বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

চোখে নেই জল (পর্ব-১৭)

"উপন্যাস" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Sayemus Suhan (০ পয়েন্ট)

X ভোর ৫.৩০ মিনিট। নাইমা অযু করে নামাজ পড়ার জন্য তৈরি হয়। বাসররাতের তিক্ত অভিজ্ঞায় সারারাত ঘুমাতে পারেনি, নামাজের মধ্যে একটু শান্তি খুজছে। দুনিয়ার সবচেয়ে বড় শান্তি নামাজের মধ্যে পাওয়া যায়, একমাত্র নামাজিরাই সেটা উপলব্ধি করতে পারেন। নামাজ পড়ার পর নাইমার মনে সত্যিই অনেক শান্তি চলে আসল। সায়েম গভীর নিদ্রারত অবস্থায় আছে। নাইমা কিছুক্ষণ স্বামীর দিকে তাকিয়ে থেকে তারপর রান্নাঘরে চলে গেল। চা বানিয়ে নিজের বাবার জন্য এককাপ আর শ্বশুরে জন্য এককাপ নিয়ে তাদের রুমে দিকে যাচ্ছে, দেখতে পায় উনারা নামাজ পড়ে নিচের সোফাতে বসে গল্প করছেন। নাইমা একদম স্বাভাবিকভাবে তাদের সামনে গেল, মুখে হাসি লেগেই আছে! তাকে দেখলে কেউ বুঝতেই পারবেনা বাসররাতের মত একটা রাতে সীমাহীন কষ্টের পাহাড় ছিল তারবুকে। বাবা আর শ্বশুরকে সালাম করে তাদেরকে চায়ের কাপ দিল। মেয়েকে এতো সকালে উঠতে দেখে বাবা এবং শ্বশুর দুজনই খুবই অবাক হয়েছেন। কিন্তু মিষ্টভাষী নাইমার হাসির কাছে তারা পরাজিত। নাইমা চা দিয়ে চলে যায়। চা খাওয়ার ইচ্ছা হলো নাইমার। এককাপ চা বানিয়ে খাওয়ার জন্য মনস্থ হলো। হঠাৎ মনে হলো, মা কখনও তার বাবাকে রেখে আগে কিছুই খেতেন না তার বাবাকে খাওয়াতেন তারপর নিজে খেতেন। নাইমা এই বিষয়টা একদিন মাকে জিজ্ঞাসা করেছিল, তিনি বলেছিলেন, স্বামীকে না খাইয়ে আগে নিজে খেলে নাকি সংসারে অমঙ্গল হয়! কখনও সুখি হওয়া যায়না। নাইমা আর চা খেল না। সায়েমের জন্য এককাপ চা বানিয়ে নিয়ে গেলো। সায়েম এখনও ঘুমে কাতর। ডাক দিতে খুব ভয় পাচ্ছিল নাইমা। তারপরও ভয়ে ভয়ে ডাক দিলো সায়েমকে। দুই-তিনবার ডাকার পর সায়েম জেগে ওঠে। নাইমা সালাম করে সায়েমের হাতে চায়ের কাপ দিয়ে বলল, চা-টা খেয়ে নেন, এই শীতের সকালে শরীরে অনেক সজীবতা ফিরে পাবেন। সায়েম কিছু না বলে চা খেতে লাগলো। দাঁড়িয়ে নাইমা সেই দৃশ্যটা দেখছে, খুব ভালো লাগছে তার। নাইমাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে সায়েম বসতে বলল, নাইমা পাশের সোফাতে বসল। সায়েম চা খাওয়া শেষ করে নাইমার হাতে কাপটা দিল, একটা বারও জিজ্ঞাসা করেনি নাইমা কিছু খেয়েছে কিনা? খুব কষ্ট পেল নাইমা। কাপ নিয়ে চলে যাচ্ছে রান্না ঘরে, সায়েম ডাক দিলে নাইমা ফিরে তাকায়। কিছু চকলেট বের করে নাইমার হাতে দিল আর বলল, এগুলো তোমার জন্য। কাল এনেছিলাম কিন্তু রাতে তোমাকে দিতে ভুলে যাই। নাইমা আবেগপ্রবণ হয়ে চোখের পানি ছেড়ে দেয়, সায়েমের সামনে থেকে চলে যায়। ছাঁদে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। সায়েম রুমে বসা। ইফাত জেগে ওঠে সায়েমের রুমে দৌড়ে আসলো। বাবার কাছে এসে মা মা করতে লাগলো। সায়েম কিছুটা বিরক্ত হয়। কিন্তু ছোট বাচ্চা, কিছুই বলার নেই। ইফাতকে কোলে নিয়ে সায়েম নাইমাকে খুজতে লাগল। কোনো রুমেই নাইমাকে না পেয়ে ছাদে চলে যায়। নাইমা ছাদে হাটছে। ইফাত বাবার কোল থেকে দৌড়ে নাইমার কাছে চলে যায়। নাইমা ইফাতকে কোলে তুলে নিলো। ছেলেটা কাল রাতেও খায়নি, সকালবেলাও কেউ হয়তো কিছু দেয়নি তাই নাইমা ইফাতকে নিয়ে নিচে নেমে আসলো। সায়েম এখনও দাঁড়িয়ে আছে ছাদে। সকালের আবহাওয়া অনেক ভালো থাকে, বড় বড় করে নিঃশ্বাস নিচ্ছে সায়েম। নাইমা রুমের এসে ইফাতকে খাওয়াতে লাগলো। লক্ষি ছেলে ইফাত মায়ের কোলে বসে খাবার খাচ্ছে। দেখে কে বলবে, উনি তার সৎ মা। ইফাতকে খাওয়ানো শেষ করে নাইমা রান্নাবান্না করতে চলে গেল। ইফাতকে বলল দাদার সাথে খেলা করতে, ইফাত দাদার কাছে চলে যায়। সে এসে সকলের জন্য রান্না করতে লাগলো। কাল বিয়ে করে আজই পুরোটাই সংসারী হয়ে গেছে মেয়েটি। অথচ ৩ বছর আগেও মা মুখে তুলে খাইয়ে না দিলে মুখে কিছু দিতোনা। রান্না শেষ করতে এক ঘন্টার মত লেগে গেল। শীতের দিন হলেও আগুনের তাপে নাইমা পুরোটা ঘেমে গেছে। হাত মুখ ধুয়ে এসে সবাইকে খাওয়ার জন্য টেবিলে আসতে বলল। সায়েমকে খুজতে ছাঁদে গেল। ছাঁদে সায়েমকে পেল না। ভাবল, হয়তো রুমে চলে গেছে তাই সে রুমে যায়। সায়েম রুমেও নাই! তাহলে কোথায়? নাইমা কাউকে কিছু না বলে সবাইকে খাবার বেড়ে দিতে লাগলো। শ্বশুর নাইমাকে সায়েমের কথা জিজ্ঞাসা করলেন, নাইমা বলল, বাসার কোথাও খুজে পায়নি! কোথায় গেছে নাইমাকে সেটা বলেও যায়নি। নাম্বারও নেই, যে সায়েমকে ফোন দিবে সে। খালেক সাহেব ফোন দিলেন সায়েমকে। ফোন ধরে সায়েম বলল, একটা কাজে বাজারে এসেছে খালেক সাহেব সায়েমকে ধমক দিয়ে বললেন, তাড়াতাড়ী বাসায় আসতে। সায়েম চলে আসে বাসায়। ইতিমধ্যেই যারা খেতে বসেছিলেন তাদের খাওয়া শেষ শুধু নাইমা আর সায়েম বাকি। সায়েম প্রবেশ করতেই খালেক সাহেব বকা শুরু করলেন সায়েমকে, মেয়েটি তোর জন্য এতোক্ষণ থেকে না খেয়ে বসে আছে, সারাবাসায় তোকে খুজে পায়নি। তুমি কি ভুলে গেছ, সে এখন তোমার স্ত্রী। কোথাও গেলে স্বামীর কর্তব্য স্ত্রীকে বলে যাওয়া, সেসব কি তুমি জানো না? নাকি আমাকে শিখিয়ে দিতে হবে? সায়েম বাবার কথার কোনো প্রতিউত্তর না করে 'সরি' বলে রুমে চলে যায়। নাইমা সায়েমকে রুমে খাবার নিয়ে দিতে লাগল। সায়েম নাইমাকে বলল, তুমি খাওনি কেনো? নাইমা : আপনি এখনও খান নি, আমি কিভাবে খাবো? সায়েম : আমার জন্য কেনো তুমি নিজেকে কষ্ট দিবে? আমি কখন খাবো নাকি খাবোনা তার কি কোনো ঠিক আছে? এরপর থেকে তুমি ঠিকমতো খেয়ে নিবে। নাইমা : স্বামীকে রেখে স্ত্রীর আগে খাওয়া উচিত নয়। আপনি আমার স্বামী, যদি আপনি না খান তাহলে আমি খাবো কেমনে? সায়েম একদৃষ্টিতে নাইমার দিকে চেয়ে থাকলো। মেয়েটার সত্যি অনেক লক্ষী। নিজের অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সে নাইমাকে কষ্ট দিচ্ছে। কি করবে সে? অর্পির জায়গায় কোনোভাবেই নাইমাকে স্থান দিতে পারছেনা। নাইমা ভাত বেড়ে সায়েমের প্লেটে দিল। সায়েম নাইমাকে তার সাথে খেতে বলল। নাইমা পরে খাবে বললে সায়েম মানলো না। নাইমা স্বামীর সাথে খেতে বসে পড়লো। এভাবেই প্রতিদিন চলছিল নাইমা আর সায়েমের সংসার জীবন। বিয়ের পনেরো দিন চলে গেল। এখনও নাইমা স্বামীকে নিজের করে একমিনিটের জন্য পায়নি। বিধাতার দেয়া কপালের লিখন মেনে সংসার করতে লাগলো। বিয়ের ১৬ তম দিন। রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ করে সায়েম আর নাইমা ঘুমাতে যায়। প্রতিদিনের মতো আজও দুজন দুইদিকে ফিরে ঘুমাতে লাগলো। দুজনই অল্প সময়ের মধ্যে ঘুমের গভীরে চলে যায়। গভীর রাত। সায়েম স্বপ্নে বিভোর।পরীর মত সেজে অর্পি এসে সামনে দাড়ালো সায়েমের! অাজ অর্পিকে একটু একটু রাগি রাগি লাগছে।।। (চলবে)


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৯১৫ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • আভা(the queen of beauty)
    User ৫ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    " very good "

  • জানুয়ারি
    Guest ৫ বছর, ৬ মাস পুর্বে
    Good