বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

চোখে নেই জল (পর্ব-২)

"উপন্যাস" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Sayemus Suhan (০ পয়েন্ট)

X নিশ্চুপ হয়ে জুলির পাশে বসে রইল নাইমা। এতো কাছে পেয়ে ছেলেটির সাথে কথা বলতে পারলোনা, নিজেকে ব্যর্থ বলতেই হয়। জুলির কেনাকাটা শেষ হলে দুজনই মার্কেট থেকে বের হয়ে বাসায় দিকে চলল। বিকাল বেলা বারান্দায় না বসে সোজা চলে আসল পার্কে। অচেনা ছেলেটি যে যায়গায় ফুল রাখে তার একটু দুরে বসে আছে। আজকে যাই হোক ছেলেটির সাথে কথা বলতে হবে । যথাসময় বিকাল ৪টায় ছেলেটি পার্কে চলে আসল। আজ আর বাচ্চাটা সাথে দেখছেনা। বটগাছের নিচে ঐবেঞ্চটিতে ফুলটা রেখে দাঁড়িয়ে থেকে টপটপ করে চোখের পানি ছাড়ছে। নাইমা অদ্ভুত এই দৃশ্যটা খুব কাছ থেকেই দেখতে পাচ্ছে। ৫ মিনিট পর ছেলেটা চোখের পানি টিস্যু দিয়ে মুছে চলে যেতে লাগল। নাইমা ভয়ার্ত স্বরে, এই যে ভাইয়া বলে ডাক দিল। নাইমা বুঝতে পারল ছেলেটি শুনেছে! পিছনের দিকে না তাকিয়ে হাঁটতে লাগল। নাইমা দৌড়ে গিয়ে ছেলেটির সামনে দাঁড়িয়ে বলল, ভাইয়া প্লিজ একমিনিট দাঁড়ান। ছেলেটির দাঁড়িয়ে! তবে তারদিকে তাকিয়ে নয়, অন্যদিকে তাঁকিয়ে আছে! নাইমা ভীতু স্বরে ছেলেটিকে নাম জিজ্ঞাস করল। কোনো জবাব আসলো না! চলে গেল ছেলেটি। নাইমা পেছন পেছন পার্কের গেট পর্যন্ত আসলো । কালকে যে গাড়িটিতে করে ছেলেটি আর আর বাচ্চাটি যেতে দেখেছিল আজকে রাস্তার পাশে ঐ গাড়িটা দাড় করানো! ছেলেটি গাড়ির কাছে গিয়ে পেছনের সিট থেকে কিউট বাচ্চাটিকে বের করে সামনে তার সিটের কাছে নিয়ে আসল। তারমানে বাচ্চাটি ভিতরেই ছিল। গাড়ী চলে গেল, নাইমা এখনও দাঁড়িয়ে আছে । ছেলেটি কথা বলল না কেন? সে কি বোবা! নাহ, বোবাও তো নয়। ছোট বাচ্চাটির সাথে তো কথা বলল দেখলাম। তাহলে কথা বলেনা কেন? ছোট বাচ্চাটাকে সবসময় কাছে রাখে কিন্তু এখানে নিয়ে আসেনা! এটাই বা কেনো করে? রহস্যটা আরো বেশি গভীরে চলে গেল। নাইমা আগের চেয়ে ৩ গুন বেশি চিন্তিত হয়ে পড়লো। হেঁটে হেঁটে হোস্টেলের দিকে যাচ্ছে, হঠাৎ তার মাথায় একটা ধারণা চলে আসলো। ছেলেটি তো প্রতিদিন এই পার্কে আসে, কালও আসবে এটাই বলা যায়। যদি আমি ওকে ফলো করে ওর বাসা পর্যন্ত চলে যাই তাহলে হয়তো আমাকে এতো চিন্তা করে জানতে হবে না । সহজেই জেনে যাবো বিষয়টা। ধারণাটা বেশ ভালো লাগল নাইমার। ফুরফুরে মেজাজে হোস্টেলে প্রবেশ করল। পড়ালেখা শেষ করে জুলির সাথে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে নাইমা ঘুমিয়ে পড়ল। সকালে উঠে যথারীতি ভার্সিটিতে চলে গেল। ছক কষছে নাইমা! ছেলেটির সাথে তো গাড়ী থাকে, তাকে ফলো করতেও তো গাড়ী লাগবে! আগে গাড়ীর খোজ করতে হবে। কামিলের তো গাড়ী আছে! নাইমার একমাত্র ছেলে বন্ধু কামিল। নাইমা ফোন করেকামিলকে ভার্সিটিতে আসতে বলল। কামিল ভার্সিটিতে আসল। নাইমা সবকিছু বুঝিয়ে বললে কামিল হ্যাঁবোধক উত্তর দেয়। যাক গাড়ীর সমস্যাটাও মিটে গেল। এখন নাইমার গোয়েন্দাগিরি করার পালা। ভার্সিটি থেকে বিকাল ২টার সময় বের হয়ে নাইমা আর কামিল একটা কফিহাউজে ডুকে কিছুক্ষণ আড্ডা দিল। ৪টা বাজতে এখনও অনেক দেরি। প্রায় ৪৫ মিনিটের মত সময়! এতোক্ষণ কিভাবে অপেক্ষা করবে। নাইমা কামিলকে নিয়ে পার্কে প্রবেশ করল। ১০টাকার বাদাম কিনে এনে দুজনই মজা করে খাচ্ছে। খুনসুটির মাঝে কখন চারটা বাজছে, সেটার কোনো খেয়াল তাদের কাছে নেই। নাইমার চোখ হঠাৎ বটগাছের নিচে ঐ বেঞ্চটির দিকে পড়লে সে দেখতে পেল ছেলেটি দাঁড়িয়ে আছে। তড়িগড়ি করে কামিলকে নিয়ে ওঠে পড়ল। তাড়াতাড়ী পার্ক থেকে বের হয়ে গিয়ে গাড়ীতে বসে আছে। বিষণ্ন অচেনা ছেলেটা গাড়ীতে ওঠে গাড়ী ছেড়ে দিল। সেই গাড়ীটি অনুস্বরণ করে কামিল নাইমার কথা মত গাড়ী চালাচ্ছে। কিছুদুর যাওয়ার পর একটা গলির দিকে গাড়ীটি মোড় নিল। একটু ভিতরে যেতেই একটা বাসার মধ্যে প্রবেশ করল। নাইমা কামিলকে ঐ বাসার সামনে গাড়ী থামাতে বলল। গাড়ী থেকে নাইমা নেমে দাঁড়িয়ে আছে। অনেক বড় প্রাসাদের মত একটা বাসা! মনে হচ্ছে কোনো রাজার প্রাসাধ! গেটের পাশে বোর্ডে লেখা "এডভোকেট সায়েম আব্দুলাহ ভবন"। নাইমা পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দারোয়ানের কাছে জিজ্ঞাসা করল, এইমাত্র যিনি বাসায় প্রবেশ করলেন, তিনি কে? দারোয়ান কথা বলে না! এই কোন জায়গা আছে নাইমা! কেউ দেখি কথা বলেনা। দারোয়ানকে অনেক অনুরোধ করার পর দারোয়ান বলল, উনি আমাদের এডভোকেট স্যার, নাম সায়েম। নাইমা আবার জানতে চাইল যে সায়েম সাহেবের সাথে যে বাচ্চাটি সে কে? দারোয়ান কিছু বলেনা। অনেক অনুরোধ করল দারোয়ানকে, কিন্তু কিছু বের করতে পারলোনা। দারোয়ান স্বল্প স্বরে বলল, গেটে সিসি ক্যামেরা লাগানো। স্যার যদি দেখেন তার সম্পর্কে কিছু বলছি তাহলে চাকরিটা চলে যাবে! নাইমা হতাশ হয়ে চলে আসলো । বাসা যেহেতু চিনতে পারছে, গোয়েন্দাগিরি ঠিকই করে ছাড়বে। রাতে বারান্দায় বসে নতুন করে চিন্তা করতে লাগল। তার মাথা একটা আইডিয়া আসল! এই রহস্য ফাঁস করতে দারোয়ানই হবে তার প্রথম হাতিয়ার! আয়ত্বে আনতে হবে দারোয়ানকে। কাল কলেজে না গিয়ে অফিসের সময়ে একবার ওই বাসাতে গেলেই হয়। চায়ে চুমুক মেরে রহস্যময় মুচকি একটা হাসি দিয়ে নাইমা রুমের ভেতরে এসে বাতি নিভিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। (চলবে)


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৭০৯ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now