বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

মৃত্যুর গন্ধ(পর্ব-৫)

"উপন্যাস" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান সাইমন জাফরি (০ পয়েন্ট)

X তিন ঘুম ভেঙে গেল তারেকের।রাত তখন একটা। ও বুঝতে পারছেনা,ঘুম কেন ভাঙল।ঘুমিয়েছে বেশিক্ষন হয়নি।ঘন্টা দুয়েক হবে।এত তাড়াতাড়ি ঘুম এমনিতেই ভেঙে যাবার কথা না। ঘুম ভাঙ্গার নিশ্চয়ই যৌক্তিক কোনো একটা কারণ আছে।তারেকের ঘুম খুবই পাতলা।সামান্য আওয়াজেই ভেঙে যায়।হয়ত কোন আওয়াজ উঠেছে কোথাও।যে আওয়াজটাকে পরিবেশের তুলনায় স্বাভাবিক বলা চলেনা। মানুষ ঘুমিয়ে থাকলেও তার অবচেতন মন ঘুমায়না।সব ধরনের আওয়াজই সে পায়।তবে ফিল্টার করে সাধারন আওয়াজগুলো আমলে নেয়না।কিন্তু যখনই কোনো অস্বাভাবিক আওয়াজ হয় তখনই সে পূর্নমাত্রায় সচেতন করে দেয় কনশাস মাইন্ডকে।এজন্যই দেখা যায়,একজন মানুষ পার্কে কিংবা বাসে শত কোলাহলের মধ্যে বেঘোরে ঘুমাচ্ছে, অথচ এই মানুষটাই রাতের বেলা সামান্য আওয়াজে জেগে যাচ্ছে।তারেকের ঘুমও অস্বাভাবিক আওয়াজে ভেঙে যাবার সম্ভবনা শতভাগ। রহস্যভেদের স্বার্থে সেদিন আর বাসায় যায়নি তারেক।রয়ে গেছে নার্সিংহোমেই।নার্সিংহোমে একটা এক্সট্রা রুম আছে।গেস্ট রুমও বলা চলে।প্রতিমাসে এলাকাবাসীদের জন্য চিকিৎসা ক্যাম্পেইনের আয়োজন করেন ডা.ইকবাল।এই উপলক্ষে বাইরে থেকে ডাক্তার আসে।তখন কাজে লাগে রুমটা।ওই রুমেই তারেকের শোয়ার ব্যাবস্থা হয়েছে। ভেবেছিল জেগে থাকবে, কিন্তু কখন যেন ঘুমিয়ে পড়েছিল।ঘুমটা হঠাৎ-ই ভেঙে গেল। পায়ে সেন্ডেল গলিয়ে মোবাইল বের করল তারেক।সময়,বারোটা বেজে ছাপ্পান্ন। সন্তর্পনে দরজার কাছে চলে এল।কান পাতল কিছু একটা শোনার আশায়।তবে দেয়াল ঘড়ির মৃদু টিক টক ছাড়া আর কিছু শোনা গেলনা।এরপর দরজার ফাঁক ফোকর দিয়ে যতটা দেখা যায় দেখে নিল।নেই,কিছুই নেই। এবার আস্তে করে ছিটকিনি খুলে দরজাটা ইঞ্চি খানেক ফাঁক করল।সঙ্গে সঙ্গে করিডোর থেকে আলোর একটা চিকন রেখা রুমে ঢুকে পড়ল। বিস্তৃত দৃষ্টিপথে নজর চালালো তারেক।এবারও কিছু ধরা পড়ল না ওর চোখে।ধীরে ধীরে দরজাটা মেলে বের হবার জায়গা করল। বেরিয়ে দেখল করিডোর ফাঁকা।পেছনে তাকিয়ে দেখল ড.ইকবালের চেম্বার তালাবদ্ধ।তারেক শোবার আগেই বিদায় নিয়ে বাসায় চলে গেছেন ভদ্রলোক। করিডোরের দুপাশে সারি সারি দরজা।এরমধ্যে দুটো খোলা।একটাতে ডিউটিরত ডাক্তার থাকেন।পাশের আরেকটা রুম হল নার্সদের।তারেকের জানামতে রাতেরবেলা এক বয়স্কা নার্স ডিউটি দেন। দুটো রুম থেকেই আলো আসছে।তারমানে দুজনেই জাগ্রত। তারেক এগিয়ে গেল সেদিকে।কাছাকাছি এসে দেখল!,নার্সের রুমের দরজা ভেজানো। ভেতর থেকে টিভির আওয়াজ ভেসে আসছে।পুরনো দিনের একটা হিন্দি সিনেমা চলছে।অমিতাভের ভরাট গলা শোনা যাচ্ছে। দরজা খুলে ভেতরটা দেখা দরকার ছিল তবে সেটা এই মুহুর্তে সম্ভব নয়।আপাতত নিজের অস্তিত্ব জানান দেবার কোনো ইচ্ছেই নেই তারেকের। এবার পাশের রুমের দরজার কাছে চলে এল।এই রুমের দরজা বেশ খানিকটা মেলা।ভেতরে উকি দিতেই কম বয়সী এক ডাক্তারকে ম্যাগাজিন পড়তে দেখল তারেক।সম্ভবত মেডিকেল জার্নাল।বেশ মনোযোগী পাঠক।তারেকের উপস্থিতি টের পেলনা। সরে এল তারেক ওখান থেকে।মন থেকে খচখচানি যাচ্ছেনা।তার কারণও আছে। ওর প্রবল ধারণা ওর রুমের সামনে দিয়ে কেউ হেটে যাওয়াতে শব্দ হয়েছে আর সেই শব্দেই ঘুমটা ভেঙেছে ওর।সম্ভবত ডাক্তার বা নার্সের কেউ হেটে গেছে ওর রুমের সামনে দিয়ে।যদিও তার সম্ভবনা কম।কারন হাসপাতালে ঢোকার মুখেই হল ছোট্ট ফার্মেসী। ওটা রাতে বন্ধ থাকে।এরপর হল করিডর।করিডরের দুপাশেই বিভিন্ন রুম।ড.ইকবালের রুমটা করিডরের মুখেই।এর পাশেই তারেকের রুম।এরপর আরো কয়েকটা রুমের পর ডিউটিরত ডাক্তারদের রুম এবং তার পাশেই নার্সিংরুম। নার্সিংরুমের পরেই দোতলায় উঠবার সিড়ি।নীচতলায় কোনো রোগী থাকেনা।সব দোতলায়।সেজন্যই রোগী দেখতে হলে ডাক্তার বা নার্স কারোরই তারেকের রুমের সামনে যাবার প্রয়োজন নেই।হাসপাতাল ভবন রাতে তালা দেয়া থাকে।পুরো কম্পাউন্ড রাতে দুজন গার্ড পাহারা দেয়।সুতরাং বহিরাগত কারো আসার সম্ভবনাও কম।তাহলে ওর রুমের সামনে দিয়ে কে এল? হঠাৎ বিদ্যুৎচমকের মত একটা কথা মনে পড়ে গেল।শব্দ না করে যতটা দ্রুত সম্ভব দোতলায় চলে এল। দোতলার করিডরেও উজ্জল আলো জ্বলছে। তবে নীচতলার সাথে পার্থক্য হল দোতলার প্রতিটা রুমের দরজা খোলা।ভেতরে ডিম লাইটের নরম আলো। চারপাশে নজর বুলাচ্ছে তারেক।পরিবেশ স্নায়ুর উপর চাপ ফেলছে যথেষ্ঠ। হরর মুভিতে হাসপাতাল একটা বিশেষ স্থান দখল করে আছে।সেজন্য না হলেও গভীর রাতে হাসপাতালের নির্জন করিডর কিছুটা ভীতি তৈরি করেই! একটু আগে হঠাৎ করে তারেকের মনে পড়ে গেছে ড. ইকবালের গন্ধ পাবার পর থেকে এপর্যন্ত বারো ঘন্টা অতিবাহিত হয়ে গেছে।তার দাবি অনুযায়ী এতক্ষনে জহুরুল সাহেবের মারা যাবার কথা।সেটাই যাচাই করতে এসেছে তারেক। যদি সত্যি সত্যি জহুরুল সাহেব মারা যান তাহলে সেটা হবে তারেকের দেখা অন্যতম অবিশ্বাস্য ঘটনা।এমন ঘটনা যার ব্যাখ্যায় আশ্রয় নিতে হয় অলৌকিকতার। তবে তারেক যে হাইপোথিসিসটা দাড় করিয়েছে তার গ্রহনযোগ্যতার জন্য জহুরুল সাহেবের মৃত্যুটা আবশ্যক! ২০৪ নাম্বার রুমের সামনে এসে দাড়াল তারেক ফয়সাল। রুমের দরজা আর সব রুমের মত খোলাই।তারেক ঢুকে পড়ল। উজ্জল আলো থেকে প্রায়ান্ধকার রুমে ঢুকেই দৃষ্টির সীমাবদ্ধতা অনুভব করতে পারল।প্রায় কিছুই দেখতে পাচ্ছেনা।রুমের লাইট জ্বালানো উচিত হবেনা ভেবে চোখে অন্ধকার সয়ে আসার অপেক্ষা করছে। যেমন নিঃশব্দে ঢুকেছে তেমনি নিঃশব্দে দাড়িয়ে থাকল কয়েক মুহুর্ত। চোখে অন্ধকার সয়ে আসার পরই নজর চলে গেল রুমের একমাত্র বেডের দিকে।একটা মনুষ্য আকৃতি শুয়ে আছে বিছানায়।এরই মধ্যে ভদ্রলোক মারা গেছেন কিনা বোঝা যাচ্ছেনা।নিশ্চিত হবার জন্য সেদিকে তারেক দু পা এগোতেই ভয়ানকভাবে চমকে উঠল। এতক্ষন আবছায়ায় বুঝতে পারেনি, জহুরুল সাহেবের বেডের পাশে একটা ছায়ামূর্তি দাঁড়ানো! তারেকের উপস্থিতি টের পেয়েই নড়ে উঠল মূর্তিটা। ##আবুল ফাতাহ মুন্না https://m.facebook.com/a.fatah.munna


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৭৮০ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now