বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
_________পর্ব-৯_________
কখন যে সন্ধ্যা পেরিয়ে গেছে খেয়াল
করিনি। রুমটা অন্ধকার হয়ে গেছে। উঠে
বাতি জ্বালালাম। তারপর মাহমুদকে
ডাকলাম। মাহমুদ আসার পর জিজ্ঞেস
করলাম: মাহমুদ, তোকে বলেছিলাম বাম
হাতে সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস কার আছে
খোঁজ নেওয়ার জন্য, খোঁজ নিয়েছিস?"
--হ্যা ভাইয়া, কিন্তু সেইরকম কাউকে
পাইনি।"
--আচ্ছা, তুই যা।"
মাহমুদ চলে যাওয়ার পর জানালায় চোখ
গেল আমার। হঠাৎ দেখলাম একটা কালো
ছায়া সরে গেল। বুঝলাম কেউ আড়িপেতে
আমাদের কথা শুনছিল। তাড়াতাড়ি
ওয়ালথারটা নিয়ে বের হলাম। দেখলাম
একজন দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। অন্ধকার
ঘনিয়ে এসেছে তাই বুঝলামনা লোকটা কে।
আমিও পিছুপিছু দৌড়লাম কিছুক্ষণ।
কিন্তু লোকটার নাগাল পেলামনা। এত
ক্ষিপ্তগতিতে দৌড়াতে পারে লোকটা।
হতাশ হয়ে ফিরে এলাম বাংলোয়। এই কি?
আবার মাহমুদ গেল কই?
--মাহমুদ.....মাহমুদ......" ডাক দিলাম আমি।
কোন সাড়া নেই। এখানে সেখানে খোঁজ
করে পেলামনা তাকে। তারপর কিচেনরুমে
এসে দেখলাম অদ্ভুত কান্ড। ঐদিন গর্ত
খুঁড়ে কঙ্কাল বের করেছিলাম, তারপর
গর্তটা ভরাট করে ফ্লোর করে
দিয়েছিলাম। এখন দেখছি সেই জায়গা থেকে
মাটি সরে দু'ফাক হয়ে যাচ্ছে, ধীরে ধীরে
সেখান থেকে বের হচ্ছে মাহমুদ। অবাক হয়ে
গেলাম আমি। ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম:
কি হচ্ছে এসব মাহমুদ?"
মাহমুদ মুখ তুলে তাকাল আমার দিকে।
দেখলাম তার চোখদুটো ভয়ংকর লাল। সে
গর্ত থেকে উঠে এগিয়ে আসতে লাগল
আমার দিকে। আমি বুঝলাম মাহমুদের
ভেতর এখন অন্য কোন আত্মা প্রবেশ
করেছে। হয়তো আলতাফ সিকদারের
আত্মা। কি করব বুঝতেছিনা। মাহমুদ
এগিয়ে আসতেছে, আর আমি পিছিয়ে
যাচ্ছি। ওয়ালথারটা তাক করলাম মাহমুদের
দিকে। গুলি করব? না। মাহমুদকে হারাতে
পারবনা আমি। প্রচন্ড ভালোবাসি ওকে
আমি। নিজের যা হবে হোক। তবুও
মাহমুদের ক্ষতি আমি করতে পারবনা। ওর
মুখে ভাইয়া ডাকের মায়া আমার
ওয়ালথারের ট্রিগার রোধ করে দিল।
নামিয়ে নিলাম ওয়ালথার। মাহমুদ এগিয়ে
আমার সামনে দাঁড়াল। আমি তার শরীর
ধরে জোরে নাড়া দিয়ে বললাম: মাহমুদ,
কি হয়েছে তোর?"
সাথে সাথে মাহমুদ ফোস করে উঠল।
আমাকে ধাক্কা দিল। তার ধাক্কায় আমি
দেয়ালের সাথে লেগে ফ্লোরে পড়ে
গেলাম। মাহমুদের শরীরে তখন অসুরের
মতো শক্তি। আমাকে এক হাত দিয়ে তুলল
সে। তারপর গলা পেঁচিয়ে ধরল। আমি চোখে
ঝাপসা দেখতে লাগলাম। নিশ্বাস বন্ধ হয়ে
আসতেছে আমার। বাঁচার জন্য মাহমুদ
মাথায় ওয়ালথার দিয়ে বাড়ি দিলাম একটা।
মাহমুদ আমার গলা ছেড়ে দিল। নিজের
মাথা চেপে ধরল সে। একটু পর ঢলে পড়ল
ফ্লোরের উপর।"
--মাহমুদ, মাহমুদ" বলে চিৎকার করতে
লাগলাম আমি। মাথায় অনেক্ষণ পানি
ঢালার পর হুশ ফিরল তার।
মাহমুদকে আবার স্বাভাবিক হতে দেখে
আমার মুখে হাসি ফুটল।
মাহমুদ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল: ভাইয়া,
কি হয়েছিল আমার?"
তার মুখে "ভাইয়া" ডাকটা বড় মধুর শুনাল।
যদি তখন গুলি করতাম, তাহলে এই ভাইয়া
ডাকটা আর কখনো শুনা হতোনা তার
মুখে। মাহমুদকে কি হয়েছিল সব খুলে
বললাম। শুনার পর তার চোখে অশ্রু নেমে
এল। আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগল।
কাঁদতে কাঁদতে সে বলল: আমাকে ক্ষমা
করে দেন ভাইয়া, আর একটু হলে আমি
আপনাকে মেরে ফেলতাম।"
আমি মাহমুদের মুখটা দুহাতে ধরে বললাম:
এই পাগল, তুই ক্ষমা চাইছিস কেন? এখানে
তো তোর কোন দোষ নেই। যা ফ্রেশ
হয়ে আয়। আমি তোর জন্য খাবার রেডি
করছি।"
মাহমুদ গোসল করতে বাথরুমে গেল। আর
আমি খাবার রেডি করতে লাগলাম।
গোসল শেষে মাহমুদকে আদর করে মুখে
তুলে ভাত খাওয়ালাম। আমার সহোদর
ভাই না হলেও সে আমার অনেক আপন।
ডিনার শেষে মাহমুদকে ঘুমাতে পাঠালাম।
আমিও ঘুমিয়ে পড়লাম।
।
।
পরদিন বিকেলে মাহতাব সিকদারের
অফিসে গেলাম। উনি আমাকে সামনের
চেয়ার দেখিয়ে বসতে বললেন। বসতে বসতে
বললাম: আংকেল, গতরাতে বাংলোতে কে
যেন আড়িপেতে আমাদের কথা শুনছিল।"
সরাসরি মূল কথায় চলে এলাম আমি। সময়
নষ্ট করলামনা।
--চিনতে পারনি ওকে?" উনি জিজ্ঞেস
করলেন।
--না, আমি বের হওয়ার আগেই পালিয়ে
গেছে। কিন্তু কে সে এটা জানা লাগবে
আমার।"
--কিভাবে?
--ও অনেক দৌড়াতে পারে। আপনি একটা
কাজ করেন, এলাকায় তো আপনার
ক্ষমতা আছে। আপনি একটা দৌড়
প্রতিযোগীতার ব্যবস্থা করুন। আর
প্রথম পুরস্কার ঘোষণা করুন স্বর্ণের
মেডেল। আমি নিশ্চিত সে ঐ
প্রতিযোগীতায় অংশ নেবে।"
--আচ্ছা, আমি প্রতিযোগীতার ব্যবস্থা
করব।"
--জয়নাল সাহেবের সাথে পরিচয় করাবেন
বলছিলেন যে?"
মাহতাব সিকদার ফোন করে ডাকলেন
জয়নাল সাহেবকে। একটু পর একজ। লম্বা
চওড়া লোক এলেন। দেখলেই বুঝা যায় বড়
চতুর লোক। মাহতাব সিকদার পরিচয়
করিয়ে দিলেন: ইনিই জয়নাল। আর জয়নাল
সাহেব, ও হচ্ছে রানা, আমার বাংলোটা ও
কিনেছে।"
--নাইস টু মিট ইউ।" ডান হাতটা বাড়িয়ে
হ্যান্ডশেক করলাম জয়নাল সাহেবের
সাথে। তারপর বললাম: আপনি হরর মুভি
তৈরি করেন, তাই আপনার সাথে পরিচিত
হতে এলাম।"
--ও, আমারও ভালো লাগল আপনার সাথে
পরিচিত হতে পেরে।" মুখে একটা মৃদু হেসে
টেনে নিয়ে জয়নাল সাহেব বললেন।
--আমি আসলে হরর মুভি খুব লাইক করি।
মাঝেমাঝে হরর কাহিনী লিখি। আপনাকে
যদি একটা হরর কাহিনী বলি তাহলে মুভি
বানাতে পারবেন?"
--হুমমম....অবশ্যই। তবে কাহিনী ভালো
হতে হবে।"
--আশা করি, কাহিনী ভালো হবে।
কাহিনীটা শুনে আপনিও চমকে যেতে
পারেন।"
--বাহ, এত ভালো লেখেন আপনি?"
--তা অবশ্য না। তবে এইটা শুনলে আপনি
চমকে যেতে পারেন। স্ক্রিপ্ট লেখা শেষ
হলে আপনাকে কাহিনীটা পাঠাব।"
--আচ্ছা...."
--আপনার সাথে তাহলে পরে আবার দেখা
হবে।" বলতে বলতে উঠে দাঁড়ালাম।
মাহতাব সিকদারের দিকে তাকিয়ে বললাম:
আংকেল, আসি তাহলে?"
--আচ্ছা যাও।" মাহতাব সিকদার সায়
দিলেন।
তারপর আমি বাজারে গিয়ে কিছু বাজার
করে বাংলোতে আসতে আসতে রাত হয়ে
গেল। কিচেনে বাজারগুলো রেখে মাহমুদের
নাম ধরে ডাকলাম।
তার কোন সাড়া নেই। কয়েকবার ডাকলাম।
তার সাড়া না পেয়ে উত্তেজিত হয়ে
কিচেনরুম থেকে বের হলাম। দেখলাম
মাহমুদ বাথরুম থেকে ধীরে ধীরে বের হচ্ছে।
তার চোখের দিকে তাকিয়ে চমকে উঠলাম
আমি। চোখদুটো তার ভয়ংকর লাল হয়ে
আছে.......
_________পর্ব-১০_________
মাহমুদ ধীরে ধীরে এগিয়ে আসতেছে আমার
দিকে। আমি ভয়ে ভয়ে বললাম: মাহমুদ, কি
করতেছিস তুই???"
মাহমুদ কোন কথা না বলে আমার গলা
পেঁচিয়ে ধরল। চোখে অন্ধকার দেখতে
লাগলাম আমি। নিশ্বাস বন্ধ হয়ে
আসছিল আমার। হয়তো আর বেঁচে থাকা
সম্ভব হবেনা। শেষবারের মতো প্রিয়
মানুষগুলোর চেহারা মনে করার চেষ্টা
করলাম। তারপর জ্ঞান হারিয়ে পড়ে
গেলাম ফ্লোরে।
এরপর কি হয়েছে আমি জানিনা। যখন
জ্ঞান ফিরল, তখনও আমি ফ্লোরে পড়ে
ছিলাম। মাহমুদ নেই কোথাও। চিৎকার করে
ডাকলাম। কোন সাড়া পেলামনা তার। মনে
হয় হারিয়ে ফেলেছি তাকে।
কয়েকদিন এখানে সেখানে অনেক জায়গায়
খোঁজ করলাম মাহমুদের। কিন্তু আমি
ব্যর্থ হলাম। তাকে ছাড়া কিছুই ভালো
লাগতনা আমার। এভাবে হারিয়ে যাবে সে
ভাবিনি।
এদিকে মাহতাব সিকদার দৌড়
প্রতিযোগীতার আয়োজন করেছেন।
অনেক প্রতিযোগী অংশ নিয়েছে স্বর্ণের
মেডেল পাওয়ার লোভে। আমি উপস্থিত
হলাম সেখানে। মাহতাব সিকদারের পাশের
চেয়ারে বসলাম আমি। দৌড়
প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। সবাই
প্রাণপণে দৌড়াচ্ছে আর দৌড়াচ্ছে।
সবার সামনে যে লোকটা তিনি আমার
চেনা। কালাম সাহেব। শেষ মুহূর্তে সবার
আগে উনিই ফিনিশিং লাইনটা ক্রস
করলেন।
এবার পুরস্কারটা তুলে দেব আমি তার
হাতে। হাসিমুখে এলেন কালাম সাহেব। মনে
হল খুব খুশি তিনি। আমি মেডেলটা তার
হাতে তুলে দেয়ার সময়, উনার দিকে
তাকিয়ে বললাম: বাহ কালাম সাহেব,
আপনি তো ভালোই দৌড়াতে পারেন।
শেষ পর্যন্ত মেডেলটা আপনিই
জিতলেন? কনগ্রেচুলেশন!
--ধন্যবাদ।"
প্রতিযোগিতা শেষে মাহতাব সিকদারের
সাথে একা কথা বলতে বাংলোয় নিয়ে
আসলাম উনাকে।
--আংকেল, কালাম সাহেব কার হয়ে কাজ
করতেছে বলে আপনার মনে হয়? সে কেন
ঐদিন আড়িপেতে আমাদের কথা
শুনেছিল?" জিজ্ঞেস করলাম আমি।
মাহতাব সিকদার একটু নড়েচড়ে বসলেন।
তারপর বললেন: তা তো আমি জানিনা,
তুমি তো শখের গোয়েন্দা, তুমি জানার
চেষ্টা কর।"
--আংকেল, আমার কিন্তু জয়নাল
সাহেবকে সন্দেহ হয়। উনি আপনাকে হরর
ফিল্মের পথ দেখালেন কেন হঠাৎ?"
--আমি কিছুই বুঝতেছিনা। জয়নাল সাহেব
যদি এসব করে থাকেন, তাহলে তাকে আমি
ছাড়বনা।"
--আর আপনার বাড়ির কাজের ছেলেটা,
তার নামটা যেন কি?"
--ফাহিম....
--হ্যা ফাহিম, ওকে দেখলাম একদিন অন্য
একটা লোককে নিয়ে আমাকে ফলো
করতেছে। অন্য লোকটা আপনার অফিসে
কাজ করে। ঐ যে বেটে করে, মুখে দাড়ি
আছে।"
--রহিম সাহেব?"
--হবে হয়তো.....
--কিন্তু রহিম সাহেবের সাথে ফাহিমের কি
সম্পর্ক?"
--সেটা তো জানিনা। ফাহিম আপনার
বাসায় আছে কতদিন?"
--তিন মাস তো হবে.... জয়নাল সাহেবই
তো ওকে আমার বাসার কাজের ছেলে
হিসেবে ঠিক করে দিল।"
--জয়নাল সাহেব? তাহলে জয়নাল সাহেব,
রহিম সাহেব, ফাহিম, কালাম সাহেব,
আরো কে কে আছে জানিনা, যারা সবাই
মিলে খেলাটা খেলতেছে।"
--কিন্তু খেলাটা কিসের?"
--সেটা এখনও জানিনা। তবে খুব বড় একটা
খেলা হবে।"
--আমি ওদের সবাইকে এক্ষুণি পুলিশে
দেব।"
--না আঙ্কেল, এত তাড়াহুড়া করলে
চলবেনা, তাদেরকে তাদের কাজ করতে
দেন। সুযোগ বুঝে একদিন খেলাটা আমরাই
খেলব।"
--আচ্ছা, যা ভালো বুঝবে কর, আর তুমি
সাবধানে থেকো, ওরা তোমার ক্ষতি
করতে পারে।"
--ওরা আমার কিছুই করতে পারবেনা
আঙ্কেল, আপনি নিজেই একটু সাবধানে
থাকবেন।"
--আচ্ছা, আমি এখন আসি তাহলে।"
--আচ্ছা......"
মাহতাব সিকদার চলে যাওয়ার পর আমি
বাংলোর বাইরে এসে চাঁদের আলো
দেখছিলাম আর মাহমুদের কথা ভাবছিলাম।
তার কথা ভাবতে গিয়ে অজান্তে চোখের
কোণে অশ্রু নেমে এল আমার। মাহমুদ,
কোথায় আছিস ভাই, ফিরে আয়।
অনেক্ষণ আকাশের চাঁদটার দিকে তাকিয়ে
ছিলাম। মনে হল ঐ চাঁদটার মতো আমিও
একা। "কুট" করে একটা শব্দ হওয়ায় সচেতন
হলাম আমি। এতক্ষণ একটা গাছে হেলান
দিয়ে বসেছিলাম। শব্দটা শুনে উঠে
দাঁড়ালাম। বাংলোর দিকে এগিয়ে গেলাম।
দেখলাম জানালার পাশে কেউ একজন
মাটিতে কিছু খুঁজতেছে।
আরো কাছে গিয়ে পেছন থেকে আমি
বললাম: কি খুঁজতেছেন কালাম সাহেব?"
--কই কিছু না তো....." থতমত খেয়ে
বললেন কালাম সাহেব। বুঝলাম আমাকে
দেখে চমকে উঠেছেন তিনি।
--তাহলে কেন এসেছেন?" প্রশ্ন করলাম
আমি।
হঠাৎ কালাম সাহেব মেজাজ দেখাতে শুরু
করলেন। বললেন: আরে ভাই এটা কেমন
জালিয়াতি? এত কষ্ট করে দৌড়ে
চ্যাম্পিয়ন হলাম, আর আপনি একটা নকল
স্বর্ণের মেডেল দিলেন।
--বাহ, মেডেল পাওয়ার সাথে সাথেই বিক্রি
করতে গেলেন নাকি? নগদ টাকার খুব
দরকার বুঝি?"
--আমার মেডেল আমি যখন খুশি বিক্রি
করব.....
--তা আজকাল মাছের ব্যবসা ছেড়ে কোন
ধান্দা শুরু করলেন?"
--ধান্দা মানে?"
--এখানে এসে আড়িপেতে আমাদের কথা
শুনার মানে কি?"
--কি যা তা বলছেন?"
বুঝলাম, কালাম সাহেব সহজে ধরা দেবার
পাত্র নই। পকেট থেকে একটা হাতঘড়ি বের
করলাম আমি। বিদেশী ঘড়ি। খুব দামী।
ঘড়িটা কালাম সাহেবের সামনে ধরে
জিজ্ঞেস করলাম: দেখেন তো, এটা চিনেন
কিনা??"
--আরে এটা তো আমার ঘড়ি!!"
উত্তেজিত হয়ে উঠলেন কালাম সাহেব।
--এটা খুঁজতে এসেছেন নাকি?"
কালাম সাহেব আমতা আমতা করে
বললেন: না মানে, হ্যা... এটা খুঁজতে এসেছি।
--হুমমম.... জানি, ঐদিন আড়িপেতে কথা
শুনতে এসে পালানোর সময় এটা পড়ে
গেছিল। কিন্তু কয়েকদিন পর এটা খুঁজতে
এলেন কেন? কি করে ভাবলেন এত দিনে
কারো চোখে পড়বেনা এটা?"
কালাম সাহেব মুখ নিচু করে ফেললেন।
আমি আবারও বললাম: ঘড়িটা খুব দামি।
আপনার পক্ষে এটা কেনা সম্ভব না। কেউ
দিয়েছে নিশ্চয়ই আমাদের ফলো করার
জন্য?"
--হ্যা , জয়নাল সাহেব দিয়েছেন। উনি
বলেছেন আপনার খবর উনাকে জানাতে।
আমি শুধু তাই করেছি। আমি আর বেশি
কিছু জানিনা।"
ঘড়িটা কালাম সাহেবকে দিয়ে বললাম:
লোভ করা ভালো না কালাম সাহেব। কি
ভাবছেন, নকল স্বর্ণের মেডেলটা কি শুধু
শুধু দিয়েছি? আসলে পুরোটাই ছিল একটা
নাটক। আপনাকে ধরার জন্যই তো দৌড়
প্রতিযোগীতার ব্যবস্থা করলাম। সেদিন
রাতে কি দৌড়টাই না দিলেন আপনি.......
(চলবে.....)
লেখক - সোহেল রানা শামী
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now