বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
ডাকাতের মতো চাঁদ উঠেছে বাইরে।
ডাকাতের মতো চাঁদ।
কবি বসে আছে বাইরে,লেকের পাড়ে। শীত করছে খুব। কুয়াশা নেই,পরিষ্কার আকাশ। শিশির ঝরছে।
“এইসব জলদুঃখ,এইসব প্রার্থনা
সব ধূয়ে যাবে শিশিরের স্নেহে…
এই লাইনগুলো ফুল স্পীডে ঘুরছে মাথার ভেতর। এর বেশী আগানো যাচ্ছে না। অন্য কবিতা ঢুকে পড়ছে। কবি লাইটার হাতে নেয়, এই কবি সিগারেট খায় না। উইড খায়। উইড মানে গাঁজা। গাঁজা খায় আর বিড়বিড় করে। বিড়বিড় করে কবিতা বলে। এখন সাথে গাঁজা নাই। লাইটারের ইউটিলিটি সাথের লাইট, টর্চ হিসেবে ব্যবহার করে। চাঁদের আলোতে লাইটারের টর্চ ম্লান দেখায়।
এত উজ্জ্বল চাঁদ, এত আলোকিত রাতের আকাশ অনেকদিন দেখেন নি। কার্তিকের আকাশ, স্বচ্ছ-ঝকঝকে। ছিটেফোঁটা মেঘ নেই। গত বর্ষায় অনেকদিন চাঁদ দেখা হয় নি। আজকে মুগ্ধ হয়ে চাঁদ দেখে কবি। এলুমিনিয়াম থালা চাঁদ দেখে।
লেকের এ পাড়টা শান্ত। বিকেলের পর লোকজনের তেমন কোন চলাচল নেই। সন্ধ্যায় রাখালীরা গরু নিয়ে ঘরে ফেরে। রাখালীরা? ধূলি উড়িয়ে ঘরে ফেরার মতো এখানকার রাখালেরা না। এই সব দায়িত্ব মেয়েদের। কবি গভীর ভাবে লক্ষ্য করেছে। অন্যদের মত মাতৃতান্ত্রিক পরিবার এখানে প্রতিষ্ঠিত নয়। কিন্তু অর্থনৈতিক সকল কর্মকান্ডে মেয়েদের উপস্থিতি সরব। কবি এইসব ভাবে। আর তার মাথায় ফুল স্পীডে ফ্যন ঘুরে। “কার্তিক মাসের চাঁদ” কবিতার কথা মনে পড়ে। জীবনানন্দের। সাথে আসে প্যাঁচা, মাঠ, হেমন্তের ধান এইসব উৎপ্রেক্ষা। কী আশ্চর্য সব কবিতা লেখে গেছেন সান্ধ্যভাষায়। দুর্বোধ্য, দুর্বোধ্য। অথচ বিনয় মজুমদার, কাল রাতে বিনয় মজুমদার পড়তে গিয়ে মনে হচ্ছিল গুপ্ত সাহিত্য পড়ছে। ফিরে এসো চাকা’র বিনয়। আশ্চর্য ফুল, চকোলেট। যেন নিমেষেই তাকে গলধঃকরন না করে…
এই মুহুর্তে মুঠোফোনে কল বেজে উঠে। পাঞ্জাবির পকেট থেকে ফোন হাতে নেয়।”টি” ফোন করেছে। বিরক্ত হয়। এই মুহুর্তে কথা বলার কোন মানে হয় না। কথা বললে “মিজাজ” খারাপ হবে। এই মুহুর্তে সে “মিজাজ” খারাপ করতে চাচ্ছে না। এই মুহুর্তে সে হাই থাকতে চাচ্ছে। হাই মানে হাই থট, হাই থটের জগতে। উইথ ইঁদুর এন্ড প্যাঁচা। ক্ষুধা এবং যৌনতা। জীবনবাবু জেকে বসেছে আজ মাঝরাতে।
“চাঁদ ডুবে গেলে ‘পর প্রধান আঁধারে তুমি অশ্বত্থের কাছে
এক গাছা দড়ি হাতে নিয়ে গিয়েছিলে তবু একা-একা,
যে জীবন ফড়িংযের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা..
আজকে সিলভিয়া প্লাথের জন্মদিন। কী কাকতালীয়! এই চাঁদ, আটবছর আগে একদিন, সিলভিয়া প্লাথ। আজকে কি চাঁদ ডুববে?
এই সময়ই লাশটা চোখে পড়ে। খুন হয়ে যাওয়া লাশ। অন্ধকারে খুন হয়ে যাওয়া লাশটা।
লেখক: শাহরিয়ার (২০০৪-২০১০)
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now