বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
লেডি হিটলার
.
লিখাঃEvan Adnan Arif(স্বপ্নচোরা)
.
প্রতিদিন বিকেলে ছাদে যাওয়া আমার নিত্যদিনের অভ্যাসে
পরিণত হয়েছে।
দুইকানে ইয়ারফোন দিয়ে গান শুনতে শুনতে ব্যস্ততম শহরটা না
দেখলে কেন যেন মনে হয় কোন বড় কিছু মিস করে
ফেলেছি।তাই প্রতিদিনের মত আজও ছাদে গিয়ে দুইকানে
ইয়ারফোন দিয়ে গান শুনতে শুনতে ব্যস্ত শহরটা উপভোগ
করছি।গানটা ছিল আমার প্রিয় চিরকুট ব্যান্ডের,,যাদুর শহর
ঢাকারে,,গানটাও আমার প্রিয় ছিল।কারন গানের প্রতিটির কথার সাথে
এই ব্যস্ত শহরের মিল রয়েছে।গানটা বার বার রিপেড করে
শুনছিলাম।আর এই ব্যস্ত শহরের ব্যস্ততা উপভোগ করছিলাম।হঠাৎ
কেউ একটা ইটের ভাংগা টুকরো
দিয়ে আমার পিঠে ঢিল মারল।আমি জোরে,, ও মা গো,,
বলে জোরে চিৎকার দিয়ে উঠলাম।পিছন ফিরে যা দেখলাম,
দেখেই আমি তো আরো ভয় পেলাম।এ যে আমাদের
বাড়িওয়ালার মেয়ে সাদিয়া।
.
--কি হল,আপনি আমাকে ঢিল মারলেন কেন।
--ইচ্ছা হইছে তাই দিছি।
--এটা আবার কেমন ইচ্ছা।
--আপনাকে কত বার ডেকেছি উত্তর দেন নি তাই ঢিল মেরেছি।
--আমি তো কানে ইয়ারফোন ছিল গান শুনতেছিলাম।তাই
শুনিনি।
--না, আপনি ইচ্ছা করেই এমন করেন।
--সত্যি বলছি।
.
আর কথা না বাড়িয়ে আমি ছাদ থেকে চলে আসলাম। কারন
মেয়েরাও যে গুন্ডামি করতে পারে এই মেয়েটাই তার জলন্ত
প্রমান।সবচেয়ে বড় কথা হল সে বাড়িওয়ালার একমাত্র মেয়ে তার
বাবা আবার পুলিশ তাই আমাকে যতই জ্বালাতন করে ভয়ে কিছুই
বলতে পারিনা।কিছুই বললেই হয়ত বাসা থেকে বের করে
দেবে আবার জেলে দেয়ার ভয় তো আছেই।
তাই শত জ্বালা সহ্য করে এই বাসায় থাকতে হচ্ছে।
.
কলিংবেলের শব্দ পেলাম।বুঝতে বাকি রইলনা কে
আসছে লেডি হিটলার সাদিয়াটা।আম্মু দরজা খুলে কথা বলতে লাগল।
আমার আম্মু ওকে অনেক আদর করে।কিভাবে যেন আমার
কঠিন মা টা কে হাত
করে ফেলছে।
.
.
সকালে আজ এক বন্ধুর সাথে যাওয়ার কথা।তাই রেডি হয়ে
বাসা থেকে বাহির হতেই গেটের সামনে হিটলার হাজির।
.
--কোথায় যান।(সাদিয়া)
--আপনাকে বলব কেন।
--তাই আমাকে বলবে না।আব্বুকে বলে দিব কিন্তু।(সাদিয়া)
--কি বলবেন।
--আপনি আমাকে ডিস্টার্ব করেন।
--ও মা কখন করলাম।
--আমার প্রশ্নের উত্তর দেন নি এটাই ডিস্টার্ব।সরি বলে মাফ না
চাইলে আব্বু কে বলে দিব।
--আচ্ছা সরি মাফ করে দেন।এক বন্ধুর সাথে দেখা করার কথা
সেখানেই যাচ্ছি।
--মাফ করব এক শর্তে।
--কি শর্ত।
--আমাকে আজ আপনি কলেজে দিয়ে আসবেন।
--পারবোনা।
--কি আব্বুকে বলে দিব কিন্তু।
--আচ্ছা ঠিক আছে আসেন।
.
রাস্তায় গিয়ে একটা রিক্সা নিয়ে।সাদিয়ার কলেজের দিকে যাচ্ছি।
আমি চুপ করে ভয়ার্ত হয়ে কাচুমাচু হয়ে বসে আছি।
.
--এই ভাবে কেউ বসে নাকি সোজা হয়ে বসেন।
--না ঠিক আছে এইভাবেই।
--কি ঠিক আছে।এ ভাবে ভয়ে কাচুমাচু হয়ে বসে আছেন
কেন।আমাকে ভয় পান বুঝি।
--হ্যা অনেক।
--কেন আমি কি বাঘ নাকি ভাল্লুক।
--বাঘ ও না ভাল্লুক ও না কিন্তু বাড়িওয়ালার মেয়ে।
--তো কি হইছে।
--কিছুনা।
.
দেখতে দেখতে কলেজ চলে আসল।রিক্সা থেকে
নেমেই আমি দাঁড়িয়ে আছি।সাদিয়া ভাড়া দিয়ে দিতে বলল আমি
বললাম
আমি দিব কেন।সে আর কথা না বলে আমার কাছ থেকে
মানিব্যাগ টা ছিনিয়ে নিয়ে ভাড়া দিয়ে দিল।তারপর মানিব্যাগটাও নিয়ে
গেল।যেতে যেতে বলে গেল হেটে হেটে
বাসায় যেতে।
.
হেটে হেটে বাসায় আসছি আর ভাবছি কি ডেঞ্জারাস মেয়ে
রে বাবা।এই মেয়ে তো আমাকে জ্বালিয়ে মারবে।এমন গুন্ডা
টাইপের মেয়ে মনে হয় বাংলার মাটিতে একটাই আছে।।
.
বিকালে প্রতিদিনের মত ছাদে দাঁড়িয়ে আছি।হঠাৎ এলোপাথাড়ি কিল
ঘুসি পিঠে পড়তে লাগল।।
.
--কি হল আপনি এমন করছে কেন।(আমি)
--শয়তান বিলাই কুত্তা কিছু বুঝেনা।
--ও মা আমি কি বুঝব।
--এটাই যে আমি আপনাকে ভালবাসি।কিন্তু আমি জানি
আপনি আমাকে ভালবাসেন না।আমাকে লাইক করেন না।
আমি ভাবছি আর আপনাকে বিরক্ত করব না।পারলে
মাফ করে দিয়েন।
.
এই কথা গুলো বলে সাদিয়া কেঁদে দিল।কেঁদে দেয়ার মুহূর্তে
সাদিয়াকে এত্ত সুন্দর লাগেছিল।আমার পক্ষে এটা বর্ণনা করা
সম্ভব না।আসলে এই লেডি হিটলার কে আমিও ভালবাসি
কিন্তু অর আগ্রাসী মনোভাবের কারনে বলি নি।আবার ওকে
প্রচুর ভয় পেতাম।সে যে আমাকে ভালবাসত বুঝতেই পারতাম না।
আজ বুঝলাম যে লেডি হিটলারের একটা সুন্দর
মন আছে।এখন কাঁদছে কত যে মায়াবি লাগছে।একি সাদিয়া কাঁদতে
কাঁদতে চলে যাচ্ছে।এক দৌড়ে গিয়ে ওর হাতটা
ধরে ফেললাম।সাদিয়া অবাক হয়ে গেল।তারপর হেচকা টানে
বুকে নিয়ে নিলাম আর বললাম ভালবাসি ভালবাসি ভালবাসি
সাদিয়া শুনে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল আমাকে।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now