বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
আমার কেন জানি মনে হচ্ছে মেয়েটি আজকেও আসবে । কাল যখন মেয়েটি আমার সাথে দেখা করতে এল ওর আচরনে আমি কাল বেশ অবাকই হয়েছিল । কোন কারন খুজে পাই নি এমন আচরন করার!!
কি দরকার ছিল কাল আমার কাছে আসা আবার কি দরকার ছিল কিছু না বলে চলে যাওয়া !
গতকাল অফিস আওয়ারেই পিয়ন আলিম এসে বলল
-স্যার আপনার সাথে একজন দেখা করতে এসেছে ।
আমি খানিকটা অবাকই হলাম । কারন অফিসের বাইরে সাধারনত আমার কাছে কেউ আসে-টাসে না । আর আমি খুব অসামাজিক টাইপের মানুষ । নিয়মিত যোগাযোগ বলতে ফ্যামিলি আর নিশি । ফ্যামিলি থাকে গ্রামে আর নিশি আসলে পিয়নকে দিয়ে বলাবে না । সরাসরি রুমেই চলে আসবে । তাহলে কে এল?? বললাম
-নিয়ে এসো ।
একটু পরই মেয়েটি রুমে ঢুকল । মেয়েটিকে দেখে আমি বেশ অবাকই হলাম । সেই ব্রাক ব্যাংকের মেয়েটি ।
কিন্তু মেয়েটি এখানে কি করছে ? এর তো এখানে আসার কথা না । অবশ্য ঐদিনের আচরন আমার কাছে বেশ অবাক লেগেছিল । তাই বলে অফিস পর্যন্ত চলে আসবে ভাবি নি । বললাম
-বসুন ।
মেয়েটি খুব জড়সড় হয়ে বসল আমার সামনে । মেয়েটিকে কেমন যেন নার্ভাস লাগছিল । আর চোখ দুটো ছিল খুব অস্বস্থির ।
কিছু যেন বলতে চায় কিন্তু বলতে পারছে না । বললাম
-বলুন আপনার জন্য কি করতে পারি ?
মেয়ে চুপ করে কেবল আমার দিকে তাকিয়েই ছিল । কি যেন খুজছে আমার মধ্যে !! কিছু যেন বলতে চায় কিন্তু বলতে পারছে না ।
তারপর হঠাত্ উঠে পড়ল । কোন মতে বলল
-আমি আজকে যাই ?
-সেকি আপনি কি কারনে এলেন বললেন না ?
মেয়েটি আর কিছু বলার সুযোগ দিলো না । উঠে চলে গেল । আমি কোন কিছুই বুঝলাম না । এম অদ্ভুদ আচরন করার মানে কি ?
মেয়েটিকে আমি প্রথম দেখি ব্রাক ব্যাংকেই । ওখানেই ক্লাইন্ট সার্ভিসে মেয়েটা চাকরি করে বোধহয় । ঐ দিনতো ওখানেই দেখেছিলাম ।
আসলে আমার অফিসের পাশে যে ব্রাক ব্যাংকটা আছে আমি ওখানে গেছিলাম টাকা তুলতে ।
লাইনে দাড়িয়ে ছিলাম হঠাত্ কেমন জানি অস্বস্থি শুরু হল । মনে হল কেউ যেন আমার দিকে তাকিয়ে আছে । এদিক ওদিক তাকিয়ে বের করে ফেললাম ।
আমার সাথে চোখাচোখি হতেই মেয়ে চোখ সরিয়ে নিল ।
কিন্তু আবার তাকাল । আমি তাকিয়েই ছিলাম । আবারও চোখাচোখি হল ।
দেখলাম সামনে টাকা তোলার জন্য যে লোকটা দাড়িয়ে ছিল মেয়েটা তাকে বেশ খানিকক্ষনই আটকে রাখল । লোকটা বার বার বলছিল একটু তাড়াতাড়ি করার জন্য কিন্তু মেয়েটি কিছু শুনছিল না । আর ক্ষনে ক্ষনে আমার দিকে তাকাচ্ছিল ।
আমার নাম্বর যথন এল তার এক মুহুর্ত আগে লোকটাকে ছাড়ল । সুতরাং আমাকে ঐ মেয়েটার কাউন্টারেই যেতে হল ।
আমার কেন জানি মনে হল মেয়েটি ইচ্ছা করেই মেয়েটিকে আটকে রেখেছিল কেবল মাত্র আমার জন্য । আমি যেন মেয়েটির কাউন্টারে যেতে পারি এই জন্য ।
আমি খানিকটা লক্ষ্য করে দেখলাম মুখটা কেমন জানি অস্থির একটা ভাব ফুটে উঠেছে ।
মেয়েটা যখন আমাকে টাকা গুলো দিল যখনও দেখলাম মেয়েটার হাত কাঁপছে ।
আশ্চার্য মেয়েটার আচরন কেন ?
ক্লাইন্ট সার্ভিসে কাজ করলে কি এমন আচরন করলে চলে নাকি ? চাকরী তো বেশিদিন থাকবে না ।
ব্যাংক থেকে বের হয়ে যখন রিক্সা নিলাম পেছনে তাকিয়ে দেখি মেয়েটা ব্যাংকের গেটে এসে দাড়িয়েছে । তাকিয়ে আছে আমার দিকেই ।
আবারও মেয়েটার সাথে চোখাচোখি হল । মেয়েটা এবার চোখ সরিয়ে নিল না । আমার দিকে তাকিয়েই থাকল ।
মেয়েটাকে কি আমি চিনি নাকি ও আমাকে চেনে ? কিন্তু আমার তো চেহারাটা পরিচিত মনে হল না কিছুতেই ।
তাহলে ?
আমার রিক্সা ততক্ষনে ছেড়ে দিয়েছে । মেয়েটার চেহারায় কেমন একটা অস্বির ভাব ফুটে উঠল । বিষাদ ময় অস্বিরতা । আমি মোটামুটি সিওর যে আমাকে দেখেই মেয়েটার এমন অস্থিরতা ।
কিন্তু এর পিছনের কারন কিছু মাত্র বুঝতে পারলাম না ।
মেয়েটা এমন কেন করল সেদিন ? বেশ ভাবিয়েছিল সেদিন । এখনও খানিকটা ভাবালো ।
মেয়ে একদম অফিস পর্যন্ত চলে এসেছে । তার মানে কিছু একটা লিংক অবশ্যই আছে ।
কিন্তু কি সেই লিংক ?
ঐদিন ব্যাংকে দেখা হবার আগে আর কখনও আমি তাকে দেখেছি বলে মনে পরে না ।
নিশিকে কি ব্যাপারটা বলা ঠিক হবে ? মনে হয় না । ও এমনিতেই অন্য মেয়েদের সাথে আমার কথা বলা পছন্দ করে না । আর যদি শোনে কোন মেয়ে আমার পেছনে ঘোরাঘুরি করছে তাহলেতো আমার খবরই আছে ।
কিন্তু মনের মধ্যে কৌতুহলটা থেকেই যাচ্ছে । মেয়েটার অদ্ভুদ আচরনের কারনটা জানতে ইচ্ছা করছে ।
লাঞ্চ আওয়ারে পিয়ন এসে আবার বলল
-সেদিন কার সেই মেয়েটি আবার দেখা করতে এসেছে ।
আমি মনে মনে খানিকটা প্রস্তুতি নিলাম । আজ কিছুতেই মেয়েটাকে যেতে দেবো না । কারনটা আজকে পেট থেকে বের করবো । তাছাড়া প্রতিদিন এরকম অফিসে এসে হাজির হওয়াটাও খানিকটা অস্বস্থিকর ।
মেয়েটা ওয়েটিং রুমে চুপচাপ বসে ছিল । খানিকটা জড়সড় হয়ে । আজ ইচ্ছে করেও মেয়েটিকে ওয়েটিং রুমে বসতে বলেছি ।
যখন মেয়েটার সামনে গেলাম মেয়েটার মধ্যে চঞ্চল্য একটু যেন বেড়ে গেল । আমি বসতে বসতে বললাম
-আজ কি বলবেন নাকি সেদিনের মত আজও কিছু না বলেই চলে যাবেন ।
আমি একটু হাসলাম । মেয়েটাকে একটু সহজ করার চেষ্টা করলাম ।
তবুও মেয়েটির অস্থিরতা কমলো না । আমি ঠিক ধরতে পারছি না মেয়েটার সমস্যা টা কোথায় ?
আর আমায় সামনে এমন অদ্ভুদ আচরন কেন করছে । খানিক চুপ করে থেকে আমি বললাম
-অবশ্য আপনি চাইলে আজও কিছু না বলে চলে যেতে পারেন । আমি আপনার আবার সামনের দিন আসার জন্য ওয়েট করবো । কারন আমি জানি আপনি যতক্ষন আমাকে কারনটা বলছেন ততক্ষন আপনি শান্তি পাবেন না ।
মেয়েটা আমার দিকে একবার তাকিয়েই আবার মাথা নিচু করে ফেলল । মাথা নিচু করেই বলল
-আমি আপনাকে অনেক ঝামেলায় ফেলেদিয়েছি তাই না ?
-না ঠিক ঝামেলা না । তবে মনে কৌতুহল তো ঠিকই জন্ম দিয়েছেন ।
-না আমি জানি । ঝামেলা খানিকটা তৈরি করেছি । আপনি এখনও নিশিকে বলেন নি আমার কথা তাই না ?
আমি খানিকটা চমকালাম । নিশির কথা এই মেয়েটির জানার কথা না ।
আমাকে খুজে বের করা মানলাম সহজ । আমার ব্যাংক একাউন্ট থেকে সব তথ্যই পাওয়া যাবে । কিন্তু ওখানে নিশ্চই নিশির কথা লেখা নেই । তাহলে এই মেযেটি নিশির কথা কিভাবে জানল ?
আমায় সম্পর্কে খোজ খবর নিয়েছে ?
কিন্তু কেন ?
মেয়েটি আবার বলল
-আমার কথা নিশিকে বলার দরকার নাই কেমন ! ও রাগ করতে পারে ! আর আমিও এখানে আর আসবো না , যদি ...
-যদি ?
-যদি আপনি আমার সাথে অন্য কোথাও দেখা করেন ?
-কিন্তু কেন ? আর আমার সাথে আপনি কেনই বা দেখা করতে চাচ্ছেন ? আপনি কিন্তু কারনটা এখনও ব্যাখ্যা করেন নি ?
এবার মেয়েটি আমার চোখের দিকে সরাসরি তাকাল । বলল
-কারনটা আমি আপনাকে বলবো । আর আপনাকে বলবনা তো কাকে বলবো ? কিন্তু আমি আজকে বলছি না । তবে একটা কথা কেবল আপনাকে বলে রাখি আপনাকে ছাড়া আমার কিছুতেই চলবে না । কিছুতেই না ।
মেয়েটি আর দাড়াল না । যাই বলে উঠে চলে গেল ।
শেষ কথাটার মানে আমি কিছুতেই বুঝলাম না । কিন্তু মেয়েটার কণ্ঠে যে রকম দৃঢ়তা দেখলাম তাতে খানিকটা ভয়ই পেলাম ।
মেয়েটা কি বলতে চাইছে ? আর কেনই বা এরকম একটা কথা বলল ?
আমাকে ছাড়া তার চলবে না মানে কি??
.
ভাই-বোনেরা যদি ভালো লাগে তবে 1+ Star দিয়ো...&...কেমন লাগলো কমেন্ট কইরো... (আর.এম.রকি মাহমুদ)
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
Fahmida
Golpobuzz ৬ বছর, ৮ মাস পুর্বে