বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

বিশ্বাসঘাতকতা

"ভৌতিক গল্প " বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান সাইমন জাফরি (০ পয়েন্ট)

X বিশ্বাসঘাতকতা _________________________ "কয় টুকরা করমু?" - এগুলা তুমি কি কও? মানুষটা আমার সোয়ামি আছিলো। . "আরে ব্যাক্কল ছেমড়ি, সোয়ামি মইরা গেলে বেগানা পুরুষ হইয়া যায়। বিশ বাইশ টুকরা কইরা ফালাই, কি কস?" - তুমি যা ভালো বুঝো, করো। আমি ভিত্রে গেলাম। . "হারামজাদী, ভিত্রে গেলে কেমনে হইবো? সব কাম আমি একলা করুম নাকি?" - আমার এমনেই ডর করতাছে। কাডাকুডি দেখতে পারুম না, পেট মোচরায়া বমি আইবো। যা করনের তুমি একলাই করো। . মেজাজটা খিঁচড়ে গেলো খলিলের। সদ্য ধরানো ফিল্টার টিপ সিগারেটটা ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বিজলীর চল্লিশোর্ধ স্বামীর মৃতদেহটা কাটার জন্য মাটিতে বসে পড়লো। . "এর লাইগাই মাইয়া মানুষ দিয়া কোন কাম হয় না। পত্থমে প্যাঁচ লাগাইবো, পরে প্যাঁচ ছুডানোর লাইগা পুরুষ মাইনষেরে আইতে হইবো।" রাগে গজ গজ করতে করতে বারেক মিয়ার হাতের ডানা বরাবর একটা কোপ দেয় খলিল। . "কেডায় কইছিলো এই বুইড়া ব্যাডার লগে বিয়া বইতে? হুদাই হালারে খুনডা করতে হইলো। আগেই কইছিলাম চল পলায় যাই। না, হে পলাইবো না। বুইড়ার লগে বিয়া বইয়া রসের কতা কওনের শখ জাগছিলো। ক' এহন রসের কতা।" . খলিল মেজাজ খারাপ নিয়ে এবারের কোপটা দেয় ঠিক কন্ঠনালী বরাবর। . . ঘরে বসে থর থর করে কাঁপছে বিজলী। ওর এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না, একটু আগেও যে মানুষটা তার কাছে পানি খেতে চেয়েছিলো, তার খন্ড বিখন্ড শরীরটা বাইরে বিছানো তেরপলটার উপর পড়ে আছে। মানুষটার শেষ কথাটা এখনও তার কানে বাজছে, "বউ, বড় তিয়াস লাগছেরে। এক গেলাশ পানি খাওয়া।" . প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেবার অজুহাতে ঘরের দরজাটা আগে থেকেই খুলে রেখেছিলো বিজলী। খলিল পা টিপে টিপে ঘরে এসে হাতের শাবলটা দিয়ে জোরে একটা বাড়ি দিয়েছিলো বারেক মিয়ার মাথায়। এক বাড়িতেই কাজ হয়ে গেছে, গল গল করে তাজা রক্তের স্রোত ভিজিয়ে দিয়েছে পুরো বিছানা। আহারে, মরার আগে মানুষটা পানিটুকুও খেয়ে যেতে পারলো না। . সকাল হবার আগেই সব পরিষ্কার করে ফেলতে হবে বিজলিকে। আচ্ছা, যদি ধরা পড়ে যায়? বারেক মিয়ার আত্মীয় বলতে তেমন কেউ নেই। যারা আছে, তারা সবাই অনেক দূরে থাকে। আপাতত তেমন কেউ খোঁজ করবে না বলেই মনে হয়। আর যতদিনে খোঁজ পড়বে, ততদিনে খলিলের হাত ধরে বিজলী বর্ডার পার করে ভারতে চলে যাবে। . খলিল ছিল বিজলীদের এলাকার চিহ্নিত একজন বখাটে। এলাকার কেউ পছন্দ করতো না ওকে। প্রথম দিকে বিজলীও করতো না। তারপর কিভাবে কিভাবে একটা সময় মনটা দিয়ে বসে, তা নিজেও জানে না। তারপর একটা সময় শরীরটাও দিয়ে বসে। দিন দিন খলিল ওর শরীরের নেশায় উন্মাদ হয়ে ওঠে। প্রায় প্রতিদিনই তার বিজলিকে প্রয়োজন হতো। . ঘটনা জানাজানি হতে বেশী সময় লাগেনি। পুলিশি একটা ঝামেলায় জড়িয়ে গিয়ে খলিল কয়েকটা দিনের জন্য গা ঢাকা দিয়েছিলো। সেই সময়টাতেই বিজলীর বাবা মা একরকম জোর করেই বিজলীকে চল্লিশোর্ধ এক পাত্রের হাতে তুলে দেয়। বিজলী তখন সবে মাত্র সতেরো পেরিয়ে আঠারোতে পা রেখেছে। . খলিল ফিরে এসে সব ঘটনা জানার পর বিজলীকে খুঁজে বের করে। এরপর আবার শুরু হয় দু'জনার সেই আদিম উদ্দমতা। কিন্তু এভাবে চুরি করে মিলনে খলিলের মন ভরছিলো না। বারেক মিয়াকে শেষ করে দেবার বুদ্ধিটা বিজলীই প্রথম খলিলের মাথায় ঢুকিয়ে দেয়। . . টেকনাফের নির্জন এলাকায় ছাপড়া ধরণের একটা ঘর। ভেতরে আদি রসাত্মক খেলায় মগ্ন দু'জন তরুণ তরুণী। খলিল আর বিজলীর ভারতে যাওয়াটা আর হয়ে ওঠেনি। ওদের পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। ভারতে নয়, ওরা পালিয়ে মিয়ানমারে চলে যাবে। চট্টগ্রাম থেকে পালিয়ে এসে আপাতত ওরা এখানে কিছুদিনের জন্য গা ঢাকা দিয়েছে। . ঠক! ঠক!! ঠক!!! . বাইরে থেকে কে যেন দরজায় বাড়ি দিচ্ছে। খলিল আর বিজলীর শরীরের চালনা থেমে গেলো। আবারও... . ঠক! ঠক!! ঠক!!! . এবার আগের চাইতে আরও জোরে। খলিল উঠে লুঙ্গি ঠিকঠাক করে গায়ে স্যান্ডো গেঞ্জিটা চাপিয়ে নেয়। . "কি হইলো, কই যাও?" - আরে দেখতে হইবো না, কে দরজা নাড়ে? . "দেখো, এই বিদেশী জাগায় আমরা কাউরে চিনি না। সাবধানে..." - ধুরও পাগলী, ভয় পাইস না। . খলিল দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে যায়। বিজলী উঠে বসে শাড়িটা ঠিকঠাক করে পরে নেয়। হঠাৎ বাইরে থেকে একটা তীব্র চিৎকার ভেসে আসে। খলিলের গলা না ওটা? . প্রচন্ড ভয়ে বিজলীর শরীরটা কাঁটা দিয়ে ওঠে। খলিলের কি হলো? ও কি বাইরে গিয়ে দেখবে? যেতে মন চাইছে, কিন্তু সাহসে কুলাচ্ছে না। বিজলী দৌড়ে গিয়ে দরজার খিলটা লাগিয়ে দিয়ে বিছানায় এসে বসে ভয়ে কাঁপতে থাকে। . . খলিলের সেই চিৎকার দেয়ার পর বেশ কিছুক্ষণ কেটে গেছে। এখন বাইরে থেকে থপ! থপ!! করে এক ধরণের শব্দ ভেসে আসছে। বিজলীর কাছে শব্দটা অনেক পরিচিত। খলিল যেদিন বারেক মিয়ার শরীরটা টুকরো টুকরো করে কেটেছিলো, ঘরের বাইরে থেকে তখন ঠিক এরকম শব্দই ভেসে এসেছিলো। ঠিক কসাইরা মাংস কাটলে যেভাবে শব্দ হয়! . এক সময় শব্দটা থেমে যায়। রাতের নীরবতাটা যেন হৃৎপিণ্ডে আরও বেশী করে আঘাত হানে। . দরজাটা খুলে যাচ্ছে... . বিজলী বিস্ফোরিত নেত্রে চেয়ে দেখে, ওর নিজ হাতে লাগানো দরজাটা আপনা আপনি খুলে যাচ্ছে। খোলা দরজাটা দিয়ে রক্তমাখা, কনুই পর্যন্ত কাটা একটা হাত হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে ওর দিকে এগিয়ে আসছে। . আচমকা ঘরের মধ্যে কে যেন বলে উঠলো, "বউ, বড় তিয়াস লাগছেরে। এক গেলাশ পানি দিবি? হেইদিন কইলাম চাওনের পরেও পানি দেস নাই!" . . ##আহসানুল হক শোভন


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৯৪৪ জন


এ জাতীয় গল্প

→ বিশ্বাসঘাতকতা (সমাপ্তি পর্ব)
→ বিশ্বাসঘাতকতা (পর্ব ২)
→ বিশ্বাসঘাতকতা (পর্ব ১)
→ বিশ্বাসঘাতকতা
→ জুযারের ভাইদের বিশ্বাসঘাতকতার গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • Nusrat Faria
    Guest ৭ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    good story

  • ফাহমিদ সারফারাজ
    User ৭ বছর, ৮ মাস পুর্বে
    Like this story . Too GOOD man