বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
গভীর রাতে তাঁবুরবাইরে খসখস আওয়াজ শুনেচকিতে ঘুম ভেঙে গেল মুসার ৷ কীসের আওয়াজ? চোরনাকি? মুহূর্তে চিন্তাটাঝেড়ে ফেলল ও মাথা থেকে ৷এখানে, ক্যালিফোর্নিয়ারউত্তর সীমান্তে, এই দুর্গমপাহাড়ি অঞ্চলে চোর আসবে কী করতে?ওদের চারজনেরকাছে আছেই বা কী চুরিকরার মত? তা হলে কোনওজন্তু-জানোয়ার?সারাটা দিনঘোড়ায় চেপে চড়াই-উতরাইডিঙিয়ে ক্লান্ত হয়ে এখন স্লিপিং-ব্যাগেরভিতরগভীর ঘুমে অচেতন ওর তিনসঙ্গী–কিশোর, রবিন ওফারিহা ৷কী ওটা? আরে!তাঁবুর ফ্ল্যাপটা সরে যাচ্ছেকেন একপাশে? বিস্ফারিত চোখে চেয়ে রয়েছে মুসা ৷ কাউকে জাগাবে নাকি?আড়চোখে একবার চাইলকিশোরের দিকে ৷ দেখলকিশোরের এক চোখ খোলা, ভুরুনাচাল মুসার উদ্দেশে ৷ ডানহাত বের করে আনলস্লিপিং-ব্যাগেরভিতরথেকে, মুঠোয় ধরা তাঁবুর খুঁটিগাড়বার হাতুড়িটা ৷ আস্তেআস্তে সরে গেল ফ্ল্যাপ৷ভয়ার্ত একটা মুখ দেখা দিল তাঁবুর ভিতর ৷ ওদেরইন্ডিয়ান গাইড, ট্রেফর ৷একমাথা এলোমেলো পাকা চুল,আর বুক-সমান অগোছাল দাড়িনিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে ঢুকছেতাঁবুতে ৷ থরথর করে কাঁপছে ওর সর্বাঙ্গ ৷উঠে বসলকিশোর ও মুসা ৷‘কীব্যাপার, ট্রেফর? কীহয়েছে?'হড়বড় করে নিজেরভাষায় একগাদা দুর্বোধ্যশব্দ উচ্চারণ করল লোকটা কাঁপা গলায় ৷তার মধ্য থেকে বোঝা গেল কেবলএকটা ইংরেজি শব্দ,“নয়যেস্!' কীসের শব্দ, জানাগেল না বার বার জিজ্ঞেসাকরেও, নিজের নোংরা কাঁথাটা টেনে নিয়ে ডিম্পল্আর রবিনের মাঝখানে চলেএল সে, ‘হিয়ার আই স্লিপ৷'আরে! গত দু'দিন অনেকসাধাসাধি করেও এইহাবাগোবা লোকটাকে তাঁবুর ভিতর শোয়ানো যায়নি,খোলা আকাশের নীচে নাশুলে নাকি ঘুম আসে না;মাঝরাতে আজ সে নিজেইএসে হাজির, শোবে—ব্যাপারটা কী?‘কীসের নয়েয, কিশোর?'‘আমরা তোকিছু শুনলাম না,' বলল কিশোর৷ ‘হয়তো স্বপ্ন-টপ্ন দেখেথাকবে ৷ জানা যাবে কালসকালে ৷'যে-যার স্লিপিং-ব্যাগে সেঁধিয়ে চেইন টেনে দিল কিশোর ও মুসা ৷ ঘন কুয়াশা তো আছেই, অসম্ভবশীতও পড়েছে আজ ৷ রবিন ওফারিহা ঘুমাচ্ছে বেখবর৷পরীক্ষার পর দীর্ঘ একমাসছুটি ৷ আঙ্কেল ডিকের আমন্ত্রণে তাঁর সঙ্গেগাড়িতে চেপে রকি বিচথেকে প্রায় এক হাজারমাইল দূরেক্যালিফোর্নিয়ারউত্তরপ্রান্তে টিলা-টক্করের রাজ্যে তাঁর এক আত্মীয়রখামার-বাড়িতে বেড়াতেএসেছে ওরা ৷ বাবা-মারসঙ্গে ইউরোপে বেড়াতেগেছে বলে জিনা আসতেপারেনি ওদের সঙ্গে ৷স্যান ফ্রান্সিস্কোকে বামে রেখে,স্টকটন-স্যাক্রামেন্টোছাড়িয়ে আরও উত্তরে চলেএসেছে ওরা ৷ তারপররেডিং-এর ডাইনে সিয়েরানেভাডার পাহাড়ি রাস্তা ধরে এঁকেবেঁকে আরও উত্তর-পুবে ৷ শহর-গ্রাম ছাড়িয়েপাহাড়ের মধ্য দিয়েআঁকাবাঁকা,সরু পথ ধরেপৌঁছেছে ছবির মত সুন্দর একফার্ম-হাউসে ৷ওখান থেকে চোদ্দো হাজার একশোবাষট্টি ফুট উঁচু মাউন্টশাস্তা দেখা যায় পরিষ্কার,মনে হয়, এই তো হাতবাড়ালেই ছোঁয়া যাবে বুঝি৷মিস্টার ও মিসেস হ্যারল্ড এবং হাসিখুশি কাজের লোকইভান্সের খাতির-যত্নে তিনদিনেই ওরা যখন টের পেলকয়েক কেজি করে বেড়েগেছে ওজন, তখন ঘোড়ায়চেপে তিরিশ মাইল দূরের প্রজাপতি-উপত্যকা থেকেবেড়িয়ে আসবে বলে বেরিয়েপড়েছে ওরা ৷ ওখানে হরেকজাতের ফুল আর প্রজাপতি তোআছেই, পাখিরও নাকি সীমা-সংখ্যা নেই ৷ আঙ্কেল ডিকেরও যাওয়ার কথা ছিল,কিন্তু রওয়ানা হওয়ার আগেরসন্ধ্যায় উঠোনে পুঁতেরাখারু বাঁধবার খুঁটিতে হোঁচটখেয়ে বাম হাতের কনুইমচকে গেছে তাঁর ৷ বিশ মাইল দূরের একটা প্রাইভেটক্লিনিকে এক্স-রে করিয়েদেখা গেছে সামান্য চিড়ধরেছে হাড়ে ৷ তিনদিন পরআসছেন বলে ওদের রওনাকরিয়ে দিয়ে মোটা হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি সত্ত্বেও রয়েগেছেন আঙ্কেল খামারবাড়িতেই ৷সাতটা ঘোড়ারঅর্ডার দেওয়া হয়েছিল,সক্কাল বেলা ওগুলো নিয়েহাজির হয়ে গেল ঘোড়ার মালিক থুত্থুরে বুড়োইন্ডিয়ান, ট্রেফর ৷ঘোড়াগুলো মোটাসোটা,শক্তিশালী—পাহাড়ে চলাচলের জন্য খুবইউপযোগী, কিন্তু আকারে খুব ছোট ৷ কোনওটাই সাড়ে-তিনফুটের বেশি উঁচু না ৷একটা মাদি ঘোড়ার সঙ্গেগরু বাঁধবার খুঁটিতে হোঁচটখেয়ে বাম হাতের কনুইমচকে গেছে তাঁর ৷ বিশ মাইল দূরের একটা প্রাইভেটক্লিনিকে এক্স-রে করিয়েদেখা গেছে সামান্য চিড়ধরেছে হাড়ে ৷ তিনদিন পরআসছেন বলে ওদের রওনাকরিয়ে দিয়ে মোটা হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি সত্ত্বেও রয়েগেছেন আঙ্কেল খামারবাড়িতেই ৷সাতটা ঘোড়ারঅর্ডার দেওয়া হয়েছিল,সক্কাল বেলা ওগুলো নিয়েহাজির হয়ে গেল ঘোড়ার মালিক থুত্থুরে বুড়োইন্ডিয়ান, ট্রেফর ৷ঘোড়াগুলো মোটাসোটা,শক্তিশালী—পাহাড়ে চলাচলের জন্য খুবইউপযোগী, কিন্তু আকারে খুব ছোট ৷ কোনওটাই সাড়ে-তিনফুটের বেশি উঁচু না ৷একটা মাদি ঘোড়ার সঙ্গেুতুলের মত, সুন্দর, ধবধবেসাদা, ছোট্ট একটা বাচ্চাওআছে—সোজা হয়ে দাঁড়ালে, বড় জোর আঠারো ইঞ্চি উঁচু হবে ৷বাচ্চাটার খুরের কাছেইঞ্চি তিনেক জায়গা আরকপালের তিলকটা কালোহওয়ায় দারুণ সুন্দরদেখাচ্ছে ৷ ওটার দুই গালের হালকা দাগ দেখলেমনে হয় টোল পড়েছে ৷দেখামাত্র ওটার নাম রেখেদিল রবিন ডিম্পল ৷অল্পক্ষণেই ভাব হয়ে গেলওদের দুজনে ৷ বেশ কিছুদিন যাবৎ লক্ষ করছে কিশোর,যে-কোনও জানোয়ারেরসঙ্গে খুব সহজেই বন্ধুত্বহয়ে যায় রবিনের ৷ কেনযেন আজকাল দেখা-মাত্র ওরপ্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে জন্তু- জানোয়াররা৷আঙ্কেল যেতেপারছেন না দেখেছেলেমেয়েদের সঙ্গে গাইডহিসাবে যেতে বলা হলোট্রেফরকে ৷ কিন্তু ওকেরাজি করানো কঠিন হলো ৷ একে মানুষটা ইংরেজি বোঝেনা, তারউপর একেবারেইহাবাগোবা কিসিমের ৷প্রথমে বলল প্রজাপতি-উপত্যকা চেনে, তারপর বললচেনে না; শেষে ওর হাতে মিস্টার হ্যারল্ড একটাম্যাপ ধরিয়ে দেওয়ায়নিমরাজি হয়ে মাল-সামানতুলে ফেলল দুটো ঘোড়ারপিঠে, তারপর চড়ে বসলএকটায় ৷ কিশোর-মুসা-রবিন আর ফারিহাও উঠে পড়ল যারযে-ঘোড়াটা পছন্দ হলো তারউপর ৷ রবিনের সঙ্গে এরইমধ্যে গভীর বন্ধুত্ব হয়েগেছে বাচ্চা-ঘোড়া ডিম্পল-এর, মা-টা মালপত্র নিয়ে সবার আগে থাকলেওবাচ্চাটা চলল রবিনেরপাশাপাশি ৷ তিন গোয়েন্দার মনোযোগ কেড়েনিয়েছে বলে ডিম্পলের উপরখুবই অসন্তুষ্ট হলো মুসার প্রিয় কাকাতুয়া কিকো, কিন্তুকঠোর ভাষায় বকা-ঝকাদিয়েও ওকে তাড়াতে পারলনা কিছুতেই ৷দশদিন চলারমত খাবার ওদের সঙ্গেদিয়ে দিয়েছেন মিসেস হ্যারল্ড, কিপটেমি না করেপেট ভরে খেতে বলেছেনসবাইকে ৷ বলে দিয়েছেন,ভয় নেই, আঙ্কেল ডিকেরসঙ্গে আরও খাবার পাঠাবেনতিনি, কম পড়বে না ৷দু' রাত দু' জায়গায় ক্যাম্প করেছেওরা নির্বিঘ্নে, আজ এইতৃতীয় রাতে কী দেখলট্রেফর, কীসের আওয়াজ শুনলযে এমন ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে তাবুতে আসলো.
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now