বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

ছয় বীর শেষ পর্ব

"ছোটদের গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান S M Fahim Ahmed (আম্মুর রাজপুত্র) (০ পয়েন্ট)

X ইংরাজ দূত দখন ক্যালের লোকেদের এই কথা জানাইল, তাহারা এমন শর্তে সন্ধি করিতে রাজী হইল না। তাহারা বলিল, “রাজা এড্‌ওয়ার্ড স্বয়ং একজন বীরপুরুষ, তাঁহাকে বুঝাইয়া বলুন, তিনি এমন অন্যায় দাবী কখনও করিবেন না।” ইংরাজ দলের ধনী এবং সম্ভ্রান্ত লোকেরা তখন তাহাদের পক্ষ লইয়া রাজাকে অনেক বুঝাইলেন। ক্যালের লোকেরা কিরূপ সাহসের সহিত কত কষ্ট সহ্য করিয়া, বীরের মত দুর্গ রক্ষা করিয়াছে, সে সকল কথা তাঁহারা বার বার বলিলেন। এমন শত্রুকে যে সম্মান করা উচিত একথা এক বাক্যে সকলে স্বীকার করিলেন। কিন্তু এড্‌ওয়ার্ডের প্রতিজ্ঞা অটল। অনেক বলা-কওয়ার পর, তিনি একটু নরম হইয়া এই হুকুম দিলেন— “ক্যালের লোকেরা যদি ক্ষমা চায় তবে তাহাদের ছয়জন প্রতিনিধি পাঠাইয়া দিক— তাহারা দুর্গের চাবি লইয়া, খালি পায়ে খালি মাথায় গলায় দড়ি দিয়া আমার কাছে আসুক এবং সকলের হইয়া শাস্তি গ্রহণ করুক। তাহা হইলে আর সকলকে মাপ করিতে পারি, কিন্তু এই ছয়জনের আর রক্ষা নাই।” ইংরাজ দূত আবার দুর্গে গিয়া এই হুকুম জানাইল। দুর্গের লোকেরা রাজার আদেশ জানিবার জন্য ব্যগ্র হইয়া অপেক্ষা করিতেছি— এই হুকুম শুনিয়া তাহারা স্তব্ধ হইয়া গেল। তখন ক্যালের সম্ভ্রান্ত ধনী বৃদ্ধ সেন্ট পিয়ের বলিয়া উঠিলেন, “বন্ধুগণ, আমার জীবন দিয়া যদি তোমাদের বাঁচাইতে পারি, তবে ইহার চাইতে সুখের মৃত্যু আমি চাহি না। আমি ছয়জনের মধ্যে প্রথম প্রতিনিধিরূপে দাঁড়াইলাম।” এই কথায় চারিদিকে ক্রন্দনের রোল উঠিল— অনেকে সেন্ট পিয়েরের পায়ে পড়িয়া কাঁদিতে লাগিল। দেখিতে দেখিতে আরও পাঁচজন লোক অগ্রসর হইয়া, তাঁহার পার্শ্বে আসিয়া দাঁড়াইল এবং বলিল, “আমরাও মৃত্যুদন্ড পর্যন্ত গ্রহণ করিতে প্রস্তুত আছি।” এই দৃশ্য দেখিয়া ইংরাজ দূতের চক্ষে জল আসিল— তিনি বলিলেন, “রাজা এড্‌ওয়ার্ড যাহাতে ইঁহাদের প্রতি সদয় হন, আমি সে জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করিব।” ছয়জন প্রতিনিধিকে রাজার সভায় উপস্থিত করা হইল। তাঁহারা শান্তভাবে রাজার সম্মুখে হাঁটু গাড়িয়া বসিলেন। তারপর সেন্ট পিয়ের ধীরে ধীরে বলিতে লাগিলেন, “আমাদের ‘ক্যালে’বাসী বন্ধুগণ এতদিন অসহ্য দুঃখ কষ্ট সহ্য করিয়া দুর্গ রক্ষা কারিয়াছেন। তাঁহাদের অযোগ্য প্রতিনিধি আমরা, আজ তাঁহাদের জীবনরক্ষার জন্য দুর্গের চাবি আপনার কাছে দিতেছি। এখন আমরা সম্পূর্ণভাবে আপনার ইচ্ছা ও আদেশের অধীনে রহিলাম।” সভাশুদ্ধ লোকে স্তম্ভিত হইয়া তাঁহাদের দিকে চাহিয়া রহিল। ছয়জনের সকলেই বয়সে বৃদ্ধ; বহুদিন অনাহারে তাঁহাদের শরীর শুকাইয়া গিয়াছে, তাহাদের গম্ভীর প্রশান্ত মুখে কষ্টের রেখা পড়িয়াছে, এক একজন এত দুর্বল যে, চলিতে পা কাঁপে, অথচ তাঁহাদের মন এখনও তেজে পরিপূর্ণ। তাঁহাদের দেখিয়া ইংরাজ যোদ্ধাগণের মনে শ্রদ্ধার উদয় হইল। সকলেই বলিতে লাগিল, “ইহাদের উপর শাস্তি দিয়া প্রতিশোধ লওয়া উচিত নয়।” যিনি দূত হইয়া গিয়াছিলেন তিনি বলিলেন, “ইঁহাদের শাস্তি দিলে রাজা এড্‌ওয়ার্ডের কলঙ্ক হইবে— ইংরাজ জাতির কলঙ্ক হইবে।” কিন্তু এড্‌অয়ার্ডের মন গলিল না— তিনি জল্লাদ ডাকিতে হুকুম দিলেন। তখন ইংলন্ডের রানী ফিলিপা বন্দীদের মধ্যে কাঁদিয়া পড়িলেন এবং দুই হাত তুলিয়া ভগবান যীশুর দোহাই দিয়া এড্‌অয়ার্ডকে বলিলেন, “ইহাদের তুমি ছাড়িয়া দাও।” তখন এড্‌ওয়ার্ড আর ‘না’ বলিতে পারিলেন না। ছয় বীরকে মুক্তি দিয়া রানী তাহাদিগকে তাঁহার নিজের বাড়িতে লইয়া, পরিতোষ পূর্বক ভোজন করাইলেন এবং নানা উপহার দিয়া বিদায় দিলেন। ইঁহাদের বীরত্বের কথা ফরাসীরা আজও ভোলে নাই— ইংরাজও তাহা স্মরণ করিয়া রাখিয়াছেন।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ১৯৮ জন


এ জাতীয় গল্প

→ সম্ভবত এটাই পৃথিবীর শেষ শতক! আপনি প্রস্তুত তো!√
→ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ তাজমহল 11শেষ পর্ব
→ পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিপ্লবী- বিশ্বনবী মোহাম্মদ (সা.) -শেষ অংশ
→ মহাবীর আলেকজান্ডারের শেষ ইচ্ছা

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now