বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

মৃত্যুর গন্ধ (পর্ব-৩)

"উপন্যাস" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান সাইমন জাফরি (০ পয়েন্ট)

X ছয়দিন পর তারেক সবে মাত্র নাস্তা খেয়ে একটা বই নিয়ে বসেছে এমন সময় ফোনটা এল।ড.ইকবাল হামিদের ফোন। তারেকের বুকটা ছ্যাত করে উঠল। নিশ্চয় গন্ধটা পেয়েছেন ড.ইকবাল। মৃত্যুর গন্ধ! 'হ্যালো, 'ফোন রিসিভ করল তারেক। 'তারেক ফয়সাল বলছেন? ' 'স্পিকিং। ' 'নিশ্চয়ই চিনতে পেরেছেন আমাকে?'এরপর জবাবের অপেক্ষা না করেই বললেন,'একটু আগে আমি গন্ধটা পেয়েছি। আপনি প্লিজ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চলে আসুন। ' অনেকগুলো প্রশ্ন জমা হয়ে আছে তারেকের মনে, তবে প্রশ্ন করার উপযুক্ত সময় এটা নয়। 'আচ্ছা আমি দশমিনিটের মধ্যে বের হচ্ছি। ' 'থ্যাংকস। ' ফোন রেখে দিল তারেক। হাতে একদমই সময় নেই। ড.ইকবাল হামিদের দাবি সত্যি হয়ে থাকলে আগামী বারঘন্টার মধ্যেই মারা যাবেন তার একজন পেশেন্ট। এই সময়ের মধ্যেই রহস্যের কিনারা করতে হবে তারেককে। *** ঠিকানা অনুযায়ী একটা দোতলা ভবনের সামনে বাইক থামাল তারেক ফয়সাল। জায়গাটা গাজীপুর শহরের মধ্যে হলেও হাসপাতালের অবস্থান খুব নিরিবিলিতে। আশেপাশে বাড়িঘর বেশ পাতলা। হাসপাতালের ঠিক পেছনেই বড়সড় একটা মাঠ।ঠিক হাসপাতাল মনে হয়না ভবনটাকে। যেন একটা অবসর যাপন কেন্দ্র। ভবনের নির্মাণশৈলীও চমৎকার।ছিমছাম। ড.ইকবালের ব্যাবসায়িক কিংবা ডাক্তারি বুদ্ধির তারিফ করতেই হয়। এ জায়গাতে এলেই যে কারো রোগ অর্ধেক ভাল হয়ে যাবে। গেটের গার্ড দেখিয়ে দিল বাইক কোথায় স্ট্যান্ড করতে হবে। বাইক জায়গামত রেখে হাসপাতালের দিকে পা বাড়াল তারেক। হাসপাতাল ভবনের ঠিক পাশেই আরেকটা বেশ বড় ভবন। ড.ইকবালের বক্তব্য অনুযায়ী এটা নার্সিংহোমের ডাক্তার এবং স্টাফদের কোয়ার্টার। তারেক ভেতরে ঢুকতেই একজন নার্সের দেখা পেল। 'এক্সকিউজ মি, ড.ইকবাল হামিদের চেম্বার কোনটা? 'কাছে গিয়ে বলল তারেক। 'আমার সাথে আসুন,' বলে হাটা দিল নার্স। তারেক তাকে অনুসরন করল। নার্সিংহোমের সর্বত্রই যত্নের ছাপ দেখতে পেল তারেক। কিছুদুর গিয়েই একটা রুমের সামনে এসে নার্স বলল,'এটাই স্যারের চেম্বার। ' তারেকও দরজার নেমপ্লেটে "ড.ইকবাল হামিদ "লেখা দেখতে পেল। 'থ্যাংকস।'ধন্যবাদ জানালো নার্সকে। মেয়েটা চলে যেতেই আস্তে করে দরজায় টোকা দিল তারেক। 'কাম, 'ভেতর থেকে ভেসে এল ড.ইকবালের গলা।তারেক দরজা ঠেলে ঢুকে পড়ল ভেতরে। 'ও আপনি।আসুন,আসুন।আপনার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।' হেলান ছেড়ে উঠে স্বাগত জানালেন ড.ইকবাল। তারেক গিয়ে সামনে রাখা একটা চেয়ারে বসে পড়ল। এই কদিনে স্বাস্থ্য কিছুটা ভেঙেছে ড.ইকবালের।চোখের নীচে কালির আভাস।বোঝাই যায় অদ্ভুত সমস্যাটা তাকে বেশ মানসিক পীড়া দিচ্ছে। 'তারপর, সব খুলে বলুন কী হয়েছে।' একবার গলা খাঁকারি দিয়ে শুরু করলেন ড.ইকবাল, 'আজ সকালে আমাদের এক পেশেন্টকে দেখতে গিয়ে গন্ধটা পাই আমি।'এক কথায় জবাব দিয়ে দিলেন। 'কবে ভর্তি হয়েছেন তিনি? ' 'প্রায় সপ্তাহখানেক হতে চলল।হার্টের সমস্যা। ' 'গন্ধটা কি আপনি নিশ্চিত পেয়েছেন?' 'ঠিক বুঝলাম না। ' 'দেখুন, আপনাকে যখন আমি বললাম, গন্ধটা পেলে আমাকে জানাবেন, তখন থেকেই আপনার মাথায় 'গন্ধ' বিষয়টা ঢুকে গেছে। হতে পারে একারণে আপনার মস্তিষ্ক গন্ধটা তৈরি করে আপনার সামনে উপস্থাপন করছে।' 'মি.তারেক, আমিও একজন ডাক্তার।'সামান্য হাসি দিয়ে বললেন ড.ইকবাল।'এসব ব্যাপার কম বেশি আমিও জানি। গন্ধটা আমি সত্যিই পেয়েছি, ঠিক যেভাবে আগে কয়েকবার পেয়েছি।এমনকি আপনি আসার আগেও ওই পেশেন্টের রুমে গিয়ে চেক করে দেখেছি। ' 'হুমম। 'মাথা নাড়ল তারেক। 'চলুন পেশেন্টকে দেখে আসি।তারপর বলতে পারব। ' 'কিন্তু গন্ধটা তো আমি ছাড়া কেউ পায়না। আপনি পাবেন,এমন সম্ভবনাও কম। ' তারেক জবাব দেয়ার আগে মুচকি হাসল একটুখানি। 'সত্যান্বেষীরা অনেক রকম গন্ধই পায়! ' জবাবে পাল্টা হাসি দিলেন ড.ইকবাল। 'বাই দ্যা ওয়ে, ব্যোমকেশের মত গোয়েন্দা শব্দটার প্রতি এলার্জি আছে নাকি আপনার? না মানে,"সত্যান্বেষী" শব্দটা ব্যাবহার করলেন দেখে বললাম। ' 'নাহ, এলার্জি ট্যালার্জি নেই। তবে "সত্যান্বেষী" শব্দটা সুন্দর। ' 'ও আচ্ছা।তাহলে চলুন,দেখা যাক গন্ধটা আপনিও পান কিনা।' তারেক আর ড.ইকবাল উঠে দাঁড়াল। আগে ড.ইকবাল বের হলেন,তারেক পেছনে। বের হবার আগে একবার ড.ইকবালের চেম্বারে চোখ বুলিয়ে নিল তারেক।বিশেষ কিছু দেখতে পাবার আশা করেনি,দেখলও না। তবে একটা সামান্য বৈসাদৃশ্য লক্ষ্য করল তারেক। ড.ইকবাল বের হয়ে পড়েছেন দেখে তারেক আর দেরী না করে চেম্বার ছাড়ল। করিডোর ধরে হাঁটছে ওরা। করিডোরের দুপাশের দেয়ালে পেইন্টিং এবং মেঝেতে ফুলের টবের মাধ্যমে ঘরোয়া পরিবেশ সৃস্টির সফল প্রয়াস চালানো হয়েছে। হাটতে হাটতেই একটু আগের দেখা বৈসাদৃশ্য নিয়ে ভাবছে। ড.ইকবাল হামিদের চেম্বারে বিশাল সেক্রেটারিয়েট টেবিলের পাশের ছোট টেবিলে কয়েকটা অদ্ভুত জিনিস দেখেছে ও।প্লেট, গ্লাস, জগ এবং একটা টিফিন ক্যারিয়ার! অনেকের কাছেই জিনিসগুলো খুব সাধারন হলেও তারেক ফয়সালের কাছে বিশেষ অর্থ বহন করে এগুলো। খাদ্য গ্রহনে ব্যাবহৃত জিনিষগুলো স্পষ্টই বলে দিচ্ছে ড.ইকবাল চেম্বারেই নিয়মিত খাবার খান। মিলছে না ব্যাপারটা।এত কাছে বাসা রেখে ভদ্রলোক চেম্বারে কেন খাবেন? স্ত্রীর সাথে বনিবনা নেই? আপাতদৃষ্টিতে কেসের সাথে এই ব্যাপারটার কোনো সম্পর্ক দেখা না গেলেও সুক্ষ্ম একটা সম্পর্ক থেকেই যায়।মানসিক অশান্তি অনেক সময়ই মানসিক রোগের কারন হতে পারে। সত্যি কথা বলতে তারেক এখনও ড.ইকবালের মানসিক রোগের সম্ভাবনাকে ঝেড়ে ফেলতে পারছেনা। ঘোরানো সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় চলে এল তারেক। করিডোরের দুপাশে দশটা করে মোট বিশটা কেবিন। একটা কেবিনে শুধু তালা দেয়া। বাকি সবগুলোতেই রোগী আছে। করিডোরের শেষ মাথায় অপারেশন থিয়েটার।ফার্মেসী, ডাক্তারদের চেম্বার, নার্সিংরুম সব নীচতলায়।এখানে শুধু কেবিন আর অপারেশন থিয়েটার। ২০৪ নাম্বার রুমের সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়লেন ড.ইকবাল। স্বাভাবিক নিয়মে এই পিচ্চি নার্সিংহোমে ২০৪ নাম্বার রুম থাকার কথা না। কিন্তু তারেক লক্ষ্য করেছে সব প্রতিষ্ঠানের রুম নাম্বারের আগে শতক যোগ করা হয়। কারণটা বোধগম্য নয় তারেকের। হয়ত এটাই নিয়ম। কে জানে। ড.ইকবাল দরজা খুলে ভেতরে ঢোকার আমন্ত্রণ জানালেন তারেককে। তারেক ঢুকে পড়ল। ঢুকেই একটা গন্ধ পেল নাকে!


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৮৩১ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • Farhan Hossain
    User ৪ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    এক কথায় অসাধারণgj

  • silmun
    User ৭ বছর, ৮ মাস পুর্বে
    ar koi??