বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
অবিশ্বাস্য সুন্দর পৃথিবী
ড: মুহম্মদ জাফর ইকবাল
অপারেশন থিয়েটারে শুয়ে আছি, মাথার ওপর উজ্জ্বল আলো। আমাকে ঘিরে ডাক্তার নার্স তার সাথে অনেক মানুষ, অনেকে আকুল হয়ে কাঁদছে। ডাক্তার নার্স সবাইকে বের করার চেষ্টা করতে করতে আমাকে বললেন, ‘আপনার ইনজুরিটা কতটুকু গুরুতর বোঝার জন্যে, রক্ত বন্ধ করার জন্যে আপনাকে জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া দিতে হবে’।
আমি একবারও জ্ঞান হারাইনি, মাঝে মাঝে যখন মনে হয়েছে অচেতন হয়ে যাবো দাঁতে দাঁত কামড়ে চেতনা ধরে রেখেছি। কেন জানি মনে হচ্ছিলো অচেতনতার অন্ধকারে একবার হারিয়ে গেলে আর ফিরে আসবো না। আমি অবুঝের মতো ডাক্তারকে বললাম, ‘না, আমাকে জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া দেবেন না, যা করার এভাবেই করুন।’ ডাক্তার বললেন, ‘অনেক কষ্ট হবে।’ আমি বললাম, ‘হোক’। ডাক্তার বললেন, ‘সেই যন্ত্রণায় আপনি এমনি জ্ঞান হারাবেন।’
আমার হাতে পায়ে সুচ ঢুকিয়ে তখন রক্ত-স্যালাইন দেওয়া শুরু হয়েছে। তার সাথে তারা অন্য কিছু দিলেন, আমি কিছু বোঝার আগে অচেতন হয়ে গেলাম।
একসময় আবছা আবছাভাবে চোখ খুলে তাকিয়েছি, অন্ধকার, মুখের কাছে ঝুঁকে কেউ কিছু একটা বলছেন, শুনতে পাচ্ছি কিন্তু বুঝতে পারছি না। ভালো করে তাকালাম, মানুষটি আমাদের শিক্ষামন্ত্রী, আমি তাকে নাহিদ ভাই ডাকি। আমি তার কথা বোঝার চেষ্টা করলাম, তিনি আমাকে সাহস দিচ্ছেন। বলছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে ঢাকায় নেওয়ার জন্য হেলিকপ্টার পাঠিয়েছেন।
আমি চেতনা এবং অচেতনার মাঝে ঝুলে আছি। টের পেলাম আমাকে স্ট্রেচারে শুইয়ে কোথাও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমাকে কোথায় জানি তোলা হলো, আশেপাশে সামরিক পোশাক পরা মানুষ। আমার কমবয়সী সহকর্মীদের কেউ কেউ আছে। আবছা অন্ধকারে হেলিকপ্টারের ইঞ্জিনের গর্জন শুনতে পেলাম। গর্জন বেড়ে উঠলো- নিশ্চয়ই আকাশে উড়তে শুরু করছে।
ঘুমিয়ে আছি না জেগে আছি আমি জানি না। আবছা অন্ধকারে অনেকে চুপচাপ বসে আছে। তার মাঝে শুধু ইঞ্জিনের গর্জন। যাচ্ছি তো যাচ্ছি। মনে হয় বুঝি যোজন যোজন পার হয়ে গেছে।
একসময় ইঞ্জিনের শব্দ থেমে গেলো। নিশ্চয়ই ঢাকা পৌঁছে গেছি। মানুষজন ছোটাছুটি করছে। আমাকে নামানো হয়েছে হেলিকপ্টার থেকে, নামিয়ে আমাকে একটা ট্রলি বা স্ট্রেচারে শোয়ানো হয়েছে। ওপরে খোলা আকাশ সেই আকাশে একটা ভরা চাঁদ। কী অপূর্ব একটি দৃশ্য! আমি সেই চাঁদটির দিকে বুভুক্ষের মতো তাকিয়ে রইলাম! পৃথিবী এতো অবিশ্বাস্য সুন্দর?
খোদা আমাকে এই অবিশ্বাস্য সুন্দর পৃথিবীটিকে আরো কয়দিন দেখতে দেবে?
সূত্র: বাংলা নিউজ।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
Md Rayhanul Islam
Guest ৬ বছর, ১ মাস পুর্বেHappiest person in the world(ARAB)
User ৬ বছর, ১ মাস পুর্বেAM_Music_lover
User ৬ বছর, ১ মাস পুর্বে