বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
সকাল সকাল আম্মুর ডাকে ঘুম ভাঙল আমার। বাবা নাকি মস্ত বড় একটা রুই মাছ নিয়ে হাজির হয়েছেন বাসায়। এটা এখন দেখতে যেতে হবে।
—রাসেল, আয় দেখে যা, তোর বাবা কত বড় মাছ এনেছে।
—যাও, আসছি আমি।
বিছানা থেকে উঠতে যাব, এই মুহূর্তে ইভার ফোন।
—বিকেলে সেন্ট্রাল গার্ডেনের পাশে দেখা করো, তোমার দেয়া আংটিটা নিয়ে যেয়ো।
—কেন?
—বাবা আমার বিয়ে ঠিক করেছে।
—সত্যি?
—হুম্, খুশি হয়েছ তুমি?
—তোমার বিয়ে ঠিক হয়েছে, আর আমি খুশি হব?
—কিছুই করার নাই, রাসেল।
কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলাম না, ফোন রেখে দিল ইভা। আম্মু আবার ডাকতে এলো আমাকে, পেছন পেছন বাবাও।
—কিরে, চল, মাছটা দেখবি।
বাবার জোরাজুরিতে মাছ দেখতে যেতেই হলো। কিন্তু আমার কিছুই ভালো লাগছে না। বাবা মন খারাপ করলেন। আমি নিজের রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দিয়েছি।
ইভা আমাকে ২৯৯টা চিঠি লিখেছে। সব কয়টা নিয়ে বসেছি। রুমে আগুন জ্বালিয়ে আর একটা বেনসন সিগারেট জ্বালিয়ে একটার পর একটা চিঠি পুড়ছি আমি। একটায় ওর হাসিমাখা ছবি দেখে আর পুড়তে পারলাম না। এই মেয়েটিকে আমি গত ৫৯৬ দিন জীবনের সবচেয়ে বেশি ভালোবেসেছি।
আম্মু আমার রুমে এসে এসব পোড়ানো কাগজ দেখে একপ্রকার কান্না শুরু করে দিলেন। আমার হাতে ইভার পোড়া ছবি, স্নিগ্ধ ঠোঁটের আভা এখনো ঝলমল করছে। আম্মু বিষয়টি বুঝে কিছুটা সান্ত্বনা গোছের কথাবার্তা বললেন। কিন্তু মনে মনে ইভার ওপর আমার প্রচণ্ড রাগ হচ্ছিল।
আমি রাগ করে বেশিক্ষণ থাকতে পারি না। রাগটা তখনই ঝাড়তে হয়। ইভাকে ফোন দিলাম, সব রাগ উগরে দেব আজ।
—হ্যাঁ, বলো রাসেল।
—কী করো?
—ও ফোন দিছিল। কথা বললাম।
—ও-টা কে?
—যার সঙ্গে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে।
—ওই ব্যাটা তোমাকে ফোন দেবে কেন?
—এটা কেমন কথা, রাসেল? ও তো ফোন দিতেই পারে।
—না, বলবা বিয়ের পরে যেন ফোন দেয়।
—পারব না। ফোন রাখো।
মনটা আরো খারাপ হয়ে গেল। ভাবলাম, বিকেলে গিয়ে আংটিটা নিয়ে আসব, কোনো কথা বলব না।
বিকেল ৪টা, ইভা লাল-সাদা একটা শাড়ি পরেছে। সাধারণত সে শাড়ি পরে না, আজ কেন পরল বুঝতে পারলাম না।
—শাড়ি পরেছ কেন?
—ও পছন্দ করে।
—ও পছন্দ করে বলে পরেছ। আর আমি যে প্রতিদিন বলি, সেটা তো শোনো না।
—তোমার কথা শুনব কেন?
—ইভা ২৯৯টা চিঠি কি মিথ্যা?
—চিঠি? এগুলো ছিল পাগলামি।
—পাগলামি? তুমি এমন বলতে পারো না।
—রাখো তো তোমার প্যাঁচাল, এই নাও। এখানে তোমার দেওয়া আংটিটা আছে, আর একটা চিঠি। এই আমার ৩০০তম চিঠি।
—আবার চিঠি কেন?
—৩০০ চিঠি পূর্ণ করলাম।
—আচ্ছা আমি যাই, আমার ভালো লাগছে না।
—যাবা? যাও।
বাসায় এসে রুমের দরজা বন্ধ করে ইভার দেওয়া বাক্সটা খুললাম। একগাদা গোলাপের পাপড়িতে ভরা বাক্স। চিঠিটা হাতে নিয়ে পড়তে বসলাম।
“এই যে আমার বোকা বাবু, আমি বললাম আমার বিয়ে ঠিক, আর তুমি সেটাই বিশ্বাস করে নিলে। আমার ভালোবাসা কি এতই সস্তা? আমি ভালোবাসি তোমাকে, বুঝেছ বোকা বাবু?
আমি একটা পরীক্ষা করলাম। আমার বিয়ের কথা শুনে তুমি যদি আমার চিঠিগুলো পুড়িয়ে ফেলো তবে মনে করব তুমি আমাকে ভালোবাসোনি। ভালোবাসার মানুষের স্মৃতি ধরে রাখাটা ভালোবাসার একটা অংশ। আমি আসছি চিঠিগুলো দেখতে। ”
আম্মু আমাকে ডাকছে।
—রাসেল, কী করিস?
—কিছু না।
—ইভা আসছে, হাতে গোলাপ অনেকগুলো।
—যাও, আমি আসছি।
আমি ঘামছি। উঠে দাঁড়িয়ে আবার বসে পড়লাম, হাত-পা কেমন জানি অবশ হয়ে আসছে। ইভা চলে এলো আমার রুমে।
—ইভা, তুমি?
—হ্যাঁ আমি, আমার চিঠিগুলো কই?
হাতে থাকা চিঠিটা ইভার দিকে বাড়িয়ে দিলাম।
—আরো বাকি ২৯৯, নিয়ে আসো।
আমি অবাক বিস্ময়ে ইভার দিকে তাকিয়ে আছি। তবে কি আমি ইভাকে ভালোবাসিনি? ইভা আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। ‘রাসেল, এটা ভালোবাসা নয়, এটা আবেগ। ভালোবাসা হচ্ছে মনের ভেতর পুষে রাখা আকুতি। নীরবে ভালোবাসার মানুষটির সুখ কামনা করা। রাগের বশবর্তী হয়ে তুমি যেটা করলে, সেটা ভালোবাসা হতে পারে না।
আমি কিছুই বলতে পারছি না, মনের ভেতরটা হাহাকার করে উঠল। আমি বুঝতে পারছি, আমি ইভাকে ভালোবাসতে শুরু করেছি, যেটা শুধুই ভালোবাসা। এখানে আবেগের স্থান খুব অল্প। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ইভা চলে যাচ্ছে, এই বুক খালি করে দিয়ে দূরে, অনেক দূরে।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
Fahmida
Golpobuzz ৬ বছর, ৭ মাস পুর্বেrahman hasan
User ৬ বছর, ৭ মাস পুর্বেAdiba
User ৬ বছর, ৭ মাস পুর্বেFahmida
Golpobuzz ৬ বছর, ৭ মাস পুর্বেrahman hasan
User ৬ বছর, ৭ মাস পুর্বেFahmida
Golpobuzz ৬ বছর, ৭ মাস পুর্বেFahmida
Golpobuzz ৬ বছর, ৭ মাস পুর্বে