘণ্টি বাজিয়া উঠিল,
আমরা দু’জনেই তাড়াতাড়ি উঠিয়া
গেলাম। ব্যোমকেশ ফোন ধরিয়া
জিজ্ঞাসা করিল–“কে আপনি? ও–
ডাক্তারবাবু, কি খবর?…নন্দদুলালবাবু
চেঁচামেচি করছেন?…হাত পা ছুড়ছেন?
তা হোক, তা হোক, তাতে কোনো
ক্ষতি হবে না।…অ্যাঁ! কি বলছেন?
অজিতকে গালাগাল দিচ্ছেন? শকার
বকার তুলে?…ভারি অন্যায়। ভারি
অন্যায় কিন্তু–যখন তাঁর মুখ বন্ধ করা
যাচ্ছে না তখন আর উপায় কি?…অজিত অবশ্য
ওসব গ্রাহ্য করে না; অবিমিশ্র প্রশংসা
যে পৃথিবীতে পাওয়া যায় না তা সে
জানে। মধু ও হুল–কমলে কণ্টক…এই জগতের
নিয়ম…আচ্ছা নমস্কার।”
(সমাপ্ত)
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now