বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
শিয়ালের ফন্দির পরিণতি
লিখেছেন: Â Dìp
সংগ্রহ
অনেক আগে রাঙ্গামাটির গহীন বনে তখন বাস করত তিন বন্ধু, মুরগি,বানর আর শুকর। ওদের মধ্যে ছিল সেরকম বন্ধুত্ব। একজন আরেকজন এর জন্যে জীবন ও বাজি রাখতে পারত। ভালোয় কাটছিল ওদের দিনগুলো। কাজ করত আর একসাথে রান্না করে খেত। এভাবে দিন যায়।
এরপর একদিন ওরা যখন কাজে যাচ্ছিল তখন দেখা পেল এক শিয়ালের। হায়রে!বেচারা শিয়াল চেষ্টা করছিল মৌচাক থেকে মধু খাওয়ার।
'কি কর শিয়াল মামা; মুরগি জিজ্ঞেস করল। হঠাৎ শব্দে শিয়াল ভয় পেল। সামলে নিয়ে বলল “আরে এইতো । মানে এদিক দিয়ে যাচ্ছিলাম পথে দেখি মধু আর মধু। তাই একটু খাওয়ার চেষ্টা করছিলাম । এই আর কি, হে হে।
ও, ভাল ভাল।
- তা তোমরা কই যাও?
'এইতো জুমে যাচ্ছি।একটু পরিষ্কার করতে হবে জুমটা; বলল শুকর।
- ওও। তা যাও যাও।দেরি হচ্ছে মনে হয়।
এই পর্যন্ত ছিল ওদের ওদিনের আলাপ। যে যার মত চলে গেল। কিন্তু বুঝতেই পারল না যে এই শিয়াল তাদের নিয়ে কি পরিকল্পনা করে ফেলল।
শিয়ালটা ছিল জাত চালাক। আর অন্যদিকে তিন বন্ধু ছিল সহজ সরল। শিয়াল সব বুঝে শুনে ভাবলো, এদের উপর বসে খেতে হবে। একে তো কিছু করেনা তার উপর প্রতিদিন খাবার খুঁজতে হয়। তার থেকে এই ভাল এদের সাথে ভাব জমিয়ে সুবিধা নেওয়া যাক। যেই ভাবা সেই কাজ। এরপর সে মাঝে মাঝেই ইচ্ছা করে ওদের সামনে পড়ল আর ভাব জমানো শুরু করলো। তারপর একদিন বিকেলে কাজ থেকে ওদের ফিরার সময় করে ফেলল সেই অবাঞ্চনীয় আবদার 'বানর দা, আজ একটা কথা বলব ভাবছি তোমাকে।'
- কি কথা বলে ফেল না ভাই!
- ভাবছি তোমরা আবার রাগ করবে কিনা।
- আরে বলে দেখ ভাই,সমস্যা নেই।
- আমি যুবক মানুষ বানর ভাই। একা থাকি,একা ঘুমায়.. অনেক অস্বস্তি লাগে। পরিবার পরিজন কেও নেই। তাই বলছিলাম তোমাদের সাথে যদি একটু থাকার জায়গা করে দাও।
হঠাৎ এরকম প্রস্তাবে ওরা একটু ভড়কে গেল। কি করবে, বন্ধুত্ব এত গভীর হয়েছে যে শেষ র্পযন্ত না করতে পারল না। দলে নিল ওদের নতুন বন্ধুকে। তখনও জানলো না ওরা, শিয়াল কি উদ্দেশ্য এসব করছে।
এরপর শুরু হল নতুন এক জীবন। এখন ওরা সংখ্যায় চার। কাজ সব ভাগাভাগি করে নেয় নিজেদের মধ্যে। কয়েকদিন গেল এভাবে। এবার শুরু হল শিয়ালের চাল। ও আর কাজে যায়না। সকালে নাকি ঘুম থেকে উঠতে পারেনা। ওরাও আর কি বলবে। কিছু না বলে সহ্য করে যাচ্ছিল। শিয়াল না করে রান্না না কাজ। এটা নিয়ে শেষে ওদের মধ্যেই ঝগড়া লাগা শুরু করল। শিয়াল তো এসব বুঝতে পারছিল। সে আবার নতুন প্ল্যান করল। তারপর সবাই কে নিয়ে একদিন আলোচনায় বসল, আর শিয়াল আবার প্রোপোজাল দিল, 'বন্ধুরা আমরা সংখ্যায় তো চার জন। আমরা এত সকালে কাজে গিয়ে আবার রাতে এসে ভাত রান্না করে খাই। এর থেকে তো ভাল একজন বাসায় থাকি,সে সবার জন্য রান্না করবে। পালাক্রম এ চলবে এসব।
তিন বন্ধুই ভাবল, এটা তো খারাপ না। এভাবে থাকলে তো এতো কষ্ট করে রান্নাও করতে হবেনা। একদিন পরপর একেকজন কে করতে হবে। তাই ওরা রাজী হয়ে গেল। আর এ প্রস্তাবে শিয়ালের শাস্তির দিন ও ঘনিয়ে এল।
প্রথমে রান্নার দায়িত্ব পড়ল বানরের উপর। খাবার সংগ্রহ করে রান্না করা তার তো কোন ব্যাপার না। সে সাতদিন র্পযন্ত ভালোয় খাওয়ালো বাকীদের।
দ্বিতীয় সপ্তাহে দয়িত্ব পড়লো মুরগীর উপর। ডিম ভাজি আর সিদ্ধ করেই সে খাওয়াল পুরা সপ্তাহ।
তৃতীয় সপ্তাহ শুকরের। সেও ভাল ভাত রান্না করে খাওয়াল। আবার ২দিন নিজের রান থেকে মাংশ নিয়ে খাওয়ালো পেট ভরে।
এবার আসল শিয়ালের সপ্তাহ। রান্না করতে হবে এক সপ্তাহ..! সে ওদিন সকালেই ঢং শুরু করে দিল। অসুস্থতার ভান করে পড়ে রইল। বলল “আজ পারব না গো। আজকের জন্যে তোমাদের মধ্যে একজন রান্না সাড়া কর”
ওদিন ও ছাড় পেল শিয়াল মামা। এরপর তো আর একই বায়না দেওয়া যায়না তাই সে ভাবল আজ রান্না করবে। কিন্তু রান্না করবে তা কি…?? শেষে ভাবল বানরের মত ফল মূল নিয়ে আসবে। গেল সে আনতে কিন্তু পারল না। কারণ আগে তো গাছে চড়তে হবে!
এরপর গেল মুরগীর মত ডিম দিতে।না তা ও হলনা। ব্যর্থ চেষ্টা!
শিয়াল ভাবলো, শুকর তো মাংস কাটছিল নিজের! হা চেষ্টা করা যাক !
নিজের মাংস কাটতে গিয়ে কোন অংশ থেকে কাটবে তাই বুঝতে পারল না। শুধু শরীরটাই কাটলো এখানে একবার, ওখানে একবার।”
রাতে তিন বন্ধু ফিরে তো মাথা নষ্ট। ভাত রান্না হয়নি। ওরা আস্তে আস্তে বুঝতে পারছিল শিয়ালের ফন্দি। তাই তাকে ওরা ডেকে অনেক কথা বলল। বুঝিয়ে বলে ওকে বাড়ি থেকে বের করে দিল।
বেচারা শিয়াল, মনের দুঃখে বনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিল। সামনে পরল আবার সেই মধু আর মৌচাক। সারাদিনে কিচ্ছু খায়নি। আর পারল না, মৌমাছি ভর্তি মৌচাকেই হাত ঢুকিয়ে দিল। আর রক্ষে পেল না। এমনে কাটা শরীর, তার উপর মৌমাছির কামড়..! সামনে আবছা একটা নদী দেখল। সেখানেই ঝাপ দিল…আর উঠল না।
লেখকের কথা : কিছু ছোট বয়সে শোনা ,কিছু নিজের মাথা থেকে নিয়ে বানালাম।
(সমাপ্ত)
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now