বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

মানিক-মাকাও

"রূপকথা " বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান sagor the gangster of king is here (crush) (০ পয়েন্ট)

X মানিক-মাকাও পাহাড়ের রাজার কিশোরী বউ লিয়েন-মাকাও। রাজপ্রাসাদে ধন সম্পদ আর ঐশ্বর্য্যে ঘেরা জীবন। মানিক হলো এক অনাথ কিশোর। গ্রামের ভেতর তার স্থান হয়নি। তাই গ্রামের বাইরে এক ঝর্ণার ধারে কুড়েঁ বানিয়ে থাকে। একা। প্রতি রাতে মানিক বাশিঁ বাজায়। হাওয়া আর উড়ো মেঘ মানিকের বাশিঁর সুর বয়ে আনে রাজপ্রাসাদে। বাশিঁর করুণ সুর শোনে রাতের পর রাত কাটায় মাকাও। সেই সুরের টানে একরাতে মানিকের কুড়েঁতে হাজির হয় মাকাও। জানালা দিয়ে উকিঁ দিয়ে দেখে এক কিশোরকে। তন্ময় হয়ে সুর তুলছে বাশিতেঁ। মাকাও এক বিবাহিত নারী। তার এই নিশিযাত্রায় কলঙ্ক হবে। মাকাও কুড়েঁ থেকে পথে নামে। কিন্তু, ফিরে যেতে গিয়ে থমকে দাঁড়ায়। বাশিঁর সুরে তারই যন্ত্রনা, বেদনা, নি:সঙ্গতা। ঘুরে দাঁড়ায় মাকাও। হাজির হয় কুড়েঁর দোরে। দরজায় খিল। মাকাও ডাকে। মানিক ওঠে দেখে। ফিরে যেতে বলে। বিপদের কথা শোনায়। বাধা দেয়। শেষ পর্যন্ত বাধা ভেঙে ফেলে মাকাও। মানিকের বাশিঁর ঠোটেঁ কিশোরী মুখ রাখে। দূরে পাহাড়ের বাদামী চূড়ায় দুধের মতো সাদা তুষার জমে। দু’বছর ধরে রাজ্য পরিক্রমা করে রাজা এসে দেখলেন প্রাসাদে দশ মাসের ছেলে। ছেলেটির পিতৃ পরিচয় জানতে চাইলেন রাজা। কিন্তু লিয়েন-মাকাওয়ের কাছ থেকে উত্তর মিলল না। রাজা চরম শাস্তির ভয় দেখালেন। কিন্তু কাজ হলো না। রাজার সামন্তেরা অস্ত্রে শান দিলো কিন্তু নাগরের নাম জানা গেলো না। শেষে ডাক পড়লো দরবারের। নির্দ্দেশ জারি হলো। পরের দিন রাতে রাজ্যের প্রতিটি পুরুষকে একটি কলা হাতে হাজির হতে হবে। যার হাত থেকে শিশু ঐ ফলটি নেবে, সে-ই চিহ্নিত হবে অবৈধ পিতা হিসেবে। সারাদিন ধরে জড়ো করা হয় লাঠি। জমতে জমতে পাহাড়। অবৈধ পিতৃত্বের শাস্তি লাঠির ঘায়ে মৃত্যু। সভায় হাজির সব বাসিন্দা। একে একে সবাই যায় শিশুর কাছে। কিন্তু শিশুটির কোন আকর্ষণ নেই। না মানুষে, না ফলে। সভা হতবাক। কে নেই! ফিসফাস শব্দ ওঠে। মানিক, মানিক, মানিক কোথায়? কিন্তু সে তো আধ-পাগল। তবুও পুরুষ লিঙ্গধারী। সৈন্য-সামন্ত ছোটে। মানিক ততক্ষণে ঝর্নার জলে স্নান সেরে জোতস্নার সুর ভাজে বাশিতেঁ। সে সুরে গলা মেলায় ঝিঝিঁর পাল, বটের পাতা আর বনের লতাপাতা। উঠে দাঁড়ায় মানিক। দরবারের পথে হাটেঁ। এই প্রথম তার রাজবাড়িতে যাওয়া। চোখ ধাধিয়েঁ যায় – এতো অস্ত্র, এতো সামন্ত, এতো ধন, এতো ঐশ্বর্য, এতো বল, এতো বিক্রম আগে দেখেনি কোনদিন। সিংহাসনে রাজা, সভার মাঝে মানিক। রাজার হাতে রাজদন্ড, মানিকের হাতে কলা। এ-দুইয়ের মাঝখানে এক উচ্ছল শিশু। সে ঝাপিয়ে পড়ে মানিকের বুকে, টেনে নেয় হাতের ফল। রাজসভার বাইরে আনা হয় মানিককে। সান্ত্রিরাও লাঠি হাতে তৈরি। আকাশে ঘোলাটে চাঁদ। রাজার দন্ডাদেশও ঘোষিত হয়। জানতে চাওয়া হয় তার শেষ ইচ্ছা। বকের ডানার মতো সাদা দু-হাত বুকের কাছে এনে সে আবেদন করে তাকে আগুনে পুড়ে মরার অনুমতি দিতে। রাজার সম্মতি মিলল। তৈরি হলো অগ্নিবৃত্ত। সবচেয়ে সুন্দর পোষাক পরে বাশিঁ বাজাতে বাজাতে মানিক এগিয়ে চলে। হাতের বাশিটিঁ নিচের দিকে মুখ করে মাটিতে গাথেঁ। তারপর ঢুকে পড়ে আগুনের ভেতর। সবার অলক্ষ্যে সেই আগুনে প্রবেশ করে কিশোরী মাকাও। একসময় নিভে যায় আগুন। চোখ থেকে ধোঁয়া মুছে মানুষজন। দেখে, অগ্নিবৃত্তের জায়গায় একটি জলাশয়। অন্যদিকে বাশিটিঁ রূপান্তরিত হয়েছে একটি বাশেঁর বনে। সেই বাঁশ বনের সমস্ত পাতার মুখ মাটির দিকে।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২৯৬ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now