বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

রাজকন্যা আর বলঢাঁশের গল্প

"রূপকথা " বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান sagor the gangster of king is here (crush) (০ পয়েন্ট)

X রাজকন্যা আর বলঢাঁশের গল্প এক দেশে ছিল এক রাজকন্যা। রাজকন্যার নাম ছিল মাঈশা। সেই অপূর্ব সুন্দরী রাজকন্যার ছিল একটা বাগান। না না ভুল হলো। রাজকন্যার ছিল বেশ কয়েকটা বাগান। তার মধ্যে একটা বাগান ছিল পুরোটাই গোলাপ গাছ দিয়ে ভরা। সেই বাগানে ১০৪ ধরনের গোলাপ ফুটতো। আর বাগানটা দেখাশোনা করতো এক বুড়ো মালি। সেই মালির আবার তিন কুলে কেউ ছিল না। তাই বাগানের গোলাপ গাছগুলোকেই মালি নিজের সন্তানের মতো ভালোবাসতো। রাজকন্যা প্রায়ই সেই গোলাপ বাগানে ঘুরতে যেত। কখনো সখীদেরকে নিয়ে আবার কখনো একা। মাঈশা যখন একা একা বাগানে ঘুরতো, তখন সেখানে আর কারো যাওয়ার হুকুম ছিল না। এমনকি রাজারও নয়। রাজা মশাই একবার ভুল করে বাগানে চলে গিয়েছিলেন, তাতেই মাঈশার কী রাগ! রাগ করে তিন দিন কিচ্ছু মুখে তোলেনি। রাজার মেয়ে বলে কথা, একটু আধটু অমন রাগ-অভিমান তো হবেই! শেষে রাজা মশাই অনেক দুঃখ প্রকাশ করার পর রাজকন্যার রাগ জল হলো। সে যাকগে, ওই গল্প আরেকদিন বলবো। আজকের গল্পটা তোমাদের জানাই আগে। ওহো, আরেকটা কথা জানিয়ে রাখা ভালো, রাজকন্যা বাগানে ঘুরতে আসলে মাটিতে যদি কখনো কোনো কেঁচো কিংবা কেল্লা দেখতো, পায়ের চাপে পিষে মেরে ফেলতো ওগুলোকে। কেঁচো আর কেল্লা ছিল রাজকন্যার দু চোখের বিষ। তো যা বলছিলাম...। রাজকন্যার কোনো এক কারণে খুব মন খারাপ। রাগটাও কেমন যেন একটু একটু করে জেগে উঠছে। তাই মন ভালো করতে রাজকন্যা এলো গোলাপ বাগানে। দারুণ সুন্দর সুন্দর সব ফুল দেখে রাজকন্যার মন আস্তে আস্তে ভালো হতে শুরু করলো। এমন সময় মাঈশা যা দেখলো, তাতে করে তো ওর মেজাজ গেল মারাত্বক খারাপ হয়ে। দেখে কি, ফুটফুটে এক ছেলে, ঠিক যেন রাজপুত্তুরের মতো দেখতে, ওর বাগানে কালো গোলাপ গাছের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। রাজকন্যা মনে মনে ভাবে, এত্তো বড়ো সাহস ছেলেটার, আমি বাগানে আছি, এই সময় কিনা ও আমার বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছে! দাঁড়া, আজকেই তোকে শুলে চড়াবো। এই কথা ভেবে রাজকন্যা এগিয়ে গেল ঐ ছেলেটির সামনে। ছেলেটার সামনে গিয়েই ধমকে উঠলো, এই ছেলে, কী চাও এখানে? নাম কি তোমার? কেন এসেছো? কী করছো আমার বাগানে? একবারে এতোগুলো প্রশ্ন করে তবে কিনা থামলো রাজকন্যাটি। ছেলেটি তখন বললো, আরে বাবা, একবারে এতোগুলো প্রশ্ন কেউ করে নাকি একসঙ্গে? দাঁড়াও, একটা একটা করে উত্তর দিচ্ছি। আমার নাম হলো গিয়ে বলঢাঁশ। আমি একটা কেঁচো। থাকি মাটির নীচের কেঁচো রাজ্যে। আমি হলাম ঐ রাজ্যের রাজপুত্র। আমাদের রাজ্যে বিঢুমটান বলে একটা ডাইনী আছে। যেমন বিদঘুঁটে তার নাম, তেমনই বিচ্ছিরি তার স্বভাব। তো ঐ ডাইনীর অভিশাপে মানুষ হয়ে তোমাদের রাজ্যে চলে এসেছি। আর কী করছি বাগানে? দেখতেই তো পাচ্ছো, বুক ভরে ফুলের সুগন্ধ নিচ্ছি। এমনতরো জবাব শুনে মাঈশা তো গেল মহা ক্ষেপে! এ নিশ্চয়ই কোনো একটা দেশের রাজপুত্র, আমি কেঁচো ঘেন্না করি বলি ও হয়তো আমাকে এমন করে বলছে। মাঈশা বললো, এমন কখনো হয় নাকি? কেঁচোরা কি কখনো মানুষ হতে পারে? ওদের আবার রাজ্য কি? ডাইনী বুড়ি-ই বা আসবে কোথ্থেকে শুনি? কেন হবে না? মাঈশার কথা শেষ হতে না হতেই পাল্টা প্রশ্ন করলো বলঢাঁশ। তোমাদের রূপকথার গল্পে যদি ডাইনীর অভিশাপে রাজপুত্র ব্যাঙ হতে পারে, রাজকন্যা টিয়া পাখি হয়ে উড়ে যেতে পারে, তাহলে আমাদের ডাইনীর অভিশাপে কেঁচো থেকে মানুষ হলেই বুঝি দোষ হয়ে গেল? না, না, দোষের কথা বলছি না। ভাবছিলাম, সত্যি সত্যি এমন আবার হয় নাকি! আলবাত হয়। একশ বার হয়। এইতো, আমিই তো তার জলজ্যান্ত প্রমাণ। দেখো, মাটির নীচে ছিলাম, মানুষ হওয়া মাত্রই মাটি ফুঁড়ে তোমার বাগানে চলে এলাম। তুমিই বলো, কেঁচোই যদি না হই, তাহলে তোমার বাগানের এতো কড়া নজরদারি ঠেলে কি আর তাহলে বাগানে আসতে পারতাম? মাঈশা ভেবে দেখলো, কথাটা একেবারে মিথ্যা নয়। আসলেই বাগানের চারদিকে কড়া পাহারা বাসানো। এই পাহারা ঠেলে এই ছেলেটার (কি যেন নাম... ও হ্যাঁ, বলঢাঁশ) বাগানে আসা সম্ভব হতো না। বলঢাঁশ, আমাদের রাজ্যে এসে কেমন লাগছে তোমার? মাঈশা জিজ্ঞাসা করলো। একদম ভালো না। আমার বাবা-মা, বন্ধুরা, সবাই মাটির নীচে আমার জন্য অপেক্ষা করছে, কখন আবার ওদের কাছে ফিরে যেতে পারবো। তোমরা খুব পঁচা। আমাদের দেখলেই খালি পিষে মেরে ফেলো। আমার রাজ্যে যে কখন আবার যেতে পারবো! তোমার অভিশাপ কাটবে কিভাবে বলঢাঁশ? অভিশাপ কাটলেই নিশ্চয় তোমার রাজ্যে আবার ফিরে যেতে পারবে! হ্যাঁ সেটা ঠিকই বলেছো। আমি যদি পৃথিবীর একটা মানুষকেও বোঝাতে পারি আমাদের গুরুত্ব, এই যেমন দেখো, আমরা মাটির মধ্যে দিয়ে চলাচল করি বলেই মাটির মাঝে মাঝে ফাঁকা হয়। আলো বাতাস চলাচল করতে পারে। তাই আমাদেরকে বলা হয়, প্রাকৃতিক লাঙল। আমাদের কারণেই জমি হয় উর্বর। অথচ দেখো, তোমরা শুধু শুধু আমাদের মেরে ফেলো। এখন যদি আমি একজনের কাছ থেকেও প্রতিশ্রতি পাই যে, সে আর কখনো আমাদের দেখলেই মারবে না, তাহলেই শুধু ডাইনীর অভিশাপ থেকে আমি মুক্ত হবো। তবে তাই হোক, এই দেখো, আমি প্রতিজ্ঞা করছি, আর কখনো তোমাদের দেখলে আমি মারবো না। তোমাদের উপকারিতার কথাও আমি জানাবো সবাইকে। আমি বুঝতে পেরেছি, তোমরা আসলেই আমাদের উপকার করো। উঁহু, তুমি মন থেকে বলোনি কথাটা। ডাইনীর কথামতো, মন থেকে কোনো মানুষ যদি এমন কথা বরতো, তাহলে সঙ্গ সঙ্গেই আবার আমার কেঁচো রাজ্যে ফিরে যাওয়ার কথা। এবার আমি সত্যি মন থেকে বলছি। এই দেখো, চোখ বন্ধ করে আমি তিন সত্যি বলছি। সত্যি। সত্যি। সত্যি। এই বলে রাজকন্য যেই চোখ খুললো, ওমা! কোথায় বলঢাঁশ! ওর সামনে তো কেউ নেই! রাজকন্যা এবার পড়ে গেল ধন্ধে। আসলেই কি বলঢাঁশ এসেছিল? নাকি এ ছিল শুধুই তার কল্পনা? সত্যি মিথ্যা যাই হোক, প্রতিজ্ঞা যখন করেছি, তখন আর এমন উপকারী প্রাণী আর মারবো না। আর হ্যাঁ, অন্যদেরকেও জানাতে হবে কথাটা। এই ভেবে রাজমহলে সখীদের কাছে যাওয়ার জন্য ফেরার পথ ধরলো মাঈশা...।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৩৬৪ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now