বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
ভালবাসার গভীরতা
..
..
সেই অনেকক্ষন থেকেই ফোনটা বেজে চলেছে। ঘুমের কারনে চোখ খুলতে পারছি না। রাতে খুব একটা ভাল ঘুমাতে পারিনি। তাই এই সকালে ঘুমটা ভাল মত চেপে ধরেছে।
চোখ বন্ধ অবস্থায় ফোন হাতে নিলাম। চোখের পাতা একটু খুলে আবছা দেখতে পেলাম
Incoming via teletalk 3g
YM TRAEH
ফোনটা ধরলাম,
- হুম বলো। (আমি)
- কি করছো? (ওপাশ থেকে)
- ঘুমাচ্ছিলাম।
- শরীর খারাপ?
- নাহ রাতে ভালমত ঘুম হয়নি তাই।
- ও আচ্ছা ঘুমাও।
- তুমি কি করছো?
- এইতো আম্মুর সাথে নাস্তা বানাচ্ছি।
- ও আচ্ছা।
- বিকালে কি আসবে?
- হুম অবশ্যই আসবো।
- আচ্ছা ঠিক আছে এখন রাখি। তুমি ঘুমাও।
- ঠিক আছে রাখো।
..
আপনারা হয়তো ভাবছেন এতক্ষন কার সাথে কথা বললাম আর ফোনে এমন অদ্ভুত নাম কেন সেভ করা।
ফোনের সেভ করা নামটা বুঝতে হলে শব্দের অক্ষরগুলো উল্টো করে পড়তে হবে। আর যার সাথে কথা হলো সে সত্যিই আমার হৃদয়। ওর নাম তাহমনিা।
..
বিকেলে আমি তৈরি হয়ে তাহমিনাকে ফোন দিলাম।
- হ্যালো কোথায় তুমি? (আমি)
- আমি তো এসে বসে আছি। (তাহমিনা)
- কি বলো?
- হুম সত্যি।
- আচ্ছা থাকো আমি আসছি।
..
এই মেয়েটাকে আমি এখনো চিনতে পারলাম না। ওর স্বভাবটা চাপা, মনের কথাগুলো খুব সহজে প্রকাশ করেনা। মন খারাপ থাকলেও ও সহজে আমাকে জানায় না। আমি জোর করে ওর কাছ থেকে কথা আদায় করতে হয়।
- কি ব্যাপার তুমি এত তাড়াতাড়ি এসে বসে আছো কেন? (আমি)
- এমনি। ঘরে বসে থাকতে ভাল লাগছিল না। তাই চলে এলাম।
- ও আচ্ছা। তোমার চোখটা একটু বন্ধ করো।
- কেন বন্ধ করবো?
- আহা করো। সারপ্রাইজ আছে তোমার জন্য।
- কি সারপ্রাইজ?
- আগে বলে দিলে কি আর সেটা সারপ্রাইজ থাকে?
- ও তাইতো। আচ্ছা এই নাও চোখ বন্ধ করলাম।
..
তাহমিনা চোখ বন্ধ করে আছে। আমি আমার পকেট থেকে আংটিটা বের করলাম। আজ আমাদের ভালবাসার বয়স তিন বছর পূর্ন হলো। আমাদের সম্পর্ক হওয়ার পর থেকে তাহমিনাকে কখনো কিছু দেয়া হয়নি। তাই এই উপলক্ষে আজকে তাহমিনাকে আংটিটা দিব।
আসলে কোন কিছু দিলেও ও সেটা সহজে রাখে না। শুধু বিশেষ বিশেষ দিনে ওকে একটা করে গোলাপ দিতাম। তাতেই ও অনেকটা খুশি হয়।
আমি আংটিটা অতি সন্তর্পণে ওর আঙ্গুলে পরিয়ে দিলাম।
- এটা কি?
- দেখতেই তো পাচ্ছো।
- এটা কোথায় পেলে?
- আম্মু তার হবু ছেলের বউয়ের জন্য এটা উঠিয়ে রেখেছিল। আজ আমি নিয়ে এলাম। কারন আমার হবু বউযে তুমিই।
- যাহ শয়তান।
..
তাহমিনা আংটিটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছে। আংটিটা স্বর্নের না, রুপার। আমার দাদি নাকি আমার আম্মুকে এই আংটিটা দিয়েছিল। আর আজ আমি তাহমিনাকে দিলাম। ওর নিশ্চয়ই পছন্দ হয়েছে।
হঠাৎ তাহমিনা ভ্রু কুঁচকে ফেললো। ওর ভ্রু কুঁচকানো দেখে আমার বুকটা ধড়াস করে লাফিয়ে উঠলো।
- এই তোমার হাতে কি হয়েছে?
- কই কিছু হয়নিতো।
- মিথ্যা বলবে না। বলো কি হয়েছে?
- আরে বললাম তো কিছু হয়নি।
- তাহলে তুমি ফুল শার্ট পরে এসেছো কেন? তুমি তো কখনই ফুল শার্ট পরো না। আজ কি উপলক্ষে পরলে?
- না এমনি পরলাম আরকি।
- দেখি তোমার শার্টের হাতা উঠাও।
- কেন?
- উঠাতে বলছি উঠাও।
..
যে ভয়টা পাচ্ছিলাম সেটাই হলো। যতই কোন অঘটন লুকাতে চেষ্টা করি কিন্তু পারিনা। তাহমিনার কাছে ধরা খেতেই হয়। অগত্য শার্টের হাতা উঠালাম। মূহুর্তেই ওর হাসি হাসি মুখটা কালো হয়ে গেল।
আমার বাম হাতের চওড়া অংশে প্রায় চার ইঞ্চি জায়গা কেটে গিয়েছিল গতকাল। বেশ কয়েকটা সেলাই পড়েছে। চেয়েছিলাম লুকাতে, কিন্তু ব্যর্থ।
..
- কিভাবে কাটলো?
- কাল বাইক চালাতে গিয়ে ছোট্ট একটা এক্সিডেন্ট হয়ে গিয়েছিল।
- আমাকে জানাওনি কেন?
- ভাবলাম তুমি শুধু শুধু টেনশন করবে তাই......।
..
তাহমিনার চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে। এ কারনেই ওকে আমার কোন অসুস্থতার কথা জানাইনা। ও আমায় বড্ড বেশিই ভালবাসে।
- কি ব্যাপার কাঁদছো কেন?
- তুমি আমায় ভালবাসো না, তাইনা?
- এটা কেমন কথা বললে?
- ঠিকই তো বলেছি। যদি ভালবাসতে তাহলে এই কথাটা লুকাতে না।
- বললাম তো তুমি টেনশন করবে বলেই তো তোমাকে জানাইনি।
- যদি তোমার কিছু হয়ে যেত? তাহলে আমি কিভাবে বাঁচতাম? আমিও তখন মরে যেতাম।
- ওই চুপ, একথা বলবা না।
- ঔষুধ খেয়েছো?
- হুম খেয়েছিলাম দুপুরে।
- একটা কথা বলি?
- হুম বলো?
- তোমার কাঁধে মাথা রাখি?
- এটার জন্য অনুমতি লাগে?
..
তাহমিনা আমার কাঁধে মাথা রেখে বসে আছে। আর আমি? আমি ওর চোখের দিকে তাকিয়ে আছি। আমি ওর চোখে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি আমার জন্য ওর ভালবাসার গভীরতা।
এভাবেই বেঁচে থাকুক আমার ভালবাসা।
..
লেখকঃ আরমান হোসেন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
Tamima
Guest ৬ বছর, ২ মাস পুর্বেআনোয়ার হোসেন
User ৬ বছর, ২ মাস পুর্বে