বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
-
ঠকঠক....ঠকঠক....ঠকঠক.........
কিছুক্ষণ পর দরজা
হাল্কা একটু ফাঁক করে
ভেতর
থেকে একজন
উকি দিয়ে দরজার
সামনে দাঁড়িয়ে থাকা
তরুণীকে
কিছুক্ষণ পরখ করে
জানতে চাইলো - কি
চাই?
-- জ্বী, আমি শিলা
রহমান, আপনাদের
বিজ্ঞাপন
দেখে এলাম।
-- ও আচ্ছা আসুন,ভেতরে
আসুন।
শিলা বাড়িটির ভেতরে
ঢুকেই অস্বস্তিতে
পড়লো।
কেমন ভ্যাবসা
গন্ধে ভরপুর। দরজা
জানালা সব বন্ধ এই
দিনে
দুপুরেও! লোকটির
দিকে প্রশ্নবোধক
দৃষ্টিতে তাকাতেই
বললো, আমাদের
সাহেবের সূর্যের
আলোয় সমস্যা হয়।তাই
এই ব্যবস্থা।
শিলা আর কিছুই
বললোনা, ঘুরে ঘুরে
সমস্ত বাড়ি অবাক হয়ে
দেখতে লাগলো।বেশ বড়
বাড়ি।ডেকোরেশন ও
বেশপুরানো। অনেক দিন
কোন পরিবর্তন করা
হয়নি তা দেখেই বেশ
বোঝা যাচ্ছে। বিবর্ণ
দেয়ালগুলি তার
নিজস্ব রং হারিয়েছে।
দেখতেই কেমন ভুতুড়ে
বাড়ির মতো লাগছে।
ওর অভ্যাস কোথাও
যাবার আগে সেই স্থান
সম্পর্কে কিছু জেনে
বুঝে যাওয়া। আজ এই
বাড়িতে ঢুকার আগে
আশেপাশের কয়েকজনের
কাছে বাড়িটি সম্পর্কে
কিছু তথ্য নিয়েই
এসেছে। ছোট বেলা
থেকেই শিলা প্রচন্ড
সাহসী আর কোথাও
চ্যালেঞ্জের গন্ধ পেলে
তো কোন কথাই
নেই। আজ এক
পথিকের কথায় বেশ
চ্যালেঞ্জের গন্ধ
পেয়েছে। পথিক বলাটা
ভুল হবে, এলাকারই
ছেলে
হবে বলেই মনে
হলো। ছেলেটি
বলেছিলো, দিন পনেরো
আগে একজন তরুণী
ঠিক আপনার মতোই
পত্রিকার বিজ্ঞাপন
দেখে
মির্জাবাড়িতে
ঢুকেছিলো কিন্তু আর
তাকে দেখা
যায়নি,এমন
আরো কয়েকজনকেও
ওবাড়িতে ঢুকতে দেখা
গেছে কিন্তু কেউই
তাদের ওবাড়ি থেকে
বের হতে দেখেনি।
আপনিও যাবেন কিন্তু
বের
হতে পারবেন কিনা
সেটা আল্লাহই ভালো
জানেন।
এই কথাতেই
চ্যালেঞ্জের গন্ধ
পেয়েছিলো
শিলা।
ছোট বেলায় মা মারা
যায় আর বাবা বাধ্য
হয়ে শিলাকে
এতিমখানায় রেখে আসে
এরপর আর
কোনদিন খোঁজ নিতে
যায়নি। অতএব ওর জন্য
কাঁদার
কেউ নেই,
নেই কোন পিছুটান।
এজন্য নিজেকে নিয়ে
ওর
কোন ভয় নেই, বরং মূল
ঘটনা ওর জানতেই হবে।
কি
এমন ঘটছে
মির্জাবাড়িতে যে
একটার পর একটা
মেয়ে ওখানে হারিয়ে
যাচ্ছে।
চলুন ম্যাডাম
উপরে,সাহেব উপরেই
আছেন।
-- আপনি কি এ বাড়িতেই
থাকেন?
-- জ্বী, ম্যাডাম, আমি এ
বাড়ির
কেয়ারটেকার, বাড়ির
এবং সাহেবের
দেখাশুনা আমিই
করি।
-- ও আচ্ছা, আপনার
সাহেবের স্ত্রী
কোথায় থাকেন?
-- উনি বছর তিনেক আগে
মারা গেছেন।
-- সো স্যাড, আপনার
সাহেবের কোন
ছেলেমেয়ে নেই?
-- জ্বী আছেন, এক মেয়ে,
বিয়ে করে
দেশের বাহিরেই
থাকে, আসেনা তেমন।
-- ও আচ্ছা!কথা বলতে
বলতে কেয়ারটেকার এর
পিছন পিছন দোতলায়
উঠে আসে শিলা। সিঁড়ির
সামনের তালাবন্ধ
রুমটা দেখে
থমকে দাঁড়ায়।
কেয়ারটেকার কে
জিজ্ঞাসা করে, এ
রুমটাতে এতোবড় তালা
মারা কেন?
কেয়ারটেকার উত্তর
দেয়, এটি ম্যাডামের
রুম ছিলো। এখন তিনি
নেই তাই
তালামারা।
কেয়ারটেকার এর
উত্তরটি কেমন
খাপছাড়া খাপছাড়া
লাগলো শিলার কাছে
কিন্তু সেটা
প্রকাশ করলোনা। ওরা
এসে দাঁড়ালো আনিস
মির্জার
কক্ষের বাহিরে।
কেয়ারটেকার দরজায়
হাল্কা নক
করলো, সাহেব আসবো?
-- এসো রশিদ,
-- সাহেব, এক ম্যাডাম
এসেছেন আমাদের
বিজ্ঞাপন
দেখে।
- ও, ভেতরে নিয়ে এসো।
শিলা এগিয়ে গিয়ে
আনিস মির্জাকে
সালাম দিতেই আনিস
মির্জার চোখ শিলার
দিকে
আটকে গেলো,
কি অপরূপ! দেখে মনে
হচ্ছে স্বর্গের
অপ্সরী ওর সামনে
দাঁড়িয়ে। এদিকে যখন
আনিস
মির্জা অবাক নয়নে
শিলার সৌন্দর্য
অবলোকন এ মশগুল ঠিক
তখন শিলাও
আনিস মির্জাকে দেখে
কিছুতেই বিশ্বাস
করতে পারছেনা যে
তার সামনে ইজিচেয়ার
এ বসা
অসুস্থ মানুষটি
বিপত্নীক এবং তার
একটি কন্যাও আছে।
মানুষটি
দেখতেঅসাধারণ, যে
কেউ এক দেখায় প্রেমে
পড়ে যাবে
তবে গায়ের চামড়াটা
একটু ফ্যাকাসে।কিন্তু
চোখ!
যেন গভীর সমুদ্র। এতো
সুন্দর চোখ কোন
মানুষের হতে পারে
এটা আনিস মির্জাকে
না
দেখলে জানতে পেতো
না। ওই চোখে বেশিক্ষণ
চেয়ে থাকলে
মোহে পড়ে যাবে সেই
ভয়ে শিলা চোখ
নামিয়ে নিলো। শিলার
চোখ নামানো দেখে
আনিস
মির্জাও নিজেকে সংযত
করে প্রশ্ন করলো --
তো আপনার নাম?
-- আমি শিলা রহমান।
দেশের অখ্যাত একটি
নার্সিং
হোমে কর্মরত ছিলাম।
-- চাকরি ছেড়ে এখানে
কেন?
-- বেশ লোভনীয় অফার
তাই, তবে একঘেয়ে
চাকরি আর ভালো
লাগছিলো না কিছুটা
পরিবর্তন
চাচ্ছিলাম।সবচেয়ে বড়
কথা
শহরের যান্ত্রিকতা
থেকে কিছুদিন মুক্ত
থাকতেই
আসা।
-- ও আচ্ছা, যদি কিছু
মনে না করেন তো একটি
প্রশ্ন,- কে কে আছে
আপনার?
-- কেউ নেই আমি এতিম।
এতিমখানাতেই বড়
হয়েছি।
এক সময় সেই আশ্রয়ও
রইলো না। ওরা স্বাধীন
করে দিয়েছে এখন আর
খোঁজ নেওয়ার কেউ নেই।
শিলার কথা শুনে আনিস
মির্জার ঠোটে
ধূর্তের হাসি ফুঠে
মিলিয়ে গেলো কিন্তু
হাসিটি শিলার চোখে
ঠিকই ধরা পড়ে গেলো।
অবাক
হলোনা তবে এই হাসির
কারন জানতে আরো
বেশি
উৎসাহ পেলো।
শিলাকে গেস্ট রুম
দেখিয়ে দেওয়া হলো
তবে
ওর রুমে যাবার আগে
তালাবন্ধ রুমটিকে
একনজর পরখ
করে নিলো।
নাহ,তালাটি বেশ
মজবুত,চাবি ছাড়া
খোলার
উপায় নেই। ওর কেন
জানি মনে হচ্ছে সব
রহস্য আনিস মির্জা আর
এই রুমটিকে ঘিরেই। যে
করেই হোক
ওকে এই রুমের চাবির
সন্ধান পেতেই হবে।ও
ভুলে গেলো এখানে
আসার কারন কোন অসুস্থ
ব্যক্তির সেবা। এখন ওর
ভেতরে কাজের থেকে
কৌতুহলটা চেপে
বসেছে। নিজের রুমে
এসে
ফ্রেশ হয়ে টানা একটি
ঘুম দিলো।কারন ওর
বিশ্বাস রাত
ছাড়া এরা কিছুই
করেনা। তবে ভয় যে
একদম করছেনা সেটা
বললে ভুল হবে, পিছুটান
না
থাকলেও জীবনের ভয়
সবারই থাকে। কিন্তু
কৌতুহলের কাছে আজ
জীবনের ভয়কে তুচ্ছ
মনে হচ্ছে ওর।
রাত বারোটা নিস্তব্ধ।।
বাড়িতে খুট করে একটি
আওয়াজ
হলো
যা খুব হাল্কাভাবে
শিলার কানে এলো, এই
শব্দটারই
অপেক্ষায়
ছিলো শিলা। ওর মন
বলছে এটি তালা খুলার
শব্দ।
মাঝখানের সেই
রহস্যময় ঘরটি কেউ
খুলেছে । দশ
মিনিটচুপচাপ
বসে থেকে আস্তে করে
উঠে দাঁড়ালো,
আস্তে করে দরজা খুলে
কিছুক্ষণ অপেক্ষা
করলো।এরপর ধীর পায়ে
এগিয়ে
গেলো রুমটির দিকে।
রুমটি থেকে হলদে
আলোকরশ্মি দরজার ফাক
গলে করিডোর এএসে
পড়েছে। দরজায় চোখ
রাখতেই দেখতে
পেলো অসংখ্য
মোমজ্বালিয়ে একটি
গোল চক্র
বানানো হয়েছে।চক্রের
ঠিক মাঝখানে
কেয়ারটেকার রশিদ
মিঞা কালো পোশাক
পড়ে ছোট্ট একটি
অগ্নিকান্ড
জ্বেলেবসে মন্ত্র পড়ছে
আরতার পাশেই
কালো
আলখাল্লা পড়ে দাঁড়িয়ে
আনিস
মির্জা। ফ্যাকাসে
চামড়ায় কালো
আলখাল্লায় অপরুপ
লাগছে আনিস
মির্জাকে।কেয়ারট
েকার রশিদের
কন্ঠ কানে আসতেই
শিলা সম্বিৎ ফিরে
পেলো,
রশিদ মিঞা
মন্ত্রজপা থামিয়ে বলে
উঠল, সাহেব
দুদিন বাদেই
আমাবস্যা, আর
শিকার আমাদের
হাতেই। এবার অবশ্যই
ড্রাকুলা রানী
ইলিয়ানা মুক্তি
পাবেন, মুক্তি পাবেন
ওই অভিশপ্ত আয়না
থেকে যেখানে এক
সাধুর অভিশাপে তিনি
বন্ধী। দুদিন বাদেই
তিনি মুক্ত
হলে সমস্ত পৃথিবী
আপনাদের হাতে।হুম,
ঠিক বলেছো,
এলিয়ানা আমাদের
সম্রাজ্ঞী, তিনি
মুক্ত হলে দুনিয়ার কোন
শক্তিই আমাদের
ঠেকাতে
পারবেনা।
বিশাল এক আয়নার
সামনে টানা দুই ঘন্টা
মন্ত্র পাঠ করে
উঠে দাঁড়ালো রশিদ
মিঞা,এক হাতে লাল
সিঁদুরের গুড়ার
মতো কিছু পাউডার আর
অন্যহাতে একটি মোম।
মোমটি বার
তিনেকবআয়নার সামনে
ঘুরিয়ে
লাল পাউডার আয়নার
মাঝখানে ছুড়ে দিতেই
বীভৎস
একটি চেহারা
আয়নায় ফুটে উঠলো।
চেহারাটি এতো ভয়ংকর
ছিলো যে আরেকটু হলেই
শিলার গলা চিরে
চিৎকার
বেরিয়ে আসছিলো,অনেক
কষ্ট করে
দুহাত দিয়ে মুখ চেপে
চিৎকারটি হজম করতে
হলো।
আয়নায় চেহারাটি
ভেসে উঠতেই দুজনে
আজ্ঞাবহরূপে কুর্নিশ
জানালো তাদের
সম্রাজ্ঞী
কে।কিন্তু তাদের দেখে
চেহারার মালিক তৃপ্ত
না
হয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলো।
ভয়ংকর তীক্ষ্ম গলায়
বলে উঠলো, কি ব্যাপার
আনিস, আমার শিকার কে
নিজেই শেষ করে দিলে?
আর মাত্র একদিন এর
মধ্যে যাই ঘটুক
এবারের শিকারটি
আমার।এবার তুমি ওর।
একবিন্দুও রক্ত পান
করবে না।
সমস্ত রক্ত দিয়ে এই
আয়নাটি স্নান করাবে
তবেই
মুক্তি পাবো আমি।
-- জ্বী, সম্রাজ্ঞী
এলিয়ানা।
সম্রাজ্ঞী কে কুর্নিশ
জানিয়ে দুজনে
যখন দরজার দিকে মুখ
ফেরালো, শিলাও তখন
সড়াৎ
করে দরজা থেকে সরে
করিডোর এর একটি
থামের আড়ালে আশ্রয়
নিলো। দুজনে রুম
থেকে বেরিয়ে আবার
তালা মেরে দিলো।
শিলা
খেয়াল করলো চাবিটি
রশিদ মিঞার হাতে।
আনিস মির্জা
নিজের রুমে ফিরে
যেতেই রশিদ মিঞাও
চাবি হাতে
চললো নিজের রুমের
দিকে।আধা ঘন্টা পর
শিলা
বিড়ালের মতো
নিঃশব্দে নিচে নেমে
এলো,
রশিদ মিঞার দরজায়
আস্তে করে হাত রাখলো।
নাহ
বন্ধ,শিলা ভেবেছিলো
রশিদ ঘুমিয়ে গেলে
চাবিটি নিয়ে ওই রুমে
ঢুকবে
কিন্তু সেটা আর সম্ভব
হলো না।অথচ ওর হাতে
সময়
মাত্র একদিন। এর
মধ্যেই যা করার
করতে হবে, হয় নিজে
পালাবে নয়তো ওদের
বিনাশ। নিজে পালাতে
পারবে বলে মনে
হচ্ছেনা কারন মেইন
দরজায়
বিশাল তালা আর
চাবিটি কোথায় সেটা
ওর জানা নেই,
তবে ওর সামনে
দ্বিতীয় পথ ছাড়া আর
কোন পথ
নেই। আর যদি।কাল কিছু
করতে না পারে তো এরা
আরো
ভয়ংকর রুপ ধারন করবে
এতে কোন সন্দেহ নেই।
পরদিন সকালে শুভ্র
সাদা শাড়ি পরে আনিস
মির্জার ঘরে
গেলো
শিলা। ও জানে এই
শাড়িতে ওকে পরীর
মতো
লাগে, অনেকেই বলেছে
তবে এখন আনিস
মির্জাকে বশে
আনতে পারলেই অর্ধেক
কাজ হয়ে
যাবে।শিলার চাল
কাজে এলো, আনিস
মির্জা ওর
থেকে চোখ ফেরাতে
পারলোনা। আনিস
মির্জা
যে মোহে পড়েছে সেটি
শিলা খুব সহজেই
বুঝতে পারলো।শিলা
এগিয়ে গিয়ে ওষুধ
খাওয়ালো
এরপর
আনিস মির্জার পাশে
বসে তার হাতটি হাতে
নিতেই
চমকে উঠল শিলা,বরফ
শীতল হাত! নিজেকে
সামলে নিয়ে বললো,
দেখুন আমি শিক্ষিতা,
এবং
ঘটে বেশ বুদ্ধিও রাখি।
আমি আগেই খবর নিয়ে
এসেছি যে এখানে কিছু
গন্ডগোল আছে। ফিরে
যেতে পারতাম কিন্তু
ভাবলাম ফিরে
যাবার আগে আপনাদের
একটু দেখেই যাই। যখন
আপনাকে দেখলাম তখন
আপনার ওই দু'চোখের
মায়ায় পরে
যাই , ভয়ংকর মায়া
আপনার চোখে। কাল
রাতে
আপনাদের সব
কথা শুনেছি
আমি,এলিয়ানার ভয়ঙ্কর
রুপ ও দেখেছি
এও জানি
আজ আমার জীবনের শেষ
দিন তাই এই দিনটিতে
মনের মতো সেজে মন
যাকে পছন্দ করেছে
তার সামনে
এসে দাঁড়িয়েছি।এও
জানি আজ আমাকে বলি
দেওয়া
হবে তবুও
আপনার সামনে কেন
এসেছি জানেন?
নাহ,প্রাণ ভিক্ষা
চাইতে
নয়। এসেছি মনের
কথাটি বলতে, মৃত্যুর
আগে
আপনাকে বলতে
চাই যেদিন প্রথম
দেখেছি সেদিনই
ভালোবেসে ফেলেছি।
তখন জানতাম না আপনি
ভ্যাম্পায়ার,আসল
ে ভ্যাম্পায়ার যে
পৃথিবীতে
আসলেই
থাকতে পারে এটি
জানা ছিলোনা। আজ
জেনেও
আমার এতটুকু খারাপ
লাগছেনা।ঠোটের কোনে
মায়াময়
হাসি ঝুলিয়ে শিলা
বলল, আপনার জন্য আমার
শরীরের
সমস্ত রক্ত উৎসর্গ
করলাম।আনিস মির্জার
মনে
হলো ও স্বপ্ন দেখছে।
কোন মেয়ে ওকে
এতো ভালোবাসতে পারে
এটা
ওর জানাছিলো না।
এলিয়ানা ওকে কখনওই
ভালোবাসেনি শুধুই
ব্যবহার করেছে।আনিস
মির্জা
সিদ্ধান্ত নিয়ে
নিলো,যে করেই হোক এই
মেয়েকে ওর বাঁচাতেই
হবে আর ওকেই করবে
জীবন সঙ্গী।
রাত বারোটা..
মাঝখানের ঘর খোলা
হলো, প্রথমে রশিদ
মিঞা
তারপর শিলা এরপর
আনিস মির্জা প্রবেশ
করলো
রুমটিতে। শিলাকে
জোড়পূর্বক আনা
হয়নি বরং স্বইচ্ছায়
এসেছে ও। রুমটিতে
ঢুকেই
অবাক হয়ে
গেলো শিলা, কাল
দরজার ফাক দিয়ে শুধু
রুমের
মাঝখান বরাবর
দেখতে পেয়েছিলো
কিন্তু রুমের পাশদিয়ে
রাখা
সারি সারি ছোট
বড় কফিন কাল ওর নজরে
আসেনি। এতো কফিন
কেন সেটাই বুঝে উঠতে
পারলোনা।শিলার অবাক
চাহনি দেখে আনিস
মির্জা সূক্ষ্ম হেসে
বললো,আজ পর্যন্ত
যাদের শিকার করেছি
তার
বেশির ভাগই এই
কফিনে শুয়ে আছে।
যাদের আমার পছন্দ হয়
তাদের কফিনে
বিশেষ মেডিসিন দিয়ে
রাখা হয় আর যাদের
পছন্দ
হয়না তাদের
শরীর নষ্ট করে দেই।
--- এদের সংরক্ষণ এর
কারন?
-- এরা হবে আমাদের
সাথী।সম্রাজ্ঞীর
মুক্তির পরই এদের
জাগিয়ে তোলা হবে।
তবে
মানুষরুপে নয় আমাদের
মতো রক্তপিপাসু রুপে।
আনিস মির্জার কথায়
শিলা চমকে উঠলো,
বুঝতে পারলো ও যা
ভেবেছিলো তাই হতে
চলেছে, এরা
মানবজাতির উপর
ভয়ংকররুপে হাজির হবে
খুব শীঘ্রই। আর শিলা
কিছুতেই সেটা
হতে দেবেনা।রশিদ
মিঞা মোম সাজাতে
আরম্ভ
করলো। আনিস মির্জা
ধীরে ধীরে বিশাল
আয়নাটির
সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।
কালো
আলখাল্লায় মনে হলো
সে উড়ছে।
রশিদ মিঞা মোমগুলি
জ্বালাতেই সমস্ত ঘর
উজ্জ্বল
আলোয় ভরে
গেলো। সুইচ টিপে
বৈদ্যুতিক বাতি
নিভিয়ে দেওয়া হলো
এখন শুধু নীলাভ শিখায়
প্রজ্জ্বলিত মোমের
আগুনে বিশেষ মন্ত্র
পাঠ
করবে।
রশিদ মিঞা চোখ বুজে
মন্ত্র পাঠ শুরু
করতেই আনিস মির্জা
ঘরের কোনে
রাখা একটি মজবুত
লোহার দন্ড হাতে
এগিয়ে
গেলো আয়নার
দিকে। মন্ত্রপাঠের
দরুন আয়নায় ধীরে
ধীরে
সম্রাজ্ঞী এলিয়ানার
ছায়া ভেসে উঠতে
লাগলো।
এলিয়ানার দিকে চেয়ে
আনিস মির্জা বলে
উঠলো ক্ষমা করবেন
সম্রাজ্ঞী আমি
আপনাকে মুক্ত করতে
পারলামনা বলেই
হাতের
লোহার দন্ড দিয়ে
সজোরে আয়নায় বাড়ি
মারলো।
সঙ্গে সঙ্গে আয়নাটি
ভেঙে হাজার টুকরায়
পরিণত
হলো সাথে এলিয়ানার
তীক্ষ্ণ চিৎকারে ঘর
যেন কেঁপে উঠলো।
ঘটনার আকস্মিকতায়
রশিদ
মন্ত্রপাঠ থামিয়ে
আনিস মির্জার দিকে
বিস্ফারিত নয়নে চেয়ে
রইলো আর
শিলাও যেন বিশ্বাস
করতে পারছেনা যে
আনিস মির্জা
এ কাজটি করেছে।
কিছুটা ধাতস্থ হয়ে
রশিদ উঠে দাঁড়িয়ে
বলে উঠলো,
সাহেব এ আপনি কি
করলেন,কেন করলেন
এটা?
এতো দিনের সমস্ত কষ্ট
এভাবে বিনষ্ট কেন
করলেন?আমি আর
এলিয়ানার গোলাম হতে
চাইনা,
আমি মুক্তি পেতে চাই।
আজ থেকে আমি হবো
আমার রাজ্যের সম্রাট
আর শিলা হবে আমার
সম্রাজ্ঞী।
তোমার কোন আপত্তি
আছে কি রশিদ!থাকলে
বলো তোমাকেও
মুক্ত করে দেই। রশিদ
অবাক হয়ে একবার
শিলা আর
একবার
আনিস মির্জার দিকে
তাকিয়ে মাথা নিচু
করে রুম
থেকে বেরিয়ে
গেলো।রশিদ বেরিয়ে
যেতেই
আনিস মির্জা আস্তে
আস্তে শিলার দিকে
এগিয়ে
এলো। শিলার
এখনো মনে হচ্ছে ও
স্বপ্ন দেখছে। আনিস
মির্জা শিলার সামনে
দাঁড়িয়ে দুহাত দিয়ে
শিলার মুখটি তুলে ধরে
বললো,
হবে কি আমার
সম্রাজ্ঞী? আমি
তোমাকেও আমার
মতোই বানিয়ে নেবো।
এরপর এদের জাগিয়ে
তৈরি
করবো আমাদের
ড্রাকুলা সাম্রাজ্য!
শিলা হ্যাঁ সূচক মাথা
নাড়াতেই আনিস
মির্জার চোখ খুশিতে
ঝলকে
উঠলো, ধীরে
ধীরে নিজের ঠোট
শিলার ঠোটে দিকে
এগিয়ে আনতেই পেটে
সূচালো কিছু ঢুকে
যাওয়া বুঝতে পেরেই
এক
ঝটকায় শিলাকে
মেঝেতে ফেলে দিলো।
কিন্তু ততোক্ষণে
যা হবার হয়ে গেছে।
শিলার হাতে খালি
সিরিঞ্জ, ওর
ভেতরের সমস্ত তরল
পদার্থটুকু ঢুকিয়ে
দিয়েছে
আনিস মির্জার শরীরে।
শিলার ছোট্ট একটি
নার্সিং ব্যাগ
আছে আর তাতেই ছিলো
এনেস্থিসিয়ার শিশি।
এক শিশি
এনেস্থিসিয়া
সমস্তটুকুই সিরিঞ্জে
ভরে হাতের
মুঠোয় নিয়ে তৈরি
ছিলো। ছিলো শুধু
সুযোগের
অপেক্ষায়।
আনিস মির্জা
অবিশ্বাসী চোখে
শিলার দিকে তাকিয়ে
মেঝেতে গড়িয়ে পড়লো।
কিছু একটা বলতে
গিয়েও পারলোনা।শিলা
এগিয়ে গিয়ে
লোহার দন্ডটি নিয়ে
সজোরে আনিস
মির্জার মাথায় বাড়ি
মারলো সঙ্গে সঙ্গে
খুলি ফাটার
বিশ্রী আওয়াজ হলো
তার সাথে মাথা ফেটে
বেরিয়ে এলো হলদে
পদার্থ।
নিচে নেমে রশিদ
মিঞাকে কোথাও খুঁজে
না
পেয়ে বিধ্বস্ত
চেহারায় বেরিয়ে এলো
রাস্তায়।
প্রাণভরে
শ্বাস নিতেই নিজেকে
খুব হালকা
লাগলো,আজকের
পর আর কোন
মানুষ আনিস মির্জার
শিকার হবেনা।
-সমাপ্ত
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
Zannatul
Guest ৫ বছর, ১১ মাস পুর্বেমেঘবালিকা {ইসরাত}
User ৬ বছর পুর্বেতাজু অাহমেদ
Golpobuzz ৬ বছর পুর্বেমেঘবালিকা {ইসরাত}
User ৬ বছর পুর্বেTia
Guest ৬ বছর পুর্বেজাকারিয়া আহমেদ
User ৬ বছর পুর্বেTamim
Guest ৬ বছর পুর্বেMD:Emon khan
Guest ৬ বছর পুর্বে