বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

প্রথম মৃত মানুষ

"ইসলামিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান আরিফ (০ পয়েন্ট)

X » হাবিল; পৃথিবীর প্রথম মৃত মানুষ হাবিল; পৃথিবীর প্রথম মৃত মানুষ প্রথম মানুষ এবং প্রথম নবী হযরত আদম (আ.) আর প্রথম মানবী হযরত হওয়া (আ.) মানব জাতির আদি পিতা এবং আদি মাতা হলেন হযরত আদম এবং হযরত হাওয়া (আ.) হযরত আদম এবং হাওয়া (আঃ)-এর এক পুত্রের নাম ছিল হাবিল এবং অন্য এক পুত্রের নাম ছিল কাবিল। কাবিল তার সহোদর হাবিলকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছিলেন। আর এ হত্যাকান্ড ছিল পৃথিবীতে আদম সন্তানের মধ্যে প্রথম হত্যাকান্ড আর এ হত্যাকান্ডের শীকার হলেন আদম পুত্র হাবিল। একারণে পৃথিবীর প্রথম মৃত মানুষ হলেন হাবিল এবং আদম সন্তানের মধ্যে প্রথম হত্যাকারী হলেন কাবিল। হাবিল এবং কাবিলের ঘটনা মহান রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনের সূরা মায়িদার ২৭-৩১নং আয়াতে উল্লেখ করেছেন। এছাড়া ও বহু বিশুদ্ধও শক্তিশালী সনদ সম্পন্ন হাদীসে ও এঘটনাটি বর্ণিত হয়েছে। যখন হযরত আদম ও হাওয়া (আ.) পৃথিবীতে আগমন করেন এবং তাদের সন্তান প্রজনন ও বংশ বিস্তার শুরু হয় তখন কেবল ভাই ও বোন ছাড়া আদমের সন্তানদের মধ্যে অন্য কোন লোক ছিলনা। মহান রাব্বুল আলামীন বাস্থব প্রয়োজনে আদম (আ.)-এর শরিঅতে হাওয়া (আ.)-এর এক গর্ভের ছেলে ও অন্য গর্ভের মেয়ের মধ্যখানে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন বৈধ করে দিলেন। কাবিলের সহোদরা একটি বোন ছিল পরমা সুন্দরী এবং হাবিলের সহোদরা একটি বোন ছিল কুশ্রী। আদম (আ.) এর শরিয়তের বিধান অনুসারে কাবিলের সহোদরা সুন্দরী বোনটিকে হাবিল বিবাহ করবে এবং হাবিলের সহোদরা কুশ্রী বোনটিকে কাবিল বিবাহ করবে। কিন্তু কাবিল আদম (আ.) এর শরিয়তের বিধান লঙ্গন করে তার সহোদরা সুন্দরী বোনটিকে বিবাহ করতে চাইল। যে বোনকে নিয়ম অনুসারে হাবিল বিবাহ করতে পারে। হযরত আদম (আ.) তাঁর শরিয়তের বিধান বলবৎ রাখার নিমিত্তে কাবীলের প্রস্থাব প্রত্যাখ্যান করলেন। এতে কাবীল অসন্তুষ্ট হয়ে হাবীলের শত্র“তে পরিণত হল এবং সে সিদ্ধান্ত নিল যে, আমার সহজাত ভগিনীকেই আমার সাথে বিবাহ দিতেই হবে। অতঃপর হযরত আদম (আ.) এ বিষয়টার সুন্দর সমাধানের জন্য হাবিল ও কাবিলকে আল্লাহর সন্তুষ্টির নিমিত্তে কুরবানী পেশ করার পরামর্শ দিলেন। আর বলে দিলেন যে, যার কুরবানী গ্রহণযোগ্য হবে সে সুন্দরী মেয়ের সাথে বিবাহ বন্ধনে অবদ্ধ হবে। হযরত আদম (আ.)-এর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে, সত্যপন্থীর কুরবানীই আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। সে সময়ের কুরবানী গৃহিত হওয়ার নিদর্শন এই ছিল যে, আকাশ থেকে একটি অগ্নিশিখা এসে কুরবানীর বস্তুকে ভস্মিভূত করে উদাও হয়ে যেত। যে কুরবানী অগ্নি ভস্মিভূত করত না, তা কবুল হয়নি বলে ধরে নেয়া হত। হাবিল ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদি পশু পালন করতেন। তিনি একটি উৎকৃষ্ট দুম্বা কুরবানীর জন্য পেশ করলেন। আর কাবিল কৃষি কাজ করতেন বলে তিনি কিছু শস্য, গম ইত্যাদি কুরবানীর জন্য পেশ করলেন। অতঃপর নিয়মানুযায়ী আকাশ থেকে অগ্নিশিখা এসে হাবিলের কুরবানীটি ভস্মিভূত করে দিল। পক্ষান্তরে কাবিলের কুরবানীর বস্তু গুলো যেমন ছিল তেমনই পড়ে থাকল। এতে কাবিলের দুঃখ-ক্ষোভ আর বহুগুণে বেড়ে গেল। সে অন্তর্জ্বালায় জ্বলতে জ্বলতে তার ভাইকে লক্ষ্য করে ঘোষনা দিল, ‘আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করব’। হাবীল তখন ক্রোধের জবাবে ক্রোধ প্রদর্শন না করে অত্যন্ত ভদ্র ও মার্জিত ভাষায় বললেন, ‘যদি তুমি আমাকে হত্যা করার জন্য আমার দিকে হস্ত প্রসাারিত কর, তাহলে আমি তোমাকে হত্যা করার জন্য তুমার দিকে হস্ত প্রসারিত কবর না। কারণ আমি বিশ্ব জগতের পালন কর্তা আল্লাহকে ভয় করি।’ এসব কথায় কাবিলের অন্তর্জ্বালা নিবৃত হয়নি। অবশেষে সে হাবিলকে হত্যা করেই ভিবিন্ন কিতাবাদীদে উল্লেখ আছে যে, তখন হাবিল ও কাবিলের বয়স ছিল ত্রিশের ভিতরে। হযরত আদম (আ.) পুত্রদ্বয়কে কুরবানী করার নির্দেশ দিয়ে হজ্জে চলে যান। বর্ণিত আছে যে, হযরত আদম (আ.) তার আবাসস্থল ভারত উপমহাদেশ থেকে পায়ে হেটে চল্লিশবার হজ্জব্রত পালন করেছেন। হজ্জে যাওয়ার সময় তিনি তাঁর পরিবার বর্গ ও সন্তানদের দেখাশোনা করার জন্য পাহাড়কে অনুরোধ করেন, কিন্তু পাহাড় এতে অপারগতা প্রকাশ করে। অথচ কাবিল এ দায়িত্ব গ্রহণ করে। হযরত আদম (আ.) হজ্জ থেকে ফিরে এসে যখন এ হত্যাকান্ডের খবর পেলেন তখন তিনি খুবই মর্মাহত হলেন। অতঃপর হাওয়া (আ.)- এর গর্ভে হযরত শীস (আ.) জন্মগ্রহণ করেন। আল্লামা ইমাম সা’লাবী (রহ.) উলেখ করেন, যখন কাবিল ক্রোধের বশবর্তী হয়ে হাবিলকে হত্যা করল, তখন সে জানতনা যে, কিভাবে লাশ দাফন করতে হয়। সে আপন ভাইয়ের লাশ কাপড়ে পেঁচিয়ে চল্লিশ দিন পর্যন্ত নিজের পিঠে নিয়ে এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি করতে থাকে। কারণ এটা ছিল বনী আদমের মধ্যে পৃথিবীতে প্রথম হত্যাকান্ড। আর হাবিল ছিলেন পৃথিবীর প্রথম মৃত মানুষ। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.)  বলেন, এক বছর পর্যন্ত সে এভাবে ঘুরতে থাকে। এদিকে হাবিলের লাশ পঁচে গলে দুর্গন্ধ ছুটে যাচ্ছিল। পশু পাখীরা কাবীলের উপর হামলে পড়ছিল। শবদেহ দাফন করার পদ্ধতি জানা না থকায় কাবিল মহা দুুশ্চিন্তায় পড়ে গেল যে, এ লাশ সে কি করবে। পরিশেষে আল্লাহ তায়ালা একটা কাক প্রেরণ করেন। সে কাকটি অপর একটি কাকের সাথে লড়াই করে তাকে মেরে ফেলে এবং নিজের ঠোঁট দ্বারা যমীনে গর্ত করে তাতে মৃত কাকটি রেখে তাতে মাটি চাপা দেয়। এটা দেখে কাবিল লাশ দাফন করার পদ্ধতি শিখতে পারে এবং সে পদ্ধতিতে আপন ভ্রাতার লাশ দাফন করে। কেউ কেউ বলেন, হাবীলকে হত্যা করার পর কাবীলের দেহ কালো হয়েগিয়েছিল এ কারণে সে লজ্জিত হয়েছিল। কাবীল আপন ভ্রাতাকে হত্যা করার পর পিতার ভয়ে ও পরিবারের অন্যান্য স্বজনদের তিরস্কারের কারণে সে ইয়ামানের দিকে চলে যায়। সেখানে কিছুটা মানিসক ভারসাম্যহীন অবস্থায় বসবাস করতে থাকল। এক সময় শয়তান তাকে এস বলল, আগুন তোমার কুরবানী গ্রহণ করে নাই, আগুন তোমার উপর ক্রোদ্ধ। সুতরাং তুমি আগুনকে সন্তুষ্ট কর। এভাবে সে পৃবিীতে প্রথম আগুনের পূঁজা করা শুরু করেদিল। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, হাবিলকে হত্যার কারণে কাবিল চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আল্লামা কাযী ছানাউলাহ পানিপতী (রহ.) বলেন যে, কাবিল দুনিয়াতে যতদিন ছিল ততদিন চিন্তিতও ঘৃণিত অবস্থায় বেচে ছিল। আর পরকালে তার ঠিকানা জান্নাতের পরিবর্তে জাহান্নামে হবে। ফলে তার দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জাহানই বরবাদ হয়েছে। বর্ণিত আছে যে, এ ঘটনার পর হযরত আদম (আ.) ১০০ বছর জীবিত ছিলেন, কিন্তু এরপর তার মুখে আর কেউ হাসী দেখতে পায়নি। আর হাবীলকে হত্যা করার পর কাবীলের দেহ কালো বর্ণ ধারণ করে অথচ হত্যাকান্ডের পূর্বে সে ছিল সাদা বর্ণের। আর কাবিল কোন আদম সন্তানের প্রথম হত্যাকারী হওয়ার কারণে তার পর পৃথিবীতে যত হত্যাকান্ড সংঘটিত হবে; তার প্রত্যেকটির একটি পাপের অংশ তার ভাগ্যে পৌছতে থাকবে। ওলীউর  by Ebad Bin Siddik


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৪১৫ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • M.H.H.Roni
    Golpobuzz ৪ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    nice and thanks