বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
পরিবর্তন
লিখাঃEvan Adnan Arif(স্বপ্নচোরা)
.
--এই,ছেলে তুমি সময় আমার পিছনে পিছনে আসো কেন।
--কোথায় তুমিই তো আমার সামনে সামনে যাও,কি করব।
--ফালতু কথা বলবা না।আমি কিন্তু দেখি তুমি ক্লাসেও
আমার দিকে বার বার তাকাও, কিন্তু কেন।
--আসলে ইয়ে মানে।
--ইয়ে মানে না করে কি বলার সোজাসুজি বল।
--আমি তোমাকে ভালবাসি।
--কি তোমার এত্ত বড় সাহস আমাকে ভালবাসার কথা
বলো,কি আছে তোমার,আর তোমার বাবা কি করে।
--রিক্সা চালায়।
.
এই কথাটা শুনেই তার অন্য বান্ধবীরা হাসতে লাগল আর
বলতে লাগল ছেলের সাহস কত দেখছ রিক্সাওয়ালার
ছেলেও আজ প্রেম করতে আসে।কিছুদিন পরে তো
ফকিন্নির ছেলেরাও আসবে প্রেম করতে।
.
মিমি--বাবা রিক্সা চালায় আবার প্রেম করতে আসছ,
জানো
আমার বিএফ আছে সে অনেক বড় লোকের ছেলে।খরবদার
আর কখনো যেন তোমাকে আমার আশে পাশে না দেখি।।
--আমি তো তোমাকে অনেক ভালবাসি।
--আমি আবারো বলছি প্লিজ আমাকে ভুলে যাও।
--পারবো না ভুলতে।
--তুমি কি করে ভাবলে তুমার মত একটা ফকিন্নির ও সরি
রিক্সাওয়ালার ছেলের সাথে আমি প্রেম করব।প্লাস
আমার বিএফ আছে তোমাকে আগেই বলছি।সে জানতে
পারলে তোমার প্রব্লেম হবে।সো আমাকে ভুলে যাও।
--আচ্ছা চেষ্টা করব।(এই বলে রাফি চলে গেল)
.
কথা হচ্ছিল মিমি আর রাফির মধ্যে,, ওরা দুজনেই ইন্টার
সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে।রাফি মিমিকে অনেক ভালবাসে
তাই সবসময় মিমির আশে পাশে থাকতেই ভালবাসে।।
মিমির এই অপমান মেনে নিয়েও রাফি ভাবে তার আশে
পাশেই থাকবে।।
.
--এই রাফি,কালকে তোমাকে কি বলেছিলাম।
--কি।
--আমার আশে পাশে আসবা না।।
--আমি ইচ্ছা করে আসিনি তো।আমি এদিক দিয়েই
যাচ্ছিলাম।
--এই চুপ কর তুই আমার আশে পাশেও আসবিনা ফকিন্নির
বাচ্চা।
--তুমি বুঝতে পারছনা কেন।
--আমি সব বুঝছি আজ তুইও বুঝবি মিমিকে ডিস্টার্ব
করলে কি হয়।
--আচ্ছা দেখব।।
.
বিকালে রাফি একটি পার্কে বসে ছিল হঠাৎ মিমির বয়
ফ্রেন্ড সাথে কিছু ছেলে নিয়ে এসে তার পাশে এলো।
আর নেমেই ৫জন ছেলে মিলে তাকে মারতে শুরু করল। কখন
যে রাফি জ্ঞান হারাল সে বুঝতেই পারে নি, জ্ঞান
ফেরার পর সে দেখতে পেল একটা সরকারী হাসপাতারে
বেডে শুয়ে আছে।আর তার বাবা মা অনেক কান্না কাটি
করছে।।
.
--বাপজান ও বাপজান,তোকে কারা এমন নিষ্ঠুর ভাবে
মেরেছে,ওদের কি মায়া দয়া নেই।
--মা আমার কিছুই হয়নি,একটা ছোট ভুল হয়েগিয়েছিল।আর
তার ফসল এটা।আর জীবনেও এই ভুলটা হবে না মা কথা
দিলাম।
--বাপজান তোর আব্বা সারাদিন রিক্সা চালায় আর
আমি মানুষের বাসায় কাজ করি শুধু তোর আর তোর ছোট
বোনটাকে লেখাপড়া করিয়ে যেন বড় করতে পারি।তকে
নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন। তর যদি কিছু হয়ে যায়
আমাদের কি হবে।
--মা তুমি চিন্তা করো না আমার কিছুই হবে না।এখন
থেকে আরো ভাল ভাবে লেখা পড়া করব।তোমাদের
স্বপ্ন পুরন করব ইনশাল্লাহ।
.
সেই দিন পর থেকে মিমি আর রাফিকে তার আশে
পাশেও দেখেনি।কারন সেইদিনের পর থেকে রাফি
বুঝতে পারে গরিবদের ভালবাসতে নেই।গরিবরা এই
সমাজে অবহেলিত।সে ভাল ভাবে মনোযোগ দিয়ে
পড়ালেখা করতে থাকে।ইন্টারে এ প্লাস পায়।তারপর
থেকে সব পরিক্ষায় ভাল ফলাফল করে একসময় বিসিএস
পরিক্ষাতেও পাশ করে পুলিশ সুপার হয়।আজ
রিক্সাওয়ালার ছেলে নয়
লোকেরা স্যার বলে ডাকে।কলেজের ছেলে মেয়েরা
তাকে নিয়ে মজা করত এখন তাকে নিয়ে গরব করে।তার
বাবার কাছে রাফির জন্য প্রতিদিন শত শত বিয়ের
প্রস্তাব আসে কারন সে এখন রিক্সাওয়ালা নয় এসপির
বাবা।ফকিন্নি নয় এসপির বাবা।
.
--স্যার স্যার।
--হ্যা হামিদ সাহেব কি হইছে বলেন।
--স্যার একটা মেয়ে আসছে আপনার কাছে।
--কেন।
--নারীনির্যাতন মামলা মনে হয়।।তাকে নাকি রোজ রোজ
তার স্বামি মদ্যপ অবস্থায় মারধর করে।দেখলাম
মেয়েটার শরীলের অনেক জায়গায় দাগ পড়ে আছে।
তারপর আরো অনেক অভিযোগ।
--ঠিক আছে, মেয়েটা যেহেতু সরাসরি আমার কাছেই
আসছে পাঠিয়ে দিন আমার চেম্বারে।
--ওকে স্যার আমি এক্ষুনি পাঠিয়ে দিচ্ছি।
.
--স্যার আসতে পারি।
--হ্যা আসুন।(একি এটা তো মিমি,সে কি আমাকে চিনতে
পেরেছে না কিভাবে চিনবে সেদিনের রাফি আর
আজকের রাফির মধ্যে যে বিরাট পার্থক্য)
--স্যার কেমন আছেন।
--ভাল।আপনার কি সম্যসা সব বিস্তারিত ভাবে বলুন।
--আমার নাম মিমি।
--আমি জানি।
--কিভাবে।
--আমি রাফি।
--কোন রাফি।
--যে কলেজ লাইফে তোমার পিছনে ঘুরত সেই রাফি।
--কি কিভাবে।
--সে অনেক কথা এখন আপনার প্রবলেম বলুন।
--আসলে তুমি তো জানো আমি প্রেম করতাম।
--ভদ্রভাবে কথা বলুন এটা কলেজের ক্যাম্পাস বা কলেজ
না।সাধারণত এখানে যারা আসে তারা সবাই আমাকে
স্যার বা আপনি বলে থাকে।আপনার ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম
নয়।
--আমি ও আমার স্বামির বিয়ে হয় প্রেম করে কলেজ
লাইফের প্রেম।বিয়ে হয়েছে দুইবছর হয়েছে কিন্তু
প্রতিদিন আমার সাথে তার ঝগড়া হয়।কারন সে
প্রতিরাতে মদ খেয়ে মাতাল হয়ে বাসায় ফিরে।
আর আমাকে মারধর করে।আমি অনেক থানায় অভিযোগ
করেছি কিন্তু তার কিছুই করতে পারে না।টাকা দিয়ে
সবার মুখ বন্ধ করে দেয়।তাই সরাসরি আপনার কাছে
আসা।
--আচ্ছা আমি দেখছি মেডাম।এর যথাযথ ব্যাবস্থা নিব।
এখন আসতে পারেন।
--ধন্যবাদ স্যার।
.
এই বলে মিমি চলে গেল।রাফি তাকিয়ে দেখল মিমির
গালবেয়ে
দুফোটা অশ্রুকনা পড়ছে।যা দেখে রাফির বিকট শব্দে
হাসতে ইচ্ছা করল।আর একটা গানের কথা মনে হল,
নদীর একুল ভাংগে ওকুল গড়ে এই তো বিধির খেলা,
সকাল বেলার বাদশাহরে তুই ফকির সন্ধাবেলা।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
মাহমুদ হাসান মুন্না
Guest ৬ বছর পুর্বেRT Kabir
Guest ৬ বছর পুর্বে