বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

মাসুদ রানা *মরণখেলা* পর্ব ৩

"উপন্যাস" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান রিয়েন সরকার (০ পয়েন্ট)

X ৮ মাসুল্ডানা-১৪১ ‘না,’ দৃঢ় কণ্ঠে বলল রানা। ‘হয় আমি এভাবেই যাব, না হয় আমাকে গুলি করতে হবেÑকি করবে ঠিক করো।’ করিডর ধরে এগোল ওরা। রানার সামনে ব্যাগ হাতে ডিক, পিছনে রিভলভার হাতে রেক্স আর তার অপর সহকারী। দু’পাশের পর্দা সরিয়ে উঁকি দিল আরোহীরা, ছোট্ট মিছিলটা দেখে বিস্মিত হলো। খালি পায়ে ওল্ডে পিছু পিছু এল এঞ্জিনিয়ার জন ফাইবার। তাকে বলতে শোনা গেল, ‘ওর সম্পর্কে কিছই তো বললেন না! আমি হয়তো সাহায্য করতে পারতাম...’ উঁচু গলায় জবাব দিল রেক্স, সবাই যাতে শুনতে পায়, ‘কুখ্যাত খুনী। ফলসাম জেল থেকে পালিয়েছে।’ ধীর পায়ে হাঁটছে রানা, ঝুলে পড়েছে কাঁধ দুটো। সদ্য ঘুম থেকে উঠেছে, যেন আড়ষ্ট ভাবটা এখনও কাটেনি। ওর দিকে চেয়ে পিছন থেকে মুচকি হাসল রেক্স। ভাবল, লোকের অভ্যেসই এই, তিলকে তাল করা! এই লোক নাকি একাই একশো! হতে পারেÑউলুবনে শেয়াল রাজা! ট্রেনের বাইরে এ যেন আরেক জগৎ। সিঁড়ি বেয়ে রানা প−্যাটফর্মে নামতেই শীত, বৃষ্টি, আর বাতাস একযোগে হামলা চালাল। সেডার ফলস বনভূমির কিনারায় পরিত্যক্ত স্টেশন, বিদ্যুৎ চমকে ওঠায় নির্জন একতলা ভবনটাকে ভূতের আস্তানা বলে মনে হলো। এঞ্জিন রূম ছেড়ে ড্রাইভার নামেনি, তবে কয়েক ফিট দূরে গার্ড আর ড্রাইভারের সহকারীকে দেখা গেল, এঞ্জিন রূম থেকে বেরিয়ে আসা আলোয় স্ফাড়িয়ে ভিজছে। শেডের নিচে পৌঁছুতেই ভিজে গোসল হয়ে গেল রানা। হঠাৎ ওল্ডে সবার গায়ে চোখ মরণখেলা-১ ৯ ধাঁধানো এক ঝলক আলো পড়ল। ‘হল্ট!’ পিছন থেকে নির্দেশ দিল রেক্স। ‘ট্রেন না ছাড়া পর্যš এখানে অপেক্ষা করব আমরা। টিমোথি, ক্যামেরা থেকে ফিল্মটা খুলে নিয়ে এসো!’ এঞ্জিন রূমের দিকে ছুটে গেল টিমোথি, আলোটা ওদিক থেকেই এসেছে। ড্রাইভারের সহকারী আর গার্ডের সাথে চাপা স্বরে কথা বলল সে। কিছু একটা হাত-বদল হলো। টিমোথি ফিরে আসতে শুরু করল, লোক দু’জন উঠে পড়ল ট্রেনে। এক মুহূর্ত পর সচল হলো ট্রেন। সুযোগের অপেক্ষায় আছে রানা, রেক্স সেটা ভাল করেই জানে। রানার কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্বে রয়েছে সে, হাতের রিভলভার বুক বরাবর তাক করা। রানার পিছনে রয়েছে ডিক। টিমোথি ফিরে আসতে চারজনের দলটা প−্যাটফর্মের আরেক দিকে চলে এল। ঠাণ্ডায় হি হি করছে রানা। ওকে কাঁপতে দেখে সকৌতুকে হাসল রেক্স। ট্রেনের শব্দ দূরে মিলিয়ে যেতে সে বলল, ‘দুঃখিত, একটু কষ্ট দিলাম। আমাল্ডে অফিসে তোমার জন্যে গরম কফি আর যাবতীয় আরাম-আয়েশের বল্টস্থা করা আছে, গেলেই দেখতে পাবে!’ ডিকের সাথে তার অর্থপূর্ণ দৃষ্টি বিনিময় রানার নজর এড়াল না। স্টেশন থেকে নেমে বিশ গজের মত এগোল ওরা, বাঁকের মাথায় স্ফাড়িয়ে রয়েছে প্রকাণ্ড গাড়িটা। হেডলাইট জ্বলছে। ড্রাইভারকে নিয়ে সংখ্যায় প্রতিপক্ষ হলো চারজন। সামনের ল্ডজা খুলল ডিক, মাথা নিচু করে ড্রাইভারের পাশে উঠে বসতে যাচ্ছে টিমোথি। পিছনের সীটের ল্ডজা খুলে রানাকে ১০ মাসুল্ডানা-১৪১ পথ ছেড়ে দিয়ে সরে স্ফাড়াল রেক্স। কোন রকম কৌশল না করে গাড়ির ভেতরে ঢুকল রানা। সামনের সীটে মাত্র বসেছে টিমোথি, ড্রাইভার ঘাড় ফিরিয়ে তাকিয়ে আছে রানার দিক। রানা গোবেচারা ভঙ্গিতে বসে আছে দেখে ঘাড় ফিরিয়ে সামনের দিকে তাকাল ড্রাইভার। পিছন থেকে তার মাথার চুল খামচে ধরল রানা। বাঁ কাঁধ, বাঁ হাত, আর মাথা দিয়ে সবেগে ল্ডজার গায়ে পড়ল রানা, ডান হাতে ধরে আছে ড্রাইভারের চুল। ঠিক যেন বিনা শব্দে একটা বোমা বিস্ফোরিত হলো গাড়ির ভেতর। সীটের পিঠ টপকে এল ড্রাইভার, পিছনের সীটের ল্ডজার কাছে মেঝেতে মাথা পড়ল, পা দুটো সামনের সীটের পিঠে আটকে গেছে। ল্ডজার গায়ে পচণ্ড ধাক্কা দিয়েছে রানা, ল্ডজার ধাক্কায় রাস্তার পাশে চিৎ হয়ে পড়েছে রেক্স। ঝুঁকে ল্ডজা বন্ধ করতে যাচ্ছিল সে, নাকটা চিঁড়ে-চ্যাপ্টা হয়ে গেছে। গাড়ি থেকে ছিটকে বেরিয়ে এসে তার বুকের ওপর পড়ল রানা, এক ঝটকায় কেড়ে নিল হাতের রিভলভার। কোল্ট অটোমেটিকটা রেক্সের থেঁতলানো, রক্তাক্ত নাকের ফুটোয় চেপে ধরল রানা। গোটা ব্যাপারটা চোখের পলকে ঘটে গেলেও হাতের ব্যাগ ফেলে দিয়ে এরই মধেশুানার দিকে রিভলভার ধরেছে ডিক। ‘গুলি করো,’ আহ্বান জানাল রানা। ‘তবে রেক্সের আশা ছেড়ে দিয়ে!’ হেডলাইটের আলো ওল্ডে কারও গায়েই সরাসরি পড়ছে না, তবে আলোর আভায় প্রত্যেককেই পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছে রানা। গাড়ির ভেতর গোঙাচ্ছে ড্রাইভার। ল্ডজার ফ্রেমের সাথে মাথা ঠুকে গিয়ে ব্যথা পেয়েছে সে, সামনের জোড়া সীটের মাঝখানে পা মরণখেলা-১ ১১ আটকে যাওয়ায় প্রায় ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। হাঁ করে জানালা দিয়ে রানার দিকে তাকিয়ে আছে টিমোথি, তার হাতে ধরা রিভলভারের ব্যারেল জানালার ফ্রেমে ঠেকে রয়েছে। বাঁ হাত দিয়ে কপাল থেকে ভিজে চুল সরাল রানা, হাতটা কপালে রেখে বৃষ্টির ফোঁটা থেকে চোখ দুটোকে আড়াল করল। ‘দুটোই ছুঁড়ে দাও এদিকে,’ ঝড়ের শোঁ শোঁ আওয়াজকে ছাপিয়ে উঠল ওর গলা। বৃষ্টির পানিতে প্রতি মুহূর্তে ধুয়ে যাচ্ছে রক্ত, ফ্যাকাসে দেখাল দলপতি রেক্সকে। ডিক আর টিমোথি ইতস্তত করছে দেখে খেঁকিয়ে উঠল সে, ‘যা বলছে করো!’ রেক্সের বুকের ওপর বসে তার হাত দুটো জুতোর নিচে চেপে রেখেছে রানা। রেক্সের মাথার কাছে প্রায় এক সাথে পড়ল রিভলভার দুটো, তুলে নিয়ে পকেটে ভরল রানা। ‘এবার ড্রাইভারের রিভলভার। তারপর গাড়ি থেকে বের করো ওকে।’ ‘ড্রাইভার নিরস্ত্র...’ শুরু করল ডিক। ‘আমি বলছি, কোন চালাকি নয়, ডিক!’ রানার নিচে থেকে হুঙ্কার ছাড়ল রেক্স। ড্রাইভারের রিভলভার তার পকেটেই ছিল, সেটা বের করে রানার দিকে ছুঁড়ে দিল টিমোথি। গুলিগুলো বের করে নিয়ে দূর ঝোপের দিকে রিভলভারটা ছুঁড়ে দিল রানা। মাথায় হাত দিয়ে, টলতে টলতে গাড়ি থেকে বেরিয়ে এল ড্রাইভার। ‘প্রত্যেককে আলাদা ভাবে আদেশ করতে হবে নাকি?’ রানার ঝাঝ লক্ষ করে ভিজে বিড়ালের মত টিমোথিও বেরিয়ে এল গাড়ি থেকে। ওল্ডে তিনজনকে গাড়ির পাশে, পাঁচ হাত দূরে ১২ মাসুল্ডানা-১৪১ এক লাইনে স্ফাড় করাল রানা। ধীরে ধীরে, অত্যন্ত সাবধানে রেক্সের বুক থেকে উঠল ও। পিছিয়ে এসে গাড়ির পিছনের ল্ডজাটা বন্ধ করল। ওল্ডে ওপর থেকে চোখ না সরিয়ে সামনের ল্ডজা দিয়ে উঠে বসল গাড়িতে। ‘রানা, শোনো...’ আবেদনের সুরে বলল রেক্স, উঠে বসেছে সে, হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে নাকের রক্ত মুছছে। ‘রানা? আল মাসুদ নই তাহলে?’ জানালা দিয়ে ওল্ডে দিকে তাকিয়ে আছে রানা। কোল্ট অটোমেটিকের ব্যারেল জানালার ফ্রেমে ঠেকে আছে। ‘বুঝতেই পারছ, ইচ্ছে করলে সারারাত এই বৃষ্টির মধ্যে তোমাল্ডেকে আমি স্ফাড় করিয়ে রাখতে পারি। তা যদি না চাও, ঝটপট জবাব দেবে।’ ‘রানা, শোনো, প−ীজ,’ হড়বড় করে বলল রেক্স। ‘আমরা সি. আই. এ-র লোক, পরিচয়-পত্র আছে...।’ কাছেপিঠে কোথাও একটা গাছ ভেঙে পড়ার মড়মড় শব্দ হলো, শেষ দিকের কথাগুলো চাপা পড়ে গেল। ‘লেজে পা পড়তেই জাত বদলে ফেললে? বাপের নাম ভুলে যাওনি তো?’ একটা হাত লম্বা করে দিল রানা। ‘কই, দেখি।’ ওভারকোটের বোতাম খুলে শার্টের পকেট থেকে আইডেনটিটি কার্ড বের করল রেক্স। তার চারপাশে পানির স্রোত বয়ে যাচ্ছে, কাদায় হাত আর হাঁটু রেখে কোন রকমে উঠে স্ফাড়াল সে। রানার লম্বা করা হাতে কার্ডটা দিয়ে পিছিয়ে গেল রেক্স। গাড়ির ভেতরে আলো জ্বেলে কার্ডে একবার চোখ বুলিয়ে হাসল রানা। ‘জালÑতাও একেবারে কাঁচা হাতের কাজ।’ ‘স্বীকার করি, তোমার খেপে যাওয়ার কারণ আছে,’ নরম সুরে, বিনয়ের অবতার সাজল রেক্স। (চলবে...)


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৭৪৭ জন


এ জাতীয় গল্প

→ মাসুদ রানা *মরণখেলা* পর্ব ৫
→ মাসুদ রানা *মরণখেলা* পর্ব ৪
→ মাসুদ রানা-*মরণখেলা* পর্ব ২

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • রিয়েন সরকার
    Author ৭ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    রিটিং দিন প্লিজ

  • Aishya Akter piya
    Guest ৭ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    Valo