বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
বন্ধু ছাড়া life impossible
.
লেখা: S.M Mithun Roy
.
নিলয়,নাহিদ,তাহসিন ওরা তিনজন খুব ভালো বন্ধু। এদের মধ্যে বোঝা পোড়া অনেক ভালো। কিন্তু তাহসিন একটু অন্য রকমের সবসময় তাকে অন্য মনস্ক দেখা যায়। প্রায়ই তাকে লুকিয়ে কাঁদতে দেখা যায়। কারন টা ও কাউকেই বলে না। নিলয়,নাহিদ ওরা জিজ্ঞাসা করলেও কিছু বলে না।সবসময় এড়িয়ে যায়। নিলয়,নাহিদের সাথে পরিচয় হওয়ার আগে থেকেই তাহসিন ড্রাগ নিত,তবে অল্প।
একদিন রেল ষ্টেশনের কাছেই নিলয়,নাহিদ তাহসিনের ড্রাগ নেওয়া অবস্থায় দেখে ফেললো।
.
তারপর.....
.
নিলয়: তাহসিন তুই এখানে কি করছিস?
তাহসিন:......(চুপ)
নাহিদ: কিরে বল? তুই এখানে বসে ড্রাগ নিচ্ছিস কেন? কি হয়েছে তোর?
(রেগে গিয়ে গাঁ ধাক্কা দিয়ে)
.
ততক্ষণে তাহসিন নিজেকে সামলানোর মত অবস্থায় নেই।
.
নিলয়: এই নাহিদ চল ওকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসি।
নাহিদ: আচ্ছা,চল চল...
(অতঃপর একটা রিকশা ডেকে দুজন তাহসিনকে বাসায় পৌছে দিয়ে আসলো)
.
আসার পথে...
.
নিলয়: আচ্ছা নাহিদ তাহসিন তো আমাদেরই বন্ধু। ওকে কি আমরা সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে পারি না?
নাহিদ: তুই একদম ঠিক বলেছিস। আমিও চাই তাহসিন সঠিক পথে ফিরে আসুক।
নিলয়: তাহলে আজকের পর থেকে ওকে আর আমরা ড্রাগ নিতে দেব না।
নাহিদ: হুমম। যেভাবেই হোক ওকে সুস্থ করে তুলবো।
নিলয়: তার আগে জানতে হবে ওর এত কষ্ট কিসের যার জন্য ও এত খারাপ পথে পা বাড়িয়েছে।
নাহিদ: হুমম। কালকেই ওর থেকে জানবো,জোর করে হলেও জানবো।
নিলয়: ঠিক আছে, আজকের মত বিদায়।
(দুজনে বাড়িতে ফিরে গেল)
.
পরেরদিন বিকালে...
নিলয় তাহসিনকে ফোন দিচ্ছে, অনেকক্ষন রিং বাজার পর ফোন ধরলো।
নিলয়: কিরে ফোন রিসিভ করতে এতক্ষন লাগে?
তাহসিন: সরি রে,ব্যাস্ত ছিলাম বল কি বলবি?
নিলয়: তুই এখনি রেল ষ্টেশনের পাশে যেখানে আড্ডা দেই সেখানে চলে আয়।
তাহসিন: ঠিক আছে, আসতেছি।
ইতিমধ্যে তাহসিন চলে এলো... নাহিদ,নিলয় আগে থেকেই প্রস্তুত আজ ওর থেকে সব জানবে বলে।
প্রথমে নাহিদ জিজ্ঞাসা করলো..
নাহিদ: আচ্ছা তুই যে নিজেকে শেষ করার চেষ্টা করছিস এর কারন কি?
তাহসিন:.....(চুপ)
নিলয়: কিরে বল? আজ তোকে সব বলতেই হবে।
তাহসিন: দোস্ত প্লিজ বাদ দে।
নাহিদ: না, আজ তোকেই বলতেই হবে।(রেগে গিয়ে)
তাহসিন: কেন শুধু জোর করছিস?
নিলয়: দেখ তাহসিন সবসময় আমাদের এড়িয়ে চলিস, এমনকি তোর পরিবার সম্পর্কেও কিছু বলিস নি।কিন্তু আজ তোকে বলতেই হবে।
(তাহসিন আর কোনো উপায় না পেয়ে বলতে রাজি হয়ে গেল)
তাহসিন: ঠিক আছে,তাহলে শোন...
আমি যখন খুব ছোট্ট তখন এই শহরে কিভাবে আসি তা সঠিক জানি না।
হয়তো কেউ নিয়ে এসে ছিল কিংবা এটাই আমার জন্ম ভুমি। ছোট্ট বেলায় আমার যতটুকু মনে পড়ে একব্যাক্তি আমায় আশ্রয় দিয়ে ছিল কিন্তু সেখানে বেশিদিন থাকতে পারি নি, বাড়ির লোকজন আমায় চোর অপবাদ দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। একমুঠো খাবারের জন্য দরজায় দরজায় ঘুরে বেড়াতাম। কেউ খাবার দিত কেউ দিত না। এভাবেই আস্তে আস্তে বেড়ে উঠতে লাগলাম। তারপর এক বাজে লোকের হাতে পড়ে গেলাম সেখান থেকেই ড্রাগ নেওয়া শুরু, যখন নিজের ভালো বুঝতে শিখলাম নিজেকে সঠিক পথে আনার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু পারি নি।কারন এর মনের মধ্যে একটা যন্ত্রণা কুড়ে খেত। আমার মা-বাবা কে? তারা কোথায়? আমার পরিচয় কি?
এই প্রশ্ন গুলো আমাকে প্রতি মুহুর্তে যন্ত্রণা দেয়।
সেই থেকেই আরো বেশি ড্রাগ নেই।যন্ত্রণা ভুলে থাকার জন্য।
(কথা গুলো বলতে বলতে তাহসিনের চোখের নোনো জল গাল বেয়ে পড়ছে)
.
নিলয় আর নাহিদ ও বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।
তবুও তারা নিজেদের সামলে নিয়ে তাহসিনকে বোঝাতে লাগলো...
.
নিলয়: দোস্ত তুই বাঁচবি আমাদের জন্য আমরা আর তোকে কষ্ট পেতে দেব না।
নাহিদ: দোস্ত আমরা তোকে আর ড্রাগ নিতে দেব না।
নিলয়: আজ থেকে তুই নিজেকে ব্যাস্ত রাখবি,আর সব সময় আমাদের সাথেই সময় দিবি।
নাহিদ : আর পুরনো কথা ভুলেও চিন্তা করবি না। আমাদের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করবি।
তাহসিন: আচ্ছা, ঠিক আছে। তোদের কথাই মানবো। এখন উঠি চল।
.
এরপর থেকে তাহসিনের জীবন পাল্টে যেতে লাগলো। নিলয়, নাহিদ দুজনে তাহসিনকে নিয়ে নামায পড়তে যেত। এর মাঝে ওরা দুজনে মিলে তাহসিনের জন্য একটা কাজের ব্যবস্থা করে দিল।যাতে তাহসিন নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পারে। কাজের ফাঁকে ওরা দুজন তাহসিনকে সময় দিত।
.
ধীরে ধীরে এভাবে নিলয় আর নাহিদের জন্য তাহসিন সঠিক পথে ফিরে আসে।পাচ ওয়াক্ত নামায আদায় করে।
.
প্রবাদ বাক্য: সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে।
তেমনই একটা মানুষের জীবনে যদি ভালো বন্ধুর দেখা পাওয়া যায়। খারাপ ব্যাক্তিও ভালো হয়ে ওঠে।
.
তাহলে বলা যেতেই পারে...
★বন্ধু ছাড়া life impossible★
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
Tanha Khan
User ২ বছর, ৮ মাস পুর্বেARAB AHMED(রঙিন জীবন)
User ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বেDristi Afroz
User ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে