বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
নাইট অভ দ্য ভ্যাম্পায়ার
অনুবাদ:অনীশ দাস আপু
পর্ব--২
'কিন্তু রক্ত তো কম পড়েনি,' গম্ভীর মুখে বলল ওয়াচ।
'একটা জিনিস খেয়াল করেছো-চোখ মেলে তাকিয়ে রয়েছে অথচ দেখছে না আমাদেরকে।ঠান্ডা এবং সাদা হয়ে গেছে টেড।ওকে এখুনি রক্ত দেয়া দরকার-কমপক্ষে ২লিটার।হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে উপায় নেই'।
স্যালি এক মূহুর্ত ভেবে নিয়ে বলল,'হাসপাতালে যদি নিয়ে যেতেই হয় এখুনি চলো।হাসপাতাল বেশি দূরেও নয়।ওকে বয়েই নিয়ে যেতে পারব।'
ছেলেরা টেডের শরীরের ওপরের অংশ ধরল,মেয়েরা ধরল দুই পা।
তারপর মাটি তুলে ফেলল টেডকে।সূর্য অস্ত গেছে।পার্কের আলোয় আঁধার দূর হয়েছে সামান্যই।বরং মাটিতে গাছের ছায়া ফেলে ভীতিকর একটা পরিবেশের সৃষ্টি করেছে।টেড আর নড়াচড়া করছে না।অজ্ঞান হয়ে গেছে।তার নিশ্বাস হয়ে উঠেছে ঘন এবং দুর্বল।হাসপাতালে পৌঁছার আগেই সব শেষ হয়ে যায় কি না ভেবেই দলটি উদ্বিগ্ন।
'ওর ঘাড় থেকে এতটা রক্ত ঝরেছে,পার্ক থেকে বেরিয়ে এসে বলল সিন্ডি।'অথচ জামাকাপড় রক্তে ভেজেনি,দেখেছো?'
'হু।' বলল ওয়াচ।'ওর ঘাড়ের দাগ গুলো কেমন অদ্ভুত।'
'অদ্ভুত মানে?' জিজ্ঞেস করল স্যালি।
'মনে হচ্ছে দাঁতের দাগ।' জবাব দিল ওয়াচ।
হাসপাতালে পৌঁছাতে পনের মিনিট সময় লাগল ওদের।হাসপাতালের নাম স্পুকসভিল মেমোরিয়াল।পুরো বিল্ডিং কালো রঙ্গে রাঙ্গানো।হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স বেশির ভাগ সময় ব্যবহার করা হয় শবযান হিসেবে।হাসপাতালটি খুবই নির্জন।দেখলে মনে হয় জন মানবশূন্য,পরিত্যক্ত।ওরা দ্রুত টেডকে নিয়ে ঢুকে পড়ল ভেতরে।চলে এলো ডেস্কের সামনে।ডেস্কে বসে একটি তরুনী নার্স।তার কালো চুল বেশ লম্বা,ঠোঁটে টকটকে লাল লিপস্টিক।সে একটা কাগজে কি জানি লিখছিল।অজ্ঞান টেডকে নিয়ে অ্যাডামদেরকে হাসপাতালে ঢুকতে দেখে সে লাফিয়ে উঠল।
'ওর কি হয়েছে?'উদ্বেগ নিয়ে জানতে চাইল নার্স।
'জানি না,' বলল অ্যাডাম।টেডকে সাবধানে শুইয়ে দিল মেঝেতে।
স্যালি ওয়েটিং-রুমের কাউচ থেকে দ্রুত একটি বালিশ নিয়ে এল।টেডের মাথার নিচে রাখল।
'আমরা পার্কে টেনিস খেলছিলাম।'ব্যাখ্যা করল অ্যাডাম।
'হঠাৎ টলতে টলতে কোর্টে এসেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ও।ওর ঘাড় দিয়ে রক্ত পড়ছে।মনে হচ্ছে অনেকটা রক্ত ক্ষরন হয়েছে।'
ডেস্কের পেছন থেকে বেরিয়ে এল নার্স,হাঁটু মুড়ে বসল টেডের পাশে।ঘাড়ের পাশে হাত রেখে পরীক্ষা করল পালস।সুন্দর মুখখানায় ফুটল দুশ্চিন্তা।
'ওর অবস্থা ভালো ঠেকছে না,'সিধে হলো নার্স।'আমি ডাক্তারকে খবর দিচ্ছি।ছেলেটার বাবা মা কাউকে তোমরা চেন?'
'আমি চিনি,'জবাব দিল সিন্ডি।
'আপনি বললে ওদেরকে ফোন করতে পারি।'
'করো।' বলে হলঘরে অদৃশ্য হয়ে গেল তরুনী।
ওরা টেডকে ঘিরে বসে রইল।কী করবে বুঝতে পারছে না।সিন্ডি গেছে ফোন করতে।ওয়াচ একটু পরপর ঘাড়ের ক্ষত পরীক্ষা করে দেখছে।কুঁচকে আছে ভুরু।
'কোনো জন্তুজানোয়ার ওকে কামড়ে দেয়নি তো?'অবশেষে জিজ্ঞেস করল স্যালি।
'কিছু একটা নিশ্চয় ওকে কামড়েছে,' বলল ওয়াচ।
এমন সময় ফিরে এল সিন্ডি।অখুশি চেহারা।
'টেডের বাড়ির ফোন কেউ ধরছে না,'বলল সে।
'তুমি সঠিক নাম্বারে ফোন করেছিলে তো?'জিজ্ঞেস করল স্যালি।
'আমি ডিরেক্টরি এনকোয়াজির থেকে নাম্বার পেয়েছি,'জবাব দিল সিন্ডি।
'যে মহিলা ডিরেক্টরি এনকোয়ারিজের দায়িত্বে আছে সে এ শহরের বেশিরভাগ নাম্বার ঝুড়িতে ফেলে রাখে,'বলল স্যালি।
'ফোন বুক নিজে চেক করেছো?'
মাথা দোলাল সিন্ডি। ' দু'বার ফোন করেছি।কেউ ধরেনি।'
'হয়তো এটা শিশু অপহরণের ঘটনা,বলল ব্রাইস।'পুলিশের হাতে ধরা পড়ার ভয়ে হয়তো ওর বাবা-মা শহর ছেড়ে পালিয়েছে।'
'টেডের বাবা-মা নিশ্চয় তাদের ছেলেকে কামড়ে দেননি,' ঘোঁতঘোঁত করে অসন্তোষ প্রকাশ করল ওয়াচ।
তরুনী নার্স একজন ডাক্তার সহ ফিরে এল।তারা টেডকে তুলে নিল একটি ট্রলিতে।
'ওর কী হয়েছে জানো কেউ?'জিজ্ঞেস করলেন ডাক্তার।ডাক্তারের বয়স ষাটের কোঠায়,ঝোপের মত ভুরু,কঠোর একটা ভাব ফুটে আছে চেহারায়।
ডাক্তারের প্রশ্নে সবাই শুধু কাঁধ ঝাঁকাল। মুখে বলল না কিছু।
'ও আমাদের টেনিস কোর্টে এসে অজ্ঞান হয়ে পড়ে,বলল অ্যাডাম।'
ভুরু কোঁচকালেন ডাক্তার।বুকের ব্যাজে তাঁর নাম লেখা-ড. পেইন।
নার্সের ব্যাজে লেখা শ্যারন আর এন।সে টেডের ব্লাডপ্রেশার চেক করছে।
তার দিক থেকে চোখ সরাতে পারছে না অ্যাডাম।ভারী সুন্দর লাগছে শ্যারনকে।ওর বারবার মনে হচ্ছে মেয়েটিকে আগেও কোথায় যেম দেখেছে।কিন্তু মনে করতে পারছে না কোথায়।
'গত দু'দিনে এ ধরনের কেস এ নিয়ে তিনটে এল।'
বিড়বিড় করছে ড. পেইন।
লাফিয়ে উঠল ওয়াচ।'মানে?'
ডাক্তার ওর প্রশ্নের জবাব দিলেন না।তিনি ইতিমধ্যে টেডের ট্রলি ঠেলতে শুরু করেছেন,পাশে তরুনী নার্স।
'পরে কথা বলব,'ঘাড় ঘুরিয়ে বললেন ডাক্তার।'এ ছেলেটির আগে জীবন বাঁচাই।নার্স,জরুরী রক্ত দেয়ার ব্যবস্থা করো।'
'জ্বী,ডাক্তার,'বলল নার্স।
একটি বাঁকে অদৃশ্য হয়ে গেল ওরা।অ্যাডামরা বসল ওয়েটিং রুমে।ওয়াচ গভীর চিন্তায় ডুবে গেছে।
'কী হয়েছে তোমার?'জিজ্ঞেস করল স্যালি।
'কাঁধ ঝাঁকাল ওয়াচ',কিছু হয়নি।
কিন্তু কিছু যে একটা হয়েছে তা বোঝা যাচ্ছিল পরিষ্কার।
অপারেশন থিয়েটারে টেডকে নিয়ে যাওয়ার ঘন্টা তিনেক পরে নার্স এসে জানাল টেডের অবস্থা এখন আগের চেয়ে ভালো।তবে সে খুব দুর্বল।কথা বলতে পারবে না।শ্যারন টেডের বাড়ির নাম্বার চাইল।স্যালি নাম্বারটা দিল।ওরা তারপর রওনা হলো বাড়িতে।
তবে ফেরার পথে টেডের বাড়ির সামনে যাত্রা বিরতি দিল।বেশ কয়েকবার বাজাল ডোরবেল।
কিন্তু সাড়া দিল না কেউ।
পরদিন শনিবার।সবাই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ছুটল হাসপাতালে।
তবে টেডের সঙ্গে তখুনি দেখা করার অনুমতি মিলল না।অপেক্ষা করতে হলো।আগের রাতের নার্সটি নেই তবে ড. পেইন আছেন ডিউটিতে।তাঁকে ক্লান্ত এবং বিধ্বস্ত লাগছে।
'আপনি বলেছিলেন গত দু'দিনে এরকম কেস এ নিয়ে তিনটে এসেছে আপনার কাছে,'বলল ওয়াচ।'কথাটার মানে ঠিক বুঝতে পারলাম না।'
'গত আটচল্লিশ ঘন্টায় আমার কাছে একজন পুরুষ এবং একজন তরুনী আসে,'বললেন ডাক্তার।'এবং তাদের অবস্থা ছিল তোমাদের বন্ধুর মতই।
'অবিকল টেডের মত অবস্থা?' জিজ্ঞেস করল ওয়াচ।
'তোমাদের বন্ধুর প্রচুর রক্ত ক্ষরন হয়েছে,'বললেন তিনি।
'এর চেয়ে বেশি কিছু আমি জানি না।'
'তার ঘাড়ের ক্ষতটা সৃষ্টি হলো কিভাবে?'জিজ্ঞেস করল ওয়াচ।
ভুরু কোঁচকালেন ড. পেইন।'কিসের ক্ষত?'
'ওর ঘাড়ে কামড়ের দাগ দেখেছি আমরা,'জানাল স্যালি।
(চলবে)
@নেকরে মানব
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now